আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত’ জিনিসটা কি? (১৮+++)

খবর ১ খবরটা দিন সাতেক আগের। খৃস্টীয় ধর্মগুরু পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট রোমন ক্যাথলিক চার্চের প্রধানের পদ থেকে সরে দাডাচ্ছেন এই মাসের ২৮ তারিখের মধ্যে। অনেকে পোপের আকস্মিক পদত্যাগের খবরে হতবাগ ও মর্মাহত। গত ৬০০ বছরের মধ্যে এরকম ঘটনা আর ঘটেনি। ছবিঃ পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট খবর ২ পোপ ষোড়শ বেনেডিক্টের পদত্যাগের ঘটনায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের একদল তরুণী ।

উন্মুক্ত বক্ষে ‘Pope, No More’ লিখে তারা প্যারিসের রাস্তায় বিক্ষোভ ও উল্লাস করে। শুধু তাই নয়, তারা ৮৫০ বছরের পুরোনো একটি চার্চের নিরাপত্তা ভেদ করে ভিতরে ঠুকে পরে। পোপের বিরুদ্ধে উচ্চসরে (অশ্লীল) স্লোগান দিয়ে চার্চের ঘন্টা বাজাতে থাকে। পরে অবশ্য নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের নিবৃত করে। পোপের বিরুদ্ধে তরুণীদের নগ্ন হয়ে বিক্ষোভের খবরটি মোটামুটি বিশ্বের সকল মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়।

ছবিঃ গির্জার ভিতরে ঠুকে নারাবাদী বিক্ষোভকারীদের স্লোগান প্রতিক্রিয়া কী কিছু হয়েছে? কিছুই না, অন্তত আমার চোখে আসেনি। এর অর্থ কি এই দাঁড়ায় যে, বিশ্বে খৃস্টান ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাসে ভাটা পড়েছে? নাকি পোপকে সমর্থন করেন এমন লোকের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে? আমার তা মনে হয়না। বিশ্বে এখনও কোটি কোটি খৃষ্টান আছেন যারা বিশ্বাসী, নিয়মিত ধর্মকর্ম পালন করেন। কোন বিশ্বাসকে বা মতবাদকে কেউ সমালোচনা করতে পারে। কিন্তু তাতে ধর্মের বা মতবাদের কিছু যায় আসে না।

ধর্মীয় গুরু বা নেতার ক্ষেত্রেও একি কথা প্রযোজ্য। পোপের অনেক সিদ্ধান্ত ঐ তরুণীদের ভালো লাগেনি, তাই তারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কাউকেই উগ্র বা হিংস্র হতে দেখা যায়নি। ছবিঃ শরীরে 'পোপের খেলা শেষ' 'আর নয় পোপ' ইত্যাদি লিখে প্রতিবাদ মুসলিমদের ক্ষেত্রে দেখা যায় ঠিক উল্টো চিত্র। উলঙ্গ হয়ে প্রতিবাদ তো ধুরে থাক, ইসলাম বা নবী নিয়ে ফেসবুকের একটা কমেন্ট বা সম্পাদিত ছবিই যথেষ্ট হুলুস্থুল কান্ড ঘটার জন্য।

গ্রাম, বসতি, উপসানালয় সব নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর যদি পত্রিকায় কার্টুন বা যেনতেন একটা ভিডিও বানিয়ে নেটে ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে তো কথায় নেই। ভাংচুর, হত্যা, অবোরোধ, সম্প্রচার বন্ধ, আরো কত কি...। ছবিঃ গ্রীসে মহানবীকে নিয়ে নির্মিত ছবির বিক্ষোভ ধর্ম বা ধর্মীয় গুরুকে নিয়ে সমালোচনার বিরুদ্ধে এসব হিংস্র প্রতিবাদের ফল কিন্তু বরাবরই সেই ধর্ম বা গুরুর জন্য নেতিবাচক। এযাবৎকালে এরকম যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তাতে সমালোচনাকারীরাই বেশি লাভবান হয়েছে।

অধিকাংশ মানুষ ঐ বিষয়টার খবর জেনেছে অথবা জানতে আগ্রহী হয়েছে বিক্ষোভের পর। কে আগে জানতো কথাকার কোন পত্রিকা মহানবীর ব্যঙ্গ কার্টুন ছেপেছে বা কোন আবাল কি সব বাল ছাল ভিডিও বানিয়েছে। যখনি হিংসাত্মক কর্মসুচি হয়েছে তখনি সেটা ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। থাবা বাবার কথিত ব্লগটিও আগে খুব কম লোক পড়েছে, কিন্তু এখন মোটামুটি সবাই পড়ছে। থাবা বাবাকে যারা নাস্তিক বলে তার নৃশংস হত্যাকে কিছুটা হলেও হালকা ভাবে দেখছেন তারা সেই আবাল টাইপের নির্বোধ।

শেইম অন ইউ। অন্যরা ভুল ব্যাখ্যা দিলে তার পালটা জবাব হিসেবে সঠিক প্রচার করাটাই যুক্তিযুক্ত হতে পারে। গুরুদের মহানুভবতা নিয়ে ফিল্ম, ডকুমেন্টারি তৈরি, লেখালেখি করে সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে কে বাঁধা দিচ্ছে? মানুষই দেখে শুনে রায় দিবে কোনটা কী। ছবিঃ নিহত ব্লগার আহমেদ রাজীব তথাকথিত এইসব উগ্রবাদী বিশ্বাসী লোকদের জন্য কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সময়ে সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে গঠনমুলক সমালোচনার পরিবর্তে ফালতু কুৎসা রটানোর সুযোগ পায়। একটা সমাজে সহজে ঝামেলা পাকানোর এর থেকে সহজ উপায় আর কী হতে পারে? আর একটা বিষয় এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন।

ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে যত লোককে মিছিল, সমাবেশ আর জ্বালাও পোড়াও করতে দেখা গেছে, নামাজের ওয়াক্তে মসজিদে সেই পরিমান মুসুল্লি কোন দেশেই পাওয়া যায় না। সমালোচনা সহ্য করা যায় না, কীন্তু নিজে পালন করার বেলায় নাই। বেশতো, সব বাংলালিংক দামে পাইছে...। এসব বিশ্বাসীদের জন্য হতাশা প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই বলার নাই।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.