আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রিক্সা চালক আর নাগরিকের সম্পর্ক



সরাসরি প্রাণবান বাহন যেমন হাতি-ঘোড়া-উট ইত্যাদি নগরের বাহন না। অন্তত আধুনিক নগরের। চাই অন্যবাহন। অন্তত অ-সরাসরি প্রাণ টানা বাহন চাই। যেমন ঘোড়াটানা গাড়ি কিংবা মানুষটানা গাড়ি।

এখন যন্ত্রে টানা গাড়িই বেশি। নগরবাসীর সবার তো আর ব্যক্তিগত গাড়ি নাই। থাকে না। কিন্তু তাদেরও চাই সওয়ারি। চাই ট্যাক্সি।

যে যান ভাড়ায় খাটে। হাতির সওদায় ট্যাক্সি হয়, ঘোড়ার গাড়ি ট্যাক্সি। সেই হিসাবে রিক্সাও ট্যাক্সি বটে। ঢাকা'য় প্রধান ট্যাক্সি হচ্ছে রিক্সা। সেই রিক্সার যে চালক, রিক্সাচালক; ভাড়ায় যে ট্যাক্সি চালায় সেই রিক্সাচালক- এর সাথে আরোহির সম্পর্ক কেমন হবে? নিশ্চয় ট্যাক্সি চালক শ্রমিক আর ট্যাক্সি ভাড়ায় যাওয়া নাগরিকের সম্পর্ক।

রিক্সা চালক শ্রমিক নিশ্চয়, কিন্তু ভাড়ায় নেয়া নাগরিক নিশ্চয় সেই শ্রমিকের মালিক না। রিক্সা শ্রমিকের মালিক হলেন রিক্সার মালিক, চালক নিজেও মালিক হতে পারেন। তো ভাড়ার বিনিময়ে যাতায়াত সুবিধা যিনি নিচ্ছেন, সেই নাগরিক নিশ্চয় রিক্সাওয়ালার সাথে মালিকের মতো আচরন করতে পারেন না। এমনকি গ্রামসমাজের কামলার সাথে যে দরদ আর অধিকার আর ক্ষমতার আচরন করেন গ্রামবাসী, তেমন আচরনও করতে পারেন না একজন নাগরিক। কারন, গ্রামসমাজের কামলা'র জায়গা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিংবা উচ্ছেদ হয়ে নগরে এসেছেন রিক্সা চালক।

আধুনিক নাগরিক নগরে। এখানে তার কোনো মুরব্বি কিংবা মালিক নাই সাধারন নাগরিকদের মধ্যে। আছে শুধু সেবা গ্রহীতা নাগরিকরা। কাজেই কেউ যদি রিক্সা শ্রমিকের সাথে মালিক কিংবা মুরব্বির মতো আচরন করতে যান, এবং উল্টো থাপ্পর খাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, তবে হতবাক কিংবা অবাক হওয়ার কিছু আছে কি? নাই। রিক্সা চালক এখন একজন শ্রমিক।

সেবাদানকারী। * আলোকচিত্র কৃতজ্ঞতা : উইকি কমন্স

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।