‘নৈতিক, আইনগত এবং বাস্তবতার প্রেক্ষিতে পুলিশ রিমান্ড’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, পুলিশ রিমান্ড ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতনের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। রিমান্ডের নামে নির্যাতন মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। অবিলম্বে এটি বন্ধ হওয়া উচিত। রিমান্ডের ব্যাপারে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা জরুরি।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড পিস স্টাডিজ এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক সচিব ব্যারিস্টার হায়দার আলী, সাবেক সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শওকত মাহমুদ, ড. একেএম বজলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মুহম্মদ শাহজাহান, শওকত হোসেন নিলু, সফিউল আলম প্রধান প্রমুখ।
গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মোঃ তাজুল ইসলাম এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব এসএম জহুরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, জরুরি সরকারের আমলে রিমান্ডের নামে যে ধরনের নির্যাতন চলেছিল, তা এখনও অব্যাহত রয়েছে। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের দাবি, জেনারেল মইনসহ ১/১১-এর হোতাদের বিচার করতে হবে। তাদের গ্রেফতার করে জেলে রাখা উচিত।
সরকার যদি তাদের বিচার না করে তাহলে বুঝতে হবে, মইন গংদের মদতে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তবে আজ হোক কাল হোক জনগণ তাদের বিচার করবেই। তিনি বলেন, জয়েন্ট ইন্টারগেশন সম্পূর্ণ বেআইনি। রাজনৈতিক এবং বেসামরিক বিষয় থেকে ডিজিএফআইকে সম্পূর্ণ দূরে রাখতে হবে।
সরকারের সমালোচনা করে মওদুদ আহমদ বলেন, বর্তমান সরকার ’৭২-এর সংবিধানে ফেরার কথা বলছে।
এটা করতে হলে বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করতে হবে। জরুরি অবস্থা জারির বিধানও রাখা যাবে না। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ ৪০ হাজার রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে জেলে পুরে রেখেছিল।
রিমান্ডের ব্যাপারে তিনি বলেন, রিমান্ড একেবারে তুলে দেয়া সম্ভব নয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে নিতে পারে।
তবে রিমান্ডের নামে নির্যাতন যাতে না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। ব্যারিস্টার হায়দার আলী বলেন, মেহনাজকে তার ৪ মাসের শিশুসহ রিমান্ডে নিয়েছে সরকার। মানবাধিকার সংগঠনগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে এখানে। সংবিধান লঙ্ঘন করে দিনের পর দিন পুলিশ রিমান্ডে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পুলিশ রিমান্ড সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী।
রিমান্ডের ব্যাপারে সর্বোচ্চ আদালতের কোনো নির্দেশনাই মানা হচ্ছে না।
রিমান্ডের ব্যাপারে বর্তমান সরকারের ভূমিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শওকত মাহমুদ বলেন, রিমান্ডের জন্য সরকারি আইনজীবীরা এখন বিচারপতিদের হুমকি দেন। এই ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। এটা উদ্বেগের বিষয়। রিমান্ডের পক্ষে মিডিয়াকেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি ১/১১-এর পরবর্তী ঘটনাগুলোর কথা আবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশ রিমান্ড ক্ষমতাসীন দলের নির্যাতনের বড় হাতিয়ার। আওয়ামী লীগ এই রিমান্ড প্রথা চালু করে। সিরাজ শিকদার এর প্রথম শিকার। সিরাজ শিকদারকে হত্যার মাধ্যমে এদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।