আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জলবায়ু পরবির্তন : কোন পথে বাংলাদেশ

আমি ঢাকায় থাকি

বিশ্বের গড় তাপমাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে জলবায়ু বিপর্যয়। এর ফলে আমাদের এই পৃথিবী স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী বপির্যয়ের মুখোমুখী । উষ্নতা বৃদ্ধির ফলে গহমালয়ের চূড়ার হিমবাহ এবং মেরু অঞ্চলের হিমশৈলী গলতে শুরু করেছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ সহ বিশ্বের অনেক দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিনামে উপদ্রুত অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিনত হবে।

দেখা দেবে জলবায়ু নিরাপত্তা সমস্যা। বাস্তুচ্যুত মানুষ কোথায় পাবে মাথা গোজার ঠাঁই ? কিভাবে বাঁচবে ? তাই আসন্ন ঘোর দূর্দিনের কথা চিন্তা করে বিশ্ববাসিকে এখনই সক্রিয় হতে হবে। বৈশ্বিক উষ্ণান ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে আমাদের লোকজনের অবস্থা করুণ। বাংলাদেশ থেকে গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গমনের মাত্রা খুবই কম। অথচ এই গ্যাসের প্রভাবে আমাদের দেশই সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

এর কারণ হল, অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশ। নিচু ও হিমালয়ের পাশ্ববর্তী ব-দ্বীপ আকৃতির একটি দেশ। এই দেশের মধ্য ও পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ৩১০ টি নদী এবং এখানে প্রচুর বৃষ্টি হয় ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের (IPCC) ৪র্থ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন থেকে সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাথমিক ভাবে মানুষের কর্মকান্ডকেই দায়ী করা হয়েছে। বিশ্ব এখন নজিরবিহীন ও চরম প্রাকৃতিক দূর্যোগের শিকার । আর এই দূর্যোগে উন্নত, উন্নয়ণশীল ও স্বল্প উন্নয়নশীল দেশগুলো সমান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

দক্ষিন এশিয়া বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিন উপকূলে ব্যাপক জলোচ্ছাস হয়। সাম্প্রতিক সময়ে বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে অতিবৃষ্টিও হয়েছে। এই বর্ষার কারনে ভূমিধ্বস ও ভয়াবহ নদীভাঙন হয়। শুকনো মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে দেশের উত্তর অঞ্চলে মরুকরনের সৃষ্টি হয়। এবং নদীতে পানির প্রবাহ কমে গিয়ে দক্ষিনাঞ্চলে দেখা দেয় লবণাক্ততা।

তাই দূর্যোগ হ্রাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কৌসলে বাংলাদেশকে বন্যার জন্য সবচেয়ে বিপন্ন, সুনামির ক্ষেত্রে ৩য় সর্বোচ্চ বিপন্ন এবং ঘূণিঝড়ের ক্ষেত্রে ৬ষ্ঠ সর্বোচ্চ দেশ। আর এর জন্য দায়ী মূলত উন্নত দেশসমূহ। উন্নত দেশসমূহ ও জলবায়ু পরিবর্তন : জলবায়ু বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে এপর্যন্ত যেসব চিন্তাভাবনা ও প্রযুক্তির প্রবর্তন করা হয়েছে তা সবই একমূখী। অর্থাত কার্বণ নি:সরন কমাও, তাহলে উষ্ণায়ণ সীমিত রাখা যাবে। এজন্য বনায়ন বৃদ্ধি ও কয়লা, গ্যাস পোড়ানো হ্রাস বা দক্ষতার সাথে ব্যবহার করা।

এটা ঠিকই আছে, কিন্তু এসব প্রচেষ্টা একমাত্রিক না হয়ে বহুমাত্রিক হওয়া উচিত। যেমন, কার্বণ নি:সরন কমালেও বায়ুমণ্ডলে ইতিমধ্যে বেড়ে ওঠা কার্বণ গ্যাস কমানো যায় কিনা। যদি এমন কোন প্রযুক্তি বের করা যায় যা বায়ুমণ্ডরের কার্বণ শুষে নিয়ে অক্সিজেন বাতাসে ফিরিয়ে দেবে। তাহলে তো চিন্তাই থাকে না। সবুজ গাছ আসলে এই কাজটিই করছে।

কিন্তু জনসংখ্যা যত বাড়ছে বনায়ণ ততই কমছে এবং এটা কমতেই থাকবে। উন্নত দেশগুলিই প্রকৃতিতে এই মহা বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের শিল্পন্নোত দেশগুলি এই সম্ভাব্য বিপর্যয় রোধে গ্রীনহাউজ গ্যাস তথা কার্বণ নি:সরন নিয়ন্ত্রণে রাজি হবে কিনা, সবাই মিলে একটা চুক্তিতে আসবে কিনা এটা অনেকটাই অনিশ্চিত রয়ে গেছে। সবাই মনে করছে আমেরিকা হয়তো কার্বন নি:সরন প্রয়োজনীয় মাত্রায় কমাতে রাজি হবে না। চীন ভারতও ইতস্তত করছে।

কারণ হলো, কার্বন কমানো মানে তেল, গ্যাস, কয়লা ( জীবাষ্ম জ্বালানি ) ও বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো। আর সেটা যদি কমাতে হয় , তাহলে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কমে যাবে। সোজা কথায় ধনী দেশগুলোর উৎপাদন বাড়িয়ে আরও ধনী হওয়ার গতিতে লাগাম টেনে ধরতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।