অজ্ঞতার দুভোগ বহু ধরনের হতে পারে। তবে, অশিক্ষিত মানে মূখ-এমনটি ঠিক নয়। একটি ব্যাপার গুরুত্বপূণ যে, সততা ও চরিত্র ছাড়া কোন যোগ্য ব্যক্তি বৃহত্তর কল্যাণে নিবেদিত হতে পারেনা। কারো গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অধিকাংশ জনমানসের সমথনের উপর ভিত্তি করে নিণয় করতে যাওয়াটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারণ অধিকাংশ যদি চরিত্রহীন,নীতিভ্রষ্ট হয় তবে সেখানে একজনের সততা কিংবা জ্ঞান অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে।
বোকা, মূখদের রাজ্যে জ্ঞানী, চিন্তাশীল ব্যক্তিও হাস্যরসের পাত্র. উপেক্ষা ও বঞ্চনার শিকার হতে পারেন। ফলে সস্তা জনপ্রিয়তা ও চমকপ্রদ কিছু করে তাক লাগিয়ে দিয়ে তড়িৎ ফলাফল প্রত্যাশীদের দ্বারা নলেজ মুভমেন্টকে এগিয়ে নেয়া অসম্ভব। স্বীকৃতি ও প্রাপ্তির লোভ বিসজন দিয়েই স্বপ্নের জগৎটাকে বাস্তব জগতে নিয়ে আসা সম্ভব।
বাইবেলে আছে, অন্ধ যদি পথ দেখায় অন্ধকে, দু’জনেই পড়ে গতে গিয়ে। ফলে যৌক্তিক, সময়োপযোগী ও গ্রহণযোগ্য কমকৌশল ঠিক করে সামনে এগুতে হবে।
অন্যদের কাজের পদ্ধতি জানাটাকেও জ্ঞানের একটি বিশেষ অংশ হিসাবে ধরে নিতে হবে। নিজেদের ধারণা পরিচ্ছন্ন হলেই কেবল অন্যকে সেব্যাপারে সচেতন করাটা সম্ভব হবে। যেহেতু বিলাসী জীবন ও আরামদায়ক সময় কাটানো নয় বরং আমরা কষ্টকর পথে হাটতে সংকল্পবদ্ধ সেহেতু পরিশ্রম,সাধনা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমেই আমরা আমাদের বহুবিধ প্রশ্নের উত্তর নিজেরাই খুজে বের করতে পারব এবং অনুসন্ধিৎসু মন সময়োপযোগী পথ ও পদ্ধতির সন্ধান পাবে।
চিন্তাশীল নয় এমন শিক্ষিত ব্যক্তি কিংবা অশিক্ষিত চিন্তাশীল ব্যক্তি-কেউই আসলে খুব সুবিধেজনক নয়। তাই লোক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে হঠাৎ দেখেশুনে নেয়াটাই যথেষ্ট হবেনা বহু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিতে হবে।
যে কোন ব্যাপারে মন্তব্য কিংবা উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তা বা স্বপ্নদ্রষ্টাদের খুব কৌশলী হওযাটা জরুরী। দীঘস্থায়ী সত্যিকার কল্যাণ লাভ কখনই বক্র ও আবেগনিভর পথে হতে পারেনা। বিদ্যমান সমস্যার সমাধানেই দৃষ্টিসীমার চূড়ান্ত আবদ্ধতা নয় বরং গবেষণার মাধ্যমে নব পথ-পদ্ধতি ও কৌশল বের করতে সক্ষম হতেই হবে। সদস্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কার অভিজ্ঞতা বেশি এই হিসাব না কষে অভিজ্ঞতাকে কিভাবে কাজে লাগাচ্ছে তা দেখাটাই বেশি জরুরি বোধহয়, উচ্চশিক্ষিত অথচ বুদ্ধি কম এমন মানুষকে এড়িয়ে যাওয়াতেই কল্যাণ।
স্বাপ্নিক চিন্তাশীলরাই সমাজের চোখকে বদলাতে পারে।
অনাগত ভবিষ্যতকেও দেখতে না পারলে স্বপ্নদ্রষ্টা হওয়া যায়না। নিজে স্বপ্ন দেখা আর সেই স্বপ্ন অন্যের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারাটা এককথা নয়। নিজের ধ্যান ধারণা ও পরিকল্পনার সাথে অন্যের সম্পৃক্ততার চেষ্টার আগে কিছুটা পরিপক্কতা অজন দরকার। পরিণত বুদ্ধিমানের পক্ষেই সম্ভব যাবতীয় দ্বিধা দ্বন্ধের অবসানে কঠিন সংগ্রামে অবতীণ হয়ে সরল পথেই সফলতার সন্ধান লাভ। প্রশিক্ষণ বা জ্ঞানবিতরণের পরিকল্পনার মানেই হচ্ছে,মানবাত্মা গঠনের মহৎ প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত; যেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া জ্ঞানের পূণতা লাভকে সহজসাধ্য করবে।
ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলেছিলেন, যদি সঠিক কমসূচী এবং গভীর বিশ্বাস থাকে তাহলে শত বাধা সত্ত্বেও জয় সুনিশ্চিত।
আমার বেচে থাকা যদি অন্যের বেচে থাকার শক্তি সঞ্চারে সহায়কই না হয় তবে এই জীবনের কোনই স্বাথকতা থাকে বলে মনে হয়না। মগজের ব্যবহারের সুযোগ না থাকলে তা ঘাড়ে বয়ে বেড়ানোটাই অথহীন হয়ে পড়ে। কিছু ব্যাপারে চরম বিশ্বাসী মানেই যে, সব ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণতার উধ্বে ওঠতে হবে-এমনটি মনে করিনা। জাঁ পল সাত্র বলেছেন, অণ্বেষণ করো, অনুসন্ধান করো, জানতে চাও, প্রশ্ন করো, প্রশ্নের উত্তর খোঁজো-সত্য বেড়িয়ে আসবেই।
আমিও মনে করি,অনুসন্ধান ও অনুসন্ধিৎসার চেতনাবোধ সম্পন্ন মানুষই অনেককে বিস্মিত করে অজানা কোন বিষয়কে একেবারে দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট করে তুলতে পারে।
চিন্তা, কল্পনা, বিশ্বাসেই ব্যক্তির অন্তরের মানবপ্রকৃতির প্রতিফলন ঘটে। একজন জ্ঞানী, বুদ্ধিমান, অন্তদশী ও গভীর নিয়মনিষ্ঠ মানুষই কোন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে পযাপ্ত সময় দিতে পারে। তাড়াহুড়া অনেক সহজ বুদ্ধিতে সম্পন্ন করার উপযোগী কাজকেও মারাত্মকভাবে জটিল করে ফেলে। বুদ্ধিমত্তা না থাকলে প্রয়োজনের সময় বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়া কখনই সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে পুথিঁগত বিদ্যার পাশাপাশি উপলব্ধির ক্ষমতা তীব্রতর হওয়ার প্রয়োজন আছে। একজন প্রকাশকের পক্ষে যেমন একজন লেখকের মতো স্বাদ নেয়া সম্ভব হয়না তেমনি লাইব্রেরীয়ান হলেই পাঠকের তৃপ্তি পাওয়া যায়না। এটা ঠিক যে, সবাই সব কাজের উপযুক্ত নয় আর সবারই একইরকম হওয়াটাও জরুরী নয়। পূজনীয় ও বরণীয় হবার আশা সবধরনের ক্ষেত্রে না থাকাটাই ভাল। কারণ হিসাবে বাট্রান্ড রাসেলের একটি উক্তি উল্রেখ করতে চাই; তিনি বলেছেন- প্রতিভাবান অন্যের অবজ্ঞাকে অবজ্ঞা করে সামনে এগোয়, প্রতিভাহীনের কাজ ছেড়ে দেয়াই ভালো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।