আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাষ্ট্র বনাম একা

পতাকায় ফালগুন মানচিত্রে বসন্ত

বাহান্নের পলাশ ফুটছে আজও অবিরাম- তেমনই রক্তলাল আরও গাঢ় আমাদের হৃদপিণ্ড আজও স্বরবর্ণ-ব্যঞ্জনবর্ণময় পুষ্ট এক সফেন সমুদ্র এমন কবিতার ঘরে কে দিত ছাউনি বলুন ফাল্গুনরাঙা বাহান্নবিহনে জননীর কণ্ঠে বাজতো কতটুকু- ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’ পাই বা না পাই দুধ-ভাত, দুধেল গাভী থাক দূর পরবাসে, তবু আমরাই লক্ষ সালাম, বরকত, জব্বার, সফিক হয়ে জেগে আছি সোনালী শীষে দোয়েলের গানে গোলাপের ভাঁজভাঙা অধরে শাপলার নির্ভিক সন্তরণে। চূয়ান্নে চুয়ে চুয়ে শেষ ফোটার স্থির বলয় থেকে আবার ছুটেছিল জীবন তখন গলাগলি হাতে হাত রাখার বিশ্বাসে একফোটা জলে মেতেছিল দিঘি আবার স্লোগান রাজপথে জনতার কণ্ঠে মুখর হয়েছিল বাংলার মাঠঘাট। ঊনসত্তর কী এক দামাল আগুন ছড়িয়েছিল বাঙালির বুকে, নিবীড় সংগ্রামে তাজা রক্তের একান্ত গাঢ়-গুঢ় আয়োজন নিঃসঙ্গ স্থিরস্রোতে হয়েছিল লীন আবার জেগেছিল বীর বাঙালীরা, বারবার ভেঙেছিল অধিনতার বেড়িবাধ গণ জোয়ারের বাধভাঙা স্রোতে অবিরত কেঁপেছিল প্রেতাত্মার ভীরু আহাদ, মহাসিন্দুর মাদল সংগীত তাতে কি স্তব্ধ হয়েছিল বেনিয়বিদ্রুপ কর্কশ চিক্কুরে। পাতানো পরাজয় সাজোয়া বাহনে ঘুরেছিল পাড়াময়, শহর-নগর, হৃদবন্দরে তাতে কি স্তব্ধ হয়েছিল দোয়েলের সুর, দিগদিগন্ত শাপলার ফুটন্ত অলিগলি! তারপর একাত্তর- সাতই মার্চ- যেন একাকী চেতনা জেগেছিল কোটি কণ্ঠে সেই কথা- বারবার ফিরে যাওয়া নয়, একবার ফিরেআসা নিজস্ব আয়তনে যার বুকজুড়ে আঁকা লক্ষ মৃত্যু, ধর্ষণ আর ক্ষুধার্ত রাতের প্রাপ্তি- একটি বিজয় একাকী নিভৃত আত্মায় উচ্চারিত চিরকালীন বাঙালীদীর্ঘ উচ্চারণ- জয়বাংলা। তিনি এসেছিলেন বাউল দুপুরে, এসেছিলেন মাঘের শেষে, পৌষ পেরিয়ে তিনি এসেছিলেন ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে, এসেছিলেন আষাঢ়ের প্রথম কদমে তিনি এসেছিলেন কার্তিকের ভোরে কৃষকের হাসিতে, অগ্রহায়ণের পান্তা-লঙ্কায় তিনি এসেছিলেন দারুণ বৈশাখে চৈত্র দুপুরে, দাঁড়িয়েছিলেন চেতনায় একাকী তিনি গেয়েছিলেন চিরকালীন উচ্চারণ আর আশ্চর্য মোহন সুরে জয়বাংলার গান। তারপর পুরস্কার- একাকী নিঃস্তব্ধ রক্তাক্ত নিঃসঙ্গ বাংলাদেশ একটি সিড়িতে স্থির বত্রিশের সেই সিঁড়ি আজ অমর ইতিহাস, কোটি বাঙালির হৃদপিণ্ডের রক্তরণ। তুমিও কিন্তু একা- ভেবে দেখো জননী তুমিও ভীষণ একা, বিষণ্ন একাকিত্বে ভেবে দেখো জননী প্রয়োজনে পার হোক হাজার রাত অনেক আষাঢ় শ্রাবণ নিরংকুশ সমর্থন তোমার, তুমি ছেদন করো তোশামদি মস্তক, অনুর্বর গর্দান এখানে খড়গও হতে পারে গণতন্ত্র আমাদের- বিশ্বাসের অমন পরিপূর্ণ অবয়ব তোমার পক্ষে গোলাপ, দোয়েল, শাপলা কিংবা সোনালী শীষের নিরংকুশ সমর্থন। গণতন্ত্র বনাম তুমি; সত্যিই একা; বত্রিশের দেয়ালে যেমন একাকী পিতার মুখ তবু ছেদন করো তোশামদি মস্তক, জনতা জেগে আছে প্রান্তিক স্বপ্নের প্রান্তে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.