কত কিছু যে করতে চাই, তবুও কিছু করতে না পারার দায়ে মাথা খুঁটে মরি ।
এক দৈত্য আছিল খুবই পেটুক। সারাদিন মানুষ ধরত আর খাইত। কিন্তু চাইলেই ত আর যার তার উপর ঝাপিয়ে পড়া যায় না। একটা না একটা কথা দিয়ে ঝগড়া লাগে, পরে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
ত সব উছিলা যখন শেষ, তখন উপায় খুজতে অনেক সাধনা করল সে।
একটা বাগান বানালো। সেখানে খুব সুন্দর সুন্দর ফুল দিয়ে ভরায়া ফেলল। সেটার কোনই দেয়াল নাই। মানুষ জন তাকায় আর অবাক হয়ে যায়,”এত সুন্দর বাগান কার !!” পরে আর কী! দৈত্য ঝাপায়া পড়ে তার উপর,” ঐ শ্লা তুই আমার বাগানের ফুল দেখলি ক্যান? তুই আসলে লুল।
আইজকা তোরে খাইসি। “
আরও কিছুক্ষণ পরে দৈত্য ভরপেটে ঢেকুর তোলে।
------
কোন এক কালে এক সাংবাদিক ঢাকা শহরের মেয়রের কাছে জানতে চাইল, এই যে এত নোংরা আবর্জনা রাস্তা ঘাট ভরিয়ে ফেলছে। দেখতে ত খুবই খারাপ লাগে। খুব খারাপ গন্ধ।
এ ব্যাপারে কী সরকারের কোনই দায়িত্ব নেই?
ত সেই মেয়র উত্তর দিল, “দেখেন বাঙ্গালীরা কোন দিন শুধরাবে না। সরকার ত মানুষের দায়িত্ব নিবে, ময়লার ত না। মানুষ ময়লার দিকে তাকায় কেন? ময়লার গন্ধ না নিলেই পারে।
যাদের মনে গন্ধ তারাই ময়লার গন্ধ পায়। তারা আসলে লুল।
“
--------------
সেদিন একজন তর্ক করল(ব্লগের জ্বালাময়ী নারী,আধুনিক নারীবাদী) যে, মেয়েরা কেন ওড়না পড়বে? চাইলে আমি শর্ট ড্রেস পড়তেই পারি। ছেলেরা বুকের দিকে তাকাবে কেন? নিজেদের সামলে রাখতে পারে না?
উপরের গল্প দুইটা যারা পড়ছেন, তাদের নিশ্চয়ই বলতে হবে না যে এই কথার উত্তর কী !! আধুনিক নারীবাদীরা বুঝবে না । সাধারণ মানুষ বুঝবে।
শুধু একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, রাস্তার আলতু ফালতু পোলাপান আপনার বুকের দিকে তাকালে কী খুব গর্ববোধ করেন? জানি ত, ফোঁস করে উত্তর দিবেন,” তোরা লুল, তোরা তাকাস ক্যান? ” এই প্রশ্নের উত্তর হল উপরের দুই গল্প। ফুল বলেন আর ময়লা যেটাই ভাবেন, দুই গল্পের বিষয়বস্তু একই।
আমার চোখের সামনে ধরেন তাই তাকাই। গর্বে আপনার বুক আরও ফুলে যায়। আমি লজ্জা পাই, কেউ কেউ মনে মনে অশালীন হাসি দেয়।
[ওইসব মানুষকে বিরক্ত লাগে, যারা বলে ছেলেদের তাকানোটাই স্বাভাবিক। ওরা নিজেরা বুঝে না যে কী বলতে হবে আর সেটা না বুঝেই মানুষকে উলটাপালটা বলে।
ছেলেদের তাকানোটা মোটেও স্বাভাবিক না, বরং এর রিপ্লেসড শব্দটা হবে, ”যাদের যাদের চোখের সামনে আসবে তাদের”]
--------
৫০০ বা তারও বেশী টাকা দিয়ে লিপস্টিক কিনে কিছু নারী জাতি যখন নারীবাদী ডায়লগ দেয়, তখন আমার খুব হাসি লাগে। যখন তারা চিল্লাপাল্লা শুরু করে যে, “পুরুষরা নাকি তাদের জোর করে পণ্য বানাইছে,” তখন শুনতে খুব মজা লাগে। উনারে পুরুষরা খুব জোর করে, পিলিজ লাগে একটা লিপস্টিক কিনেন। না কিনলে সংবিধান অবমাননা হবে !! উনি লিপস্টিক কেন দিলেন? এত দামী মেকাপ বক্স কেন? এত বড় ঝুমকা কেন? স্বর্ণের গহনাই বা লাগবে কেন? কারণ আমিও জানি, উনারাও জানেন। কারণ হল, উনাদের যেন সুন্দর লাগে।
আর পুরুষের চোখে সুন্দর লাগানোটাই যদি ফ্যাক্ট হয়, তাহলে আফু এত পণ্য নিয়ে ডায়লগ ক্যান দেন?
