অফিসের গাড়ীতে করে তিনজনে যাচ্ছিলাম। এক জায়গায় এসে হঠাৎ গাড়ীটা নষ্ট হয়ে গেল। যেখানে গাড়িটা নষ্ট হলো, পাশেই অনেক ঘন গাছপালা। অনেকটা আফ্রিকার গভীর বনের মত। ভাবলাম গাড়ী ঠিক হতে হতে একটু ঢু মেরে আসি।
তিনজনে মিলে রওয়ানা হলাম। ঘন গাছপালার মাঝে এতই সরু একটা পথ যে, দুহাত দিয়ে ডালপালা সরিয়ে এগোতে লাগলাম। অবশেষে মোটামুটি একটা প্রশস্ত রাস্তায় গিয়ে উঠলাম। কিন্তু এখনও দুইপাশে গাঢ় বন। আরও কিছুদূর যাওয়ার পরে একপাশে গাছপালা কিছুটা হালকা হলো।
গাছের ফাক দিয়ে অনেক পুরাতন ধাচের একটা বাড়ী দেখতে পেলাম। কিন্তু কোন মানুষজন নেই। কোত্থেকে একটা কুকুর দ্রুত রাস্তা পার হয়ে গেল । মনে হলো প্রাচীনকালের কোন গ্রামে এসে উপস্থিত হয়েছি।
সামনে গিয়ে দেখলাম দুইপাশে আর কোন বন নেই।
একপাশে মাঠে কি যেন চাষ করা হয়েছে। মাঠের শেষ মাথায় এই প্রথম একজন মানুষ দেখা গেল। ভদ্রলোক নেংটি পড়া, কুড়াল দিয়ে গাছের গুড়ি টুকরা করছে। আমরা তার পাশ অতিক্রম করতেই আমাদেরকে একটা অমায়িক হাসি উপহার দিল। হাসি দেখেই আমার গায়ে কাটা দিয়ে উঠল।
মনের অজান্তেই পায়ের গতি বাড়িয়ে দিলাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম, এই বুঝি একপাল মানুষখেকো গাছের আড়াল থেকে হঠাৎ উদয় হয়ে আমাদের ঘেরাও করে খেমটা নাচ শুরু করবে। মনের কথা মনেই চেপে রেখে সামনে এগোতে লাগলাম।
সামনে খুব সুন্দর একটা মাঠ। সবুজ কার্পেটের মত ঘাষ বিছানো মাঠটাতে মনে হল ফুটবলের মতই কিন্তু খুব প্রাচীন কোন খেলা হয়।
একপাশে খানিকটা উচু করে দর্শকদের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। দূরে সবুজ পাহাড় । পাহাড়টা আস্তে আস্তে বাক নিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে চলে গেছে। পাহাড়ের গা বেয়ে একজন লোক উপরে উঠছে। ভালো করে তাকিয়ে দেখি আসলে ঐটা কালো রঙের একটা গরু।
গরুটাকে উঠতে দেখে আমদেরও পাহাড়ে উঠার শখ হল। আমার এক কলিগ এক দৌড়ে পাহাড়ের উপর উঠে গেল। উপরে উঠে সে অবাক চোখে চারপাশটা দেখতে লাগলো। আমি উপরে উঠে চারপাশটা দেখার শখ খানিকটা বিলম্বিত করে, ভাবলাম নীচ থেকে আগে ওদের কয়েকটা ছবি তুলি। ছবি তোলার জন্য মোবাইল বের করতে পকেটে হাত ঢোকালাম।
হঠাৎ ঘুম ভেংগে গেল। বালিশের পাশে রাখা মোবাইলে টাইম দেখে বুকে ধক করে উঠল। ভালোমত তাকিয়ে দেখি, নাহ! ঠিকই আছে ৭.৫০ই বাজে। ৭টার সময় উঠে বাকী দুজনের ঘুম ভাংগানোর কথা ছিল। ১০ মিনিটে গোসল সেরে রেডী হয়ে দেখি ওরাও রেডী হয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
গাড়ীতে বসে বসে ভাবতে লাগলাম, আফসুস! পাহাড়ে উঠে উপর থেকে চারপাশটা আর দেখা হলোনা
বি দ্র: ছবিটা অফিসের কমন ফোল্ডারে শেয়ার দেয়া ছিল আর ঘটনা গতকালের
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।