পরাঞ্জয়ী...
আজ বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম। তোমার কসম ঈশ্বর, আমি আজ তোমাকেও ছাড়বনা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে লন্ড-ভন্ড করে দেব তোমার সমস্ত খেলনা। তোমার একটাই অপরাধ, তুমি "মানুষ সৃষ্টি করেছ"। তুমি কি দেখতে পাচ্ছ ঈশ্বর, রাগে আমার শরীর কাঁপছে! আমি উন্মাদ হয়ে গেছি ক্ষোভে,যন্ত্রনায়, কষ্টে? আমার পাপের হিসেব লিখবে তুমি? লেখ, আমিও দেখতে চাই কত খাতার বাজেট রেখেছ আমার জন্য! তোমার একটাই অপরাধ তুমি মানুষ সৃষ্টি করেছ।
ঐ যে ছেলেটিকে রোজ দেখ চারুকলায় বসে চা খায়, ও কে আমি ভালবাসি। সংসার করার স্বপ্ন দেখি। দুই চারটা গেদা পুঁটি নিয়ে টানাটানির একটা সংসার করার বড্ড লোভ আমার। কিন্তু সাধ্য নেই ওর। অনাটনে পড়ে সে খালি পেটে চা খায়, যদি ক্ষুধার রাক্ষসটা এ বেলা ওকে দিয়ে ক্ষুধা না মেটায় এই ভেবে!
ওর কাঁধে লক্ষ টাকার ঋণ! কেন জান? ওহ, তুমি তো আবার সবজান্তা, সব কিছুরই খবর রাখ।
খালি বেখবর করে দাও আমাদের স্বপ্ন গুলো! একটা মেয়েকে অর্ধ যুগ ধরে ভালবেসেছিল সে। মেয়েটি লক্ষ টাকার ভাউচার ধরিয়ে দিয়ে, মানিব্যাগটা তে মানির বদলে স্রেফ কয়েকটা ভিজিটিং কার্ড অবশিষ্ট রেখে একদিন ঠিক ঠিক আরেকজনের ঘরে চলে গেল। ওকে পথে নামিয়ে দিয়ে গেল। সেই পথেই হাঁটতে গিয়ে খুঁজে পেলাম ওকে। তুমি কি জানো তা? আমার নিত্য নতুন পোশাকের বিলাসীতা ছুটে গেল।
নিজের বিলাসীতার সমস্ত পুঁজি আমি প্রয়োজনের খাতে অবলীলায় বিনিয়োগ করে দেই। তবুও শেষ নামেনা। পকেট খালি হয়ে যায়। "হাঁটতে ভীষণ ভাল লাগছে" বলে আমি তার হাত ধরে হাঁটতে থাকি। কারন আমরা জানি সেই কথা টা যা তুমিও জানোনা ঈশ্বর-- "আমাদের কারও কাছে রিকশা ভাড়া নেই"! "যারা মেলায় যায় তারা পঁচা, যারা ঘুরতে যায় তারা পঁচা" এসব বলে বলে আমরা নিজেদের সখ গুলোকে কবর দেই।
আসলে যে এর অর্থ স্রেফ " আঙ্গুর ফল টক" তা আমরাই জানি। তুমিও জানো না ঈশ্বর! দেখলে তুমি কত কিছু জানোনা? তাহলে তুমি কেন দাবী কর যে তুমি আমাদের ভাগ্য নিয়ন্তা? জবাব দাও!!
তবুও ভাল থাকতে চায় ছেলেটা। তুমি কি জানো ঈশ্বর আজ বিকেলেও সে "শিখা চিরন্তণে"র আগুনের দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমি করে বলেছিল " চলনা আগুন পোহাই গিয়ে!" দশ দশটি টাকা খরচ করে একটা আস্ত হাওয়া মিঠাই কিনলাম। ওর ভারী সখ হল হাওয়া মিঠাই চা তে ডুবিয়ে খাবে। ও কে কত করে বোঝালাম " গরম তপ্ত চায়ে হাওয়া মিঠাইয়ের অস্তিত্বই থাকবেনা" কে শোনে কার কথা।
চায়ে ডোবানোর সাথে সাথে শেষ সব। সবাই সে কি হাসি! ঈশ্বর, বলতে পার এই পাগল ছেলেটা কবে নাগাদ সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবে?! "আমার অনেক কাজ" বলে মুখ ঘুরিয়ে থেকনা। জবাব দাও ঈশ্বর!
শান্ত হব? না হবনা। বিশ্বাস কর ঈশ্বর, আজ আমি পণ করেছি, তোমার থেকে জবাব নিয়ে তবেই শান্ত হব! আমার আজ ক্লান্তি নেই, এ যুদ্ধে আমিই জিতবোই। জবাব না দিয়েও তোমার উপায় নেই।
তোমার সব থেকে বড় অপরাধ তুমি মানুষ সৃষ্টি করেছ!
-------------মনটা খারাপ, সাথে মেজাজটাও। কি যে লিখলাম! হাতের কাছে যুদ্ধ করবার কিছু পেলাম না তাই কী-বোর্ড নিয়ে করলাম। ঈশ্বরের বিরুদ্ধে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিঘাত করবেনা জেনেই আঘাত করলাম। কারন তিনি ঈশ্বর, আর কিছু না দিতে পারেন ক্ষমা করতে পারেন অনায়াসে!------------------
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।