আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাল্যবিবাহ

যতোই সময় যাচ্ছে, বাঙলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাল্যবিবাহ অত্যন্ত ভয়াবহ একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বাঙলাদেশে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের কারণে যে কয়টি ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাল্য বিবাহ। ষোড়শ শতকের অষ্টম দশকেও সমগ্র উপমহাদেশে বাল্য বিবাহের প্রচলন ছিলো বলে ইউরোপীয় পরিব্রাজকদের বর্ণনায় প্রকাশ পায়। আবুল ফজলের ‘আইন-ই-আকবরী’তে তৎকালীন সমাজের বাল্য বিবাহ প্রথার প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৯২৯ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুসারে বাল্যবিবাহ বলতে বোঝায়, বাল্যকাল বা নাবালক বয়সে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিয়ে।

অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাল্যবিবাহ সম্বন্ধে স্ক্রাফটনের মন্তব্য, “এই উপমহাদেশের ছেলেমেয়েদের শিশুকালে বিয়ে দেয়া হতো। ১২ বছর বয়সে একজন রমনীর কোলে একটি সন্তান- এটা ছিলো সাধারণ দৃশ্য”। সে যুগে ৬-৭ বছর বয়সের পর অবিবাহিত নারী ঘরে থাকা মানেই অসম্মানজনক একটি বিষয়। রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে একটি গতিশীল সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেন। কিন্তু প্রায় এক শতাব্দীকাল অতিক্রম হলেও আমরা আজো বাল্য বিবাহের বদ্ধ শিকল থেকে কতোটুকু মুক্ত হতে পেরেছি? বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ের সাথে ২১ বছরের কম বয়সী ছেলের বিয়েকেই বাল্যবিবাহ বলা হয়।

কোনো ব্যক্তি কোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা বা নির্দেশ প্রদান করলে তার ১ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা বা তিনি উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। যদি তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে বিবাহটি বাল্যবিবাহ হিসেবে বিশ্বাস করার কোন কারণ ছিল না, সেক্ষেত্রে তিনি এই অপরাধের দায় থেকে মুক্তি পেতে পারেন। দারিদ্র্যতা যেহেতু মানুষের সকল মৌলিক চাহিদাগুলোকে কারারুদ্ধ করে ফেলে, সেহেতু মানুষ তখন প্রয়োজনের কাছে সকল আইনকে জলাঞ্জলি দেয়। তাছাড়া শিক্ষার অভাবও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাঙলাদেশের এমন অনেক স্থান আছে যেখানে এখনো শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি।

এতেও বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বাল্য বিবাহের দৃশ্য সবচেয়ে ভয়াবহভাবে ধরা পড়ে উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলায়। এখনো সেখানে পাঁচ বছরের বালিকাদের সঙ্গে সত্তর বছরের বৃদ্ধের বিয়ের ঘটনা ঘটে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।