রঙ্গিলা বন্ধুরে....... i_mahmud2008@yahoo.com
শ্রীমঙ্গলে জমে উঠেছে মাস ব্যাপী স্মৃতিময় মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি ঘর প্রর্দশনী
ইসমাইল মাহমুদ
শ্রীমঙ্গলে জমে উঠেছে মাস ব্যাপী স্মৃতিময় মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি ঘর প্রর্দশর্নী। প্রতিদিন এ মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি সম্বলীত স্মৃতি ঘরে শত শত মানুষ ভীর করছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় কৃষি মেলা, বৃক্ষ মেলা, বস্ত্রমেলা সহ বিভিন মেলা ও প্রদর্শন প্রায়ই হলেও মুক্তি যুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ও আলোকচিত্র ও সামগ্রী নিয়ে মৌলভীবাজারে এটি প্রথম হয়েছে। আর বাঙ্গালীর সর্ব্বোচ্চ সংগ্রাম বিজয়ের দ্বার মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক হওয়ায় এবং প্রদর্শনীতে কোন ফি না থাকায় প্রতিদিন মানুষ হুমরী খেয়ে পড়ছেন এ প্রদর্শনীতে। শ্রীমঙ্গল শহরতলীর মৌলভীবাজার সড়কে চন্দ্রনাথ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নীচ তলার তিনটি গ্যালারীতে চলছে মুক্তিযুদ্ধের এ স্মৃতি প্রর্দশনী।
প্রর্দশনীতে একাত্তরের পরিচয় বহন করে এরকম বিভিন্ন স্মৃতিময় স্থান এর পরিচয়, বধ্য ভুমির মাটি শহীদদের ব্যাবহিত সামগ্রী, শহীদের কঙ্কাল, শহীদ পরিবারের পরিচিতি মূলক আলোক চিত্র সহ বাঙ্গালীর স্বাধীকার আন্দোলন থেকে একাত্তর পর্যন্ত বিভিন্ন পেক্কাপটের প্রায় ২০০ আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়ে চলছে। গত পহেলা ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে প্রদশর্নী পরিদর্শনে এসেছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ এম এ শহীদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মো: মফিজুল ইসলাম, ভারতের কলকাতা থেকে আগত নিত্যনন্দ মহা প্রভূর ত্রয়োদশ বংশধর শ্রীমৎ গুও“রাজ কিশোর গোস্বামী, উপজেলা চেয়ারম্যান রনধীর কুমার দেব, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ফয়েজ আহম্মদ , পরিবেশবিদ সিতেশ রঞ্জন দেব , চা বোর্ডে প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক হারুন –অর রশিদ, বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র ছাত্রী সহ কয়েক হাজার দর্শনার্থী।
এব্যাপারে প্রর্দশনীর আয়োজক সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্ত্তী জানান, গত নভেম্বরে মুক্তি যুদ্ধ যাদু ঘরের উদ্যোগে মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক রির্পোটিং এ অংশগ্রহন করে সেখান থেকে তিনি মুল অনুপেরনা পান।
নিজ এলাকার মুক্তি যুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষনে ও মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস আগামী প্রজন্মের কাছে পৌছে দিতে তিনি এ আয়োজন করেন। আর তার সাংবাদিকতা পেশায় বিভিন্ন সময়ে সংগৃহিত নিজ এলাকার বিভিন্ন আলোক চিত্র, মুক্তি যুদ্ধ যাদুঘর থেকে উপহার দেয়া কিছু ছবি এবং এলাকার প্রত্যেক শহীদ পরিবার ঘোরে শহীদের ছবি ও তাদের ব্যাবহিত জিনিশ পত্র, শহীদ যুদ্ধার সংগ্রামী কাহিনী সহ নানা বিষয় তিনি প্রর্দশনীতে তুরে ধরেছেন। যা এ প্রজন্মের সাথে একাত্তরের সেতু বন্ধন তৈরী করেছে।
চিফ হুইপকে এই বধ্য ভূমি গুলো সংরক্ষনের জন্য দাবী জানানো হয় প্রতি উত্তররে চিফ হুইপ তিন চার মাসের মধ্যে এটি সংরক্ষনের প্রতিশ্র“তি দেন। গতকাল সরজমিনে মেলা পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী নারী পুরুষ সহ প্রায় ৫শ দর্শনার্থী এটি পরিদর্শন করছেন।
বিশেষ করে মেলায় শহীদ মুক্তি যোদ্ধা মুকিত লস্করের পাঞ্জাবী, প্রবন তাঁতীর দাঁতের মারি ও হাড্ডি এবং শহীদ সমীর সোমের প্রতিকৃতিতে বেশ ভীর করে রেখেছেন দর্শনার্থীরা। এসময় কলকাতা থেকে আগতো নিত্যনন্দ মহা প্রভূর ত্রয়োদশ বংশধর শ্রীমৎ গুও“রাজ কিশোর গোস্বামী প্রদর্শনী সম্পর্কে তার মন্তব্যে বলেন, এটি বহুকালের সত্য ঘঁনার এক অপূর্ব সংগ্রহ । সে সময় ছিল আমার ছাত্র কাল । আজ সে কাল অতিথ হলেও চিরন্তন এ সত্য দর্শনে আভিভূত হয়েছি। সার্থক এই প্রর্দশনীর।
এসময় আরো দুজন দর্শনার্থী কে দেখা যায় শহীদ সমীর সোমের প্রতিকৃতির পাশে দাড়িয়ে চোখের জল ফেলতে । তাদের একজনের নাম বিরাজ সেন তরুন ও অপর জনের নাম মোহন সোম। তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায় শহীদ সমীর সোমের সাথে তারা এক সাথে যুদ্ধ করেছেন এবং ভারতের উত্তর প্রদেশে দেরাদোন ম্যালেটারী একাডেমিতে তারা সে সময় এক সাথে স্পেশাল ট্রেনিং নিয়েছিলেন । প্রদর্শনী পরিদর্শন শেষে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম বলেন, আমি এ “স্মৃতিময় মুক্তি যুদ্ধ” দেখে সত্যি মুগ্ধ হয়েছি। নতুন প্রজন্ম এ থেকে অনেক ইতিহাস জানতে পারবে।
তারা এ খান থেকে জাতীয়তা বোধে উদ্ভোদ্ধ হবে। তাই নিঃসন্দেহে এ আয়োজনের মেধা, অভিজ্ঞতা, শ্রম সর্বোপরি দেশ প্রেম কাজ করেছে। স্থানীয় এক সমাজ সেবক ও জন প্রতিনিধি ভানু লাল রায় বলেন, অসাধারন এ প্রদর্শনী । আমি একদিনে দেখে শেষ করতে পারিনি দু দিন এসেছি । আগামী কাল আবার আমার ছেলে মেয়ে ও পরিবারকে নিয়ে আসবো।
একই কথা বললেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হরিপদ রায়। সাংবাদিক বিকুল চক্রবর্ত্তী আরো জানান, এরকম একটি প্রদর্শনী করতে পেরে তিনি নিজেকে গৌরব বোধ মনে করছেন। কারন এ প্রদর্শনী দেখে দেশ বিদেশের অসংখ্য মানুষ তাকে ধন্য বাদ জানাচ্ছেন। চ্যানেল এস এর খবর দেখে লন্ডন থেকে জাতীয় যুব সংহতির মোলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি মুহিবুল কাদের চৌধুরী পিন্টু সহ অনেকেই তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।