আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেরেবাংলা নগর রাজধানীর হাসপাতাল পাড়াঃ

সব কিছুর মধ্যেই সুন্দর খুঁজে পেতে চেষ্টা করি............

শেরেবাংলা নগর রাজধানীর হাসপাতাল পাড়াঃ চিকিৎসা সেবা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। জনগণের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গড়ে উঠেছে অনেক আধুনিক হাসপাতাল। এর মধ্যে সরকারীভাবে শেরেবাংলা নগরে গড়ে উঠেছে বেশ ক'টি হাসপাতাল। কোনোটি হাসপাতাল কাম ইনস্টিটিউট। আবার কোনোটি শুধুমাত্র হাসপাতাল।

যার কারণে আমরা শেরেবাংলা নগরকে বলতে পারি- "হাসপাতাল পাড়া"(যদিও ধানমন্ডি-কলাবাগান এলাকাও হাস্পাতাল পাড়া-তবে আজ শুধু শেরেবাংলা নগর নিয়েই লিখছি। )। পাঠক, চলুন জানা যাক এ হাসপাতালগুলো সম্পর্কে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালঃ স্থপতি লুই আই কানের নকশায় ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল। ।

প্রায় ২০ একর জমির উপর তিনতলা বর্গাকার ভবনে রোগীর জন্য রয়েছে ৩৭৫ টি শয্যা। সেই সময়ের অর্গানোগ্রাম অনুসারে এই সংখ্যা আরও বাডার কথা-কিন্তু আজ অবধি বাড়ছেনা! এখান থেকে গাইনি,সার্জারী,নাক-কান-গলা,অর্থোপেডিক, ম্যাক্সিলোফেশিয়াল, ডেন্টাল, চর্ম, যৌন, শিশু,চক্ষুপ্রভৃতি সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। ৯৭ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ওয়ার্ড ও বহির্বিভাগে কাজ করেন। রয়েছে সাতটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অপারেশন থিয়েটার। জরুরী বিভাগ ও দুটি অ্যাম্বুলেন্স ২৪ ঘন্টা সেবা দেয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম থাকলেও ২০০৬ সাল থেকে এমবিবিএস কোর্সে দুই ব্যাচে ২০০ ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে। জরুরী বিভাগের সামনে ছাত্রদের জন্য হোস্টেল নির্মিত হচ্ছে। হাসপাতালের পরিচালক বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত উন্নতি করছে এবং ভবিষ্যতে এর সেবার মান আরও বাড়বে। এছাড়াও শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল কমপ্লেক্সে আরও তিনটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান আছে।

সেগুলো হলোঃ- জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউট, বেগম খালেদা জিয়া মেডিকেল কলেজ, বাতজ্বর ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র কার্যক্রম চালাচ্ছে। চক্ষু ইনষ্টিটিউটের ১০০ টি শয্যা থাকলেও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে শুধু বহির্বিভাগে কার্যক্রম চলে। চক্ষু ইনস্টিটিউটে জেনারেল ও নিউরো অপথালমোলজি, কর্নিয়া, রেটিনা, গ্লুকোমাসহ চোখের যাবতীয় রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। শ্যামলীতে এর ২৫০ শয্যার নতুন ভবন নির্মানাধীন রয়েছে। নতুন ভবনে চক্ষু রোগের সর্বাধুনিক চিকিৎসা দেয়া হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটঃ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭৮ সালে প্রকল্প আকারে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের দক্ষিণ পার্শ্বে ৯ একর জমিতে ৪ তলা ভবনে কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে। স্বল্প খরচে ওপেন হার্ট সার্জারীসহ হৃদরোগের যাবতীয় চিকিৎসা প্রদান করে হাসপাতালটি স্বল্প সময়ের মধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। । চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য রয়েছে ২০১ জন চিকিৎসক।

