আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পর্ব ০২`পরিচিত ভুল 'লেখক মাওলানা মুহাম্মদ মালেক (সংগৃহকৃত )



এটি হাদীস নয় কবরকে সম্বোধন ও কবরের উত্তর- ফাতিমা (রাঃ) কে দাফন করার সময় সাহাবায়ে কেরাম কবরকে সম্বোধন করে বলেছিলেন , হে কবর , সাবধান থেকো। তুমি কি জানো, তোমার উদরে কাকে রাখা হচ্ছে? ইনি হলেন সাইয়্যিদুল আলামীন রাসুলুল্লাহ(সাঃ) এর প্রিয়তম কন্যা। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে কবর থেকে আওয়াজ আসল, আমার কাছে বিচার নেই, এখানে প্রত্যেকের আমল অনুসারে বিচার করা হবে। - এটি একটি ভিত্তিহীন কেচ্ছা। বাস্তবতার সাথে এর কোন দূরবর্তী সম্পর্কও নেই।

কোন নির্ভরযোগ্য হাদীস বা ইতিহাসের কিতাবে এর কোন সনদ উল্লেখ নেই। আখিরাতে হিসাব কিতাবের বিষয়টি যে ঈমান ও আমালের ভিত্তিতেই হবে তা দ্বীনের একটি সর্বজনবিদিত শিক্ষা, যা মুসলমান মাত্রেরই জানা আছে। এজন্য সাহাবায়ে কেরাম কবরকে সম্বোধন করে উপরোক্ত কথা বলতে পারেন এই কল্পনাও জাহালত বা মূর্খতা। রাসুলে কারীম(সাঃ) তাঁর জীবদ্দশায়ই প্রিয়তম কন্যা ফাতিমা (রাঃ) কে বলে গেছেন- ‘হে ফাতিমা , জাহান্নামের আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা কর। কেননা আমি উপকার অপকারের মালিক নই।

’-সহীহ মুসলিম ২/১১৪;জামে তিরমিযী হাদীস৩১৮৫ এবং এ কথাও বলেছেন- ‘হে ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ, আমার সম্পদ থেকে তুমি যা ইচ্ছা চাইতে পার কিন্তু আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে আমি তোমার কোনই উপকারে আসব না। ’- সহীহ বুখারী হাদীস ৪৭৭১;সহীহ মুসলিম ২/১১৪ [মাসিক আল কাউসার,মার্চ-২০০৭,পৃষ্ঠা-৩৪-৩৫ এটি হাদীস নয়ঃ আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি আসমানসমূহ (কোন কিছুই ) সৃষ্টি করতাম না। - এটি লোকমুখে হাদীসে কুদসী হিসেবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। অথচ হাদীস বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে একমত যে, এটি একটি ভিত্তিহীন রেওয়ায়েত , মিথ্যুকদের বানানো কথা। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীসের সাথে এর সামান্যতম সম্পর্কও নেই।

২/১৬৪; আল লুউলুযল মারসূঃ ৬৬; আল ফাওয়াইদুল মাজমূআঃ২/৪১০; আল বুসীরী মাদে ইমাম সাগানী , আল্লাম পাটনী, মোল্লা আলী কারী , শাইখ আজলুনী , আল্লামা কাউকজী , ইমাম শাওকানী , মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ ইবনে সিদ্দীক আল-গুমারী, এবং শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলবী (রহঃ) প্রমুখ মুহাদ্দিসীনে কেরাম এটিকে জাল বলেছেন। -রিসালাতুল মাওযুয়াতঃ ৯; তাযকিরাতুল মাওযূয়াতঃ৮৬; আল মাসনূঃ ১৫০; কাশফুল খাফাঃ হুর রাসূলিল আযামঃ৭৫; ফাতাওয়া আযীযিয়াঃ ২/১২৯; ফাতওয়া মাহমূদিয়াঃ ১/৭৭। কেউ কেউ বলেন যে, এই রেওয়ায়েত যদিও জাল; কিন্তু এর মূল বিষয়বস্তু সঠিক । [ অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) – এর খাতিরেই এই দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন। তাকে পয়দা করার ইচ্ছা না করলে তিনি কোন কিছুই পয়দা করতেন না।

] অথচ আল্লাহ তায়ালার এই দুনিয়া ও সমগ্র জগতকে কেন সৃষ্টি করলেন, তা ওহী ছাড়া জানার উপায় নেই। ওহী শুধু কুরআন ও হাদীসেই সীমাবদ্ধ । কাজেই যতণ পর্যন্ত কুরআনের আয়াত কিংবা সহীহ হাদীসের মাধ্যমে কথা প্রমাণিত না হবে যে , একমাত্র তাঁর খাতিরেই সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, ততণ পর্যন্ত এই আকীদা রাখার কোন সুযোগ নেই। অথচ জানা কথা যে, এটি কুরআন মাজীদের কোন আয়াত ; কিংবা কোন সহীহ হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত নয়। এটিও উপরে বর্ণিত জাল রেওয়াত অথবা এ ধরণের বাতিল রেওয়ায়েতের ভিত্তিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রসিদ্ধ লাভ করেছে ; যাকে তারা আকীদা তথা মৌলিক বিশ্বাস্য বিষয় বানিয়ে রেখেচে।

- যাইলুল মাকাসিদিল হাসানা, যাইল তানযীহিশ শারীয়াতিল মারফূয়া চলবে ইনশাল্লাহ......................

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.