আমার কাছে কিন্তু মেয়েরা সেজেগুজে আসলেই ভাল লাগে। আমি নিজেও শার্ট চয়েস করতে গেলে বেছে দেখি যে কোনটাতে আমাকে ভাল লাগবে। এই জন্যই কিন্তু আমি ডায়লগ দেই না যে, অপর পক্ষ আমাকে পণ্য বানাতে চায়। যদি আমি বলতাম যে, আমি ত পুরুষ, সবাই আমার পিছে এমনিই ঘুরবে বরনং তাইলেই এটা পুরুষবাদী ডায়লগ হত।
একটা মেয়ে যখন সেজেগুজে থাকে, তখনও সেটা পুরুষবাদী ধারারই স্রোত।
যেখানে সে যোগ দিয়েছে নিজে। আধুনিক নারীবাদী মেয়েরা পুরুষতান্ত্রিক সবচেয়ে বেশি। মুখে নারীবাদী ডায়লগ, কিন্তু ঠোটে লিপস্টিক যেন সেই ডায়লগ বাকিদের কাছে ভাল লাগে। আহা! আমরা দেখি, আমরাই ত লুল।
ব্লগের বিখ্যাত এক নারী, সেই নারীবিদ আমাকে অমোঘ ডায়লগ দিলেন, আমি ছোট মানুষ বলেই নাকি বুঝি না যে, মেয়েরা আসলে নিজেদের জন্যেই সাজে।
নিজেদের গন্ধ একটু শুকে দেখবে, নিজেদের সাজলে কেমন লাগবে, সেটা জানার জন্যেও নাকি সাজে।
আমি চিন্তা করে দেখলাম, আসলে এটাই সব সময় হয়। সচেতন মহল মাত্রই জানেন যে, মেয়েরা নিজেদের দেখার জন্য সেজেগুজে গরেই বসে থাকে। আর বাইরে যাওয়ার সময় কখনই সাজে না । আমি ছোট মানুষ ত তাই বুঝতে পারি নাই।
আসলে কিছু মানুষ থাকে, যারা নিজের মতবাদকে নিজের সত্ত্বা ভাবে। আর ভুল হলেও উলটাপালটা যুক্তি নিয়ে আসে। বুঝে না যে, এটা আসলে নিজেকেই ঠকানো।
আমি কিন্তু মোটেই সাজগোজের বিপক্ষে না। কিন্তু যে সাজগোজ করবে, সে যখন বলে যে কেন আমরা পুরুষদের মনোরঞ্জন করব? কেন আমরা পণ্য হব, তখন ত আমি হাসলে তাদের গায়ে লাগে ক্যান বুঝলাম না।
বিজ্ঞাপণের মডেলরা নিজেদের পণ্য বানায়, সেজেগুজে মনিটরের বিজ্ঞাপণ দেয়, “আমার ড্রেসে মতই পাতলা আর এই ড্রেসের কাপড়ের মতই স্বচ্ছ ছবি। ” সরাসরি বলে না, কিন্তু আইডিবির সামনে ল্যাপটপের বিলবোর্ডে হাফপ্যান্টেরও ছোট একটা প্যান্ট পরে মেয়েটার বসে থাকার মানে এই স্লোগান ছাড়া আর কী হতে পারে বুঝলাম না ! মনে আছে, এরকম আরেকটা বিলবোর্ডের বিপক্ষে লিখে এক ব্লগার আধুনিক নারীবাদীদের মাইনাসের বন্যায় ভেসে গেছিল।
মডেলিং এর জন্য দেখি নারী জাতি পাগল। এরাই নিজেদের পণ্য বানিয়ে দর্শকদের লোভ দেখায়। টাকা হবার পর, যৌবন শেষে এরা নারীবাদী সংগঠনের প্রধান হয়।
---------------
জগদ্বিখ্যাত মনীষী আকাশোটাশকির () মতে, আমি যার দুপুর বেলার খাবারের টাকা দেই না, সে দুপুর বেলা কী পড়ে বের হবে তা ঠিক করে দেবার অধিকারও আমি রাখি না।
কিন্তু, কিন্তু, আমি যা পারি, তা হল, মনে মনে ঠিক করতে যে, এ ভাল আর এ খারাপ। আর আমি মনে মনে তাকে ভাল বা খারাপ যাই বলি না কেন, সে আমাকে কিছু বলতে পারে না। কারণ আমার দুপুরের খাবার টাকা সে দেয় না, তাই দুপুর বেলা তাকে দেখে আমি কী ভাবব সেটা সে ঠিক করার অধিক্র রাখে না।
সে তার যা ইচ্ছা পড়ুক, আমি তাকে যা ইচ্ছা মনে করব।
আর যাকে যা ইচ্ছা করার অধিকার না দিলে আমি বুঝব কী করে যে, কে ভাল আর কে খারাপ !!
------------
মেয়েদের টিজ করা নিয়ে মাঝে মাঝে কিছু পোস্ট আসে। সেখানে আধুনিক নারীবাদীদের কিছু ডায়লগ দেখে মাঝে মাঝে হাসি লাগে। এরা যে টিজের সাথে পরিচিত শুধু খবরের কাগজ আর সিনেমা আর কাহিনী শুনেই, সেটা পরিষ্কার বুঝা যায়।
একটা বখাটে ছেলে যে, মেয়েদে বিরক্ত করে সে জাতির সবচেয়ে নিকৃষ্ট সন্তান। আর, সামনে বা পরে তার থেকে অন্য কোন ভাল কিছুর প্রত্যাশা করাটা বোকামী।
বা যদি এমন ভাবেন যে তার অন্য কোন ভাল গুণ থাকতে পারে, সেটাও বোকামী। কারণ তার মানবিকতাই নাই, তাই আর কোন ভালগুণ থাকারও কথা না।
আমি যা বুঝাতে চাচ্ছি তা হল, একটা বখাটে ছেলের কাছ থেকে আপনি ভাল কিছুই আশা করতে পারেন না। তাও, তাও তার টিজিং এর দুটা ভাষা থাকে। এটা যারা দেখছে, তারাই জানে।
একটা আজেবাজে ড্রেস আপের মেয়ে সামনে দিয়ে গেলে ওরা ঘেউ ঘেউ করে যে, “ ওররে কত্ত বড় রে, কত্ত মজা হইব রে। চাকুম চাকুম। মজাই মজা। ” আর একটা ভদ্র মেয়ে গেলে ওরা ঘেউ ঘেউ করে যে, “ এইটা আমার বউ। ওরেই আমি চাই।
তোরা সবাই ভাবী ডাকবি। ”
দেইখেন, আমি “ ঘেউ ঘেউ করে ” টার্মটা ব্যবহার করছি। কেউ আবার বইলেন না যে আমি ওদের ভাল কইছি। আমি যা বুঝাতে চাচ্ছি তা হল, পাশাপাশি দুটা সংখ্যাকে যা দিয়েই মাল্টিপ্লাই করা হোক না কেন,ইনপুটের গুরুত্ব থাকেই। আপনি ভাল হলে, আপনি সবার থেকে সাপোর্ট পাবেন, আর নইলে সবাই মজা দেখবে।
মজা দেখতে সবাই ভালবাসে।
[যারা এসিড মারে কিংবা ধরে নিয়ে যায় বা রেপিস্ট, তারা কিন্তু টিজার না, সন্ত্রাসী। তারা শুধু মেয়েদের ধরে তা না, তারা রাস্তায় ছেলেদেরও ছিনতাই করে। ব্যাপারটাকে অনেকে গুলিয়ে ফেলে। ওখানে এইসব কুকুর যাদের কামড় দেয়, তাদের কোন ভূমিকাই নাই।
যাই হোক, এইটা আর উপরে বলা বিষয় এক না। সুতরাং এই বিষয়ে উদাহরণ টেনে এনে যুক্তি দেখানো ফ্যালাসি ছাড়া কিছু না। ]
-----------
বস্তিতে কত মানুষ বউ পেটায় সেই খবর জানেন? রক্ষণশীল ভড়ংবাজ পরিবারগুলোতে মেয়েগুলোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কত বিয়ে হয় সেটার এক্যুরেট পরিসংখ্যান কয়জনের কাছে আছে? কৃষিক্ষেতে যারা কাজ করে সে সব মহিলারা সারাদিন পর্দা নিয়ে চিন্তা করলে হাটতেই পারবে না। হাটু পর্যন্ত শাড়ি উঠিয়ে সবার সাথে কাজ করে, তখন এদের স্বামী কিছু বলে না। কিন্তু মাথা থেকে ঘোমটা নামালে তালাক হয়।
যৌতুকের জন্য কত শত মেয়ে অত্যাচারিত হয়েছে সারাটা বছর। এসব কারও চোখে পড়ে না?
এভাবে যারা অত্যাচারিত হয়, মানবতার অধিকারগুলোই তাদের কাছে নারী অধিকার। তারা শর্ট ড্রেস পড়ার অধিকারের জন্য আন্দোলন করে না, লিপস্টিক ঠোটে দিয়ে মুখে ওড়না না দিলে চলতে কত সুবিধা সেসব নিয়ে ডায়লগ দেয় না। এরা খেয়ে পড়ে বাঁচার অধিকার চায়, আর সম্মান চায়। যেটা তাদের