পুরুষ ও মহিলা রোগীর জন্য যথাক্রমে ৫টি ও ২ টি ওয়ার্ডে বর্তমানে ২৫৩ টি আসন রয়েছে। প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুসারে এই সংখ্যা ৪১৪ টি। সাধারণ ওয়ার্ডের পাশাপাশি রয়েছে করোনারী কেয়ার ইউনিট, পোস্ট করোনারী কেয়ার ইউনিট, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট। পরিসংখ্যান অফিসার জানান, এখানে সর্বনিম্ন ষাট হাজার টাকা খরচেও একজন রোগী বাইপাস সার্জারী করাতে পারেন। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান থেকে কার্ডিওলজির সর্বোচ্চ ডিগ্রী এম ডি এম এস প্রদান করা হয়।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন সুত্র মতে শুধু বাংলাদেশই নয় পুরো দক্ষিন এশিয়ায় সর্বাধুনিক ও মানসম্মত এমডিএমএস ডিগ্রী প্রদানের সম্মান অর্জন করেছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনী ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজিঃ এটি জনসাধারণের মাঝে কিডনী হাসপাতাল নামে পরিচিত। হৃদরোগ হাসপাতালের দক্ষিণ দিকে ৪ তলা ভবনবিশিষ্ট হাসপাতাল। শেরে বাংল নগরে যে কয়টি হাসপাতাল রয়েছে তার মধ্যে এটির ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার মান সর্বাধুনিক। নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে এটি বেশ ভালো।

সরকারী হাসপাতালে এমন পরিচ্ছন্নতা সাধারণত দেখা যায় না। ১৯৯২ সালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রকল্প আকারে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০১ সালে বর্তমান ভবনে শুধুমাত্র বহির্বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়, পরে ২০০৩ সাল থেকে রোগী ভর্তি শুরু হয়। এটি এখনও প্রকল্প আকারে পরিচালিত হচ্ছে। তবে রাজস্ব খাতে রূপান্তর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

শুধুমাত্র চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন ৯৬ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা ১০৩ জন। এর মধ্যে কেউ কেউ চিকিৎসক হয়েও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। কর্মচারী ৪৬২ জন ও নার্স ৭৫ জন। প্রকল্প প্রস্তাবে রোগীদের জন্য ৪০০ আসন বরাদ্দ থাকলেও বর্তমানে ১১৬ টি আসন রয়েছে । এই হাসপাতালে শুধুমাত্র কিডনী ও মূত্র সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়।

বর্হির্বিভাগ থেকেই অধিকাংশ রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দেয়া সম্ভব হয়। প্রতিদিন আসা রোগীর মধ্যে ২০ ভাগ রোগী ভর্তির যোগ্য। নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান জানান- কিডনী চিকিৎসার সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক আবিস্কৃত প্রযুক্তি এই হাসপাতালে ব্যবহৃত হয়। সংখ্যায় কম হলেও এখানে কম খরচে উন্নত সেবা দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে । প্যাথলজী, সার্জারী ও মেডিসিন- এই তিন বিভাগেই এটি স্বয়ংসম্পূর্ণ।

সব ব্যবস্থা হাসপাতালের অভ্যন্তরেই রয়েছে। রোগীকে স্বল্প খরচে হেমোডায়ালাইসিস (রক্ত পরিশোধন) সেবা দেয়ার জন্য ১২ টি আধুনিক মেশিন আছে। কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের মত জটিল চিকিৎসা দেয়া হয় অতি অল্প খরচে। কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের সময় কিডনী দাতা ও গ্রহীতা এবং তাদের সাথে আসা পরিবারের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করে থাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নামমাত্র মূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা ও সাধারণ ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়।

কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে রোগীর হেমোডায়ালাইসিসও ফ্রি। বে কিছু কিছু ওষুধ রয়েছে, যা সরকারীভাবে দেয়া সম্ভব হয় না। এসব ওষুধ ও আনুষাঙ্গিক খরচ বাদে কিডনী ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে রোগীর সর্বসাকুল্যে পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ পড়ে। এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রমও চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ যাবত ইউরোলজি ও নেফ্রোলজী বিভাগে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে তিনটি শিক্ষাবর্ষে ৮০ জন ছাত্র ভর্তি করা হয়েছে ।

কিছু অভাব পূরণ হলে প্রতিষ্ঠানটি আরও বেশি রোগীকে চিকিৎসা দিতে পারবে। প্রকল্প প্রস্তাবে ৩২ টি হেমোডায়ালাইসিস মেশিন থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাতে পেয়েছে ১২ টি। জুলাই ২০০৯ পর্যন্ত হেমোডায়ালাইসিসের অপেক্ষমান তালিকায় ১৮৫০ জন রোগী রয়েছে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে। আরও কয়েকটি হেমোডায়ালাইসিস মেশিন যুক্ত না হলে এই সংখ্যা কমানো যাবে না।

যে কয়টি মেশিন রয়েছে তার পরিচালনার জন্য দক্ষ প্রকৌশলী নেই। জনবল সংকটও ব্যাপক। একজন ডাক্তারকে একই সাথে ওয়ার্ডের দায়িত্ব ও বহির্বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে হয় , কোন কোন ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। অধ্যাপকদের রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম দেখাশুনার অতিরিক্ত দায়িত্ব। প্রকল্পের চাকরী ছেড়ে দেয়ার প্রবণতার কারণেই এই জনবল সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

প্রকল্পটি রাজস্বে চলে গেলে এই সমস্যাগুলো দূর হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালঃ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বলতে অনেকে পাবনার হাসপাতালের চিকিৎসাকে বোঝেন। কিন্তু ঢাকার শেরেবাংলা নগরে রয়েছে মানসিক স্বাস্থ্যের আধুনিক ও মানসম্মত একটি হাসপাতল। কিডনী হাসপাতালের দক্ষিণ পার্শ্বে ১৫০ শয্যার ৫ তলা হাসপাতালটি ১.৭৯ একর জমির উপর অবস্থিত। ভবনের আয়তন ৮০৪৫ বর্গ মিটার।

১৯৮১ সালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে প্রকল্প আকারে কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর কয়েক বছর মিটফোর্ঢ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে কার্যক্রম চলে। ২০০০ সালে বর্তমান ভবনে কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৬ সালে প্রকল্পটি রাজস্বে চলে যায়। ১৫০ শয্যার মধ্যে ১০০ টি পুরুষ রোগীর ও ৫০ টি মহিলাদের জন্য।

মোট শয্যার ৪০ ভাগের জন্য কোন টাকা নেয়া হয় না। বাকি ৬০ ভাগের জন্য রোগীকে দৈনিক মাত্র ৮৩.৫০ টাকা পরিশোধ করতে হয়। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য রয়েছেন ৪৫ জন অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও ৭০ জন নার্স। ১৫০ শয্যার আন্ত বিভাগের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য রয়েছে জরুরী বিভাগ, বহির্বিভাগ, ইনডোর, এছাড়াও রয়েছে ইলেক্ট্রো কনভালসিভ থেরাপি কার্যক্রম। শুধু চিকিৎসা নয় বরং রোগীর পারিবারিক, মানসিক, পারিপার্শ্বিক সামাজিক কর্মদক্ষতার প্রেক্ষাপটে রোগীকে পুনর্বাসনে সহায়তা করে ।

পাশাপাশি এফসিপিএস, এমসিপিএস, এম ফিল স্নাতোকোত্তর শিক্ষা কার্যক্রম রয়েছে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে ডাক্তার, নার্স, সাইকোলজিস্ট, স্বাস্থ্য সহকারী ও ইমামদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। গবেষণা করে বাংলাদেশের উপযোগী বেশ কিছু প্রযুক্তি আবিষ্কার করার সাফল্যও রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের। কিছু সমস্যার সমাধান হলে এখানকার সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে। রোগীদের জন্য ব্যায়াম, চিত্তবিনোদন ও প্রশিক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি থাকা সত্ত্বেও স্থানের অভাবে এগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

চিত্তবিনোদনের জন্য রোগীদের বাইরের পার্কে নিয়ে যেতে হয়। ভবনটিকে উপরের দিকে আরও বৃদ্ধি করলে এই সমস্যা দূর হবে বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়। সিটিস্ক্যান মেশিন, এম্বুলেন্স ও উন্নত পিএবিএক্স ব্যবস্থার অভাবই প্রধান সমস্যা। মাদকাসক্তদের নিরাময়ের জন্য এখানে একটি ড্রাগ এডিকশন ইউনিট খোলার প্রয়োজন বলে জানান প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ এ এইচ মোহাম্মাদ ফিরোজ। তিনি বলেন, হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের চিকিৎসা, শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সম্প্রসারনের জন্য আমরা সচেষ্ট আছি।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুর্নবাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল)ঃ মুক্তিযুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৯৭৩ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করে। পুরুষ, মহিলা, ও শিশুদের জন্য যথাক্রমে ৯, ২ ও ২ টি ওয়ার্ডে ৫০০ শয্যা রয়েছে। চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছেন ৯০ জন চিকিৎসক ও ২৪০ জন নার্স। দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও ১০ টি স্বয়ংসম্পূর্ণ অপারেশন থিয়েটার। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি রোগীর খাদ্য, বস্ত্র, কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন, যাতায়াত, মৃতদেহ সৎকার, পুনর্বাসন, মানসিক সান্ত¡না, পরিবার পরিকল্পনা ইত্যাদি সেবা দেয়া হয়।

ঢাকা শিশু হাসপাতালঃ এটি মূলত আধা সরকারী হাসপাতাল। তবে খরচ অন্য বেসরকারী হাসপাতালের তুলনায় কম। পঙ্গু হাসপাতালের পশ্চিম পার্শ্বে ৪৭০টি শয্যায় শুধু শিশুদের সাধারণ রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। রয়েছে বহির্বিভাগ, জরুরি বিভাগ, ৩টি এ্যাম্বুলেন্স ও ৩টি অপারেশন থিয়েটার। শুক্রবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২.৩০টা পর্যন্ত প্রতিটি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৫.৫০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।

তবে জরুরি বিভাগ প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দূরে নয় হাসপাতালগুলোর সামনে সোহরাওয়ার্দী কলেজ গেট থেকে শ্যামলী পর্যন্ত শতাধিক ফার্মেসী ও ছোট বড় অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। ওষুধ, সার্জারীর সরঞ্জামাদী সহ কিছু ফার্মেসীতে প্যাকেটজাত খাবারও পাওয়া যায়। তবে হাসপাতালের ছাদের নীচের ফার্মেসীগুলোতে দাম বেশি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের নীচে অন্তরা ফার্মেসীতে স্টিপটাসি নামের একটি ইনজেকশনের দাম চাওয়া হয়েছে ৩১০০ টাকা অথচ রাস্তার ওপারের ফার্মেসীতে ২৯০০ টাকায় তা পাওয়া গেছে।

থাকা ও খাওয়াঃ দূরবর্তী রোগী ও তার স্বজনদের থাকার জন্য শ্যামলীতে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। দৈনিক ১২০-৫০০ টাকার বিনিময়ে এসব হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা যায়। খাওয়ার জন্যও রয়েছে হোটেল - রেস্টুরেন্ট। তবে হাসপতাল সীমানার মধ্যের হোটেলগুলোর বিরূদ্ধে নিম্নমানের খাবার দিয়ে বেশি দাম নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সঃ জরুরী প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতাল থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম (ফোন-৯৩৩৬৬১১), রেড ক্রিসেন্ট(ফোন-৯৩৩০১৮৮-৯), মেডিনোভা (ফোন-৯১১৬৮৫১) সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অ্যম্বুলেন্স সরবরাহ করে।

মিশন এভিয়ান ফেলোশীপ(ম্যাফ) নামের একটি প্রতিষ্ঠান আকাশপথে স্বল্পখরচে রোগী পরিবহনের জন্য পানিতে নামতে পারে এমন একটি বিমান দিয়ে সেবা দিয়ে থাকে (ফোন- ৮৮১০১৬৪)। লাশ পরিবহনের জন্য কফিন এবং গাড়ি পাওয়া যায় এই এলাকায়। সরকারী অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ১ম ১০ কিমি ৯০ টাকা এবং পরের প্রতি কিমি ৭.৫০ টাকা(শুধু মাত্র ঢাকা মেট্রোপলিটান এলাকার জন্য)। দালাল হতে সাবধানঃ হাসপাতালের সামনে বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রফেশনাল দালালদের রয়েছে অবাধ বিচরণ। জরুরি বিভাগের সামনে বিশেষ করে রাতে এরা রোগীদের সামনে হাসপাতালের বিভিন্ন অসুবিধার কথা তুলে ধরে এবং কিৗনিকে যাওয়ার উৎসাহ দেয়।

এদের দৌরাত্ম্য রোধ করা সম্ভব নয়। তাই বিভিন্ন হাসপাতালে "দালাল হতে সাবধান" শীর্ষক নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। শেষ কথাঃ স্বল্প খরচে সরকারী সেবা পেতে যারা সরকারী হাসপাতালে আসেন তাদের সেবা দান করেন নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ চিকিৎসকরা। তবে আইন কানুন মেনে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। এক্ষেত্রে রোগী ও তার পরিবারকে কিছুটা ধৈর্যশীল হয়ে সেবা নেয়ার আহবান জানান সব হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা।

অপরদিকে রোগীদের অনেকেই অভিযোগ করে থাকেন যে, সরকারী হাসপাতাল বলেই এ হাসপাতালগুলোতে দায়িত্বে অবহেলাকারীদের সংখ্যা বেশী। ভর্তি থেকে শুরু করে চিকিৎসা সেবাদানে নানা জটিলতা এবং হয়রানীও বেশী। এছাড়া ঘুষ, দালালদের দৌড়াত্ব তো রয়েছেই।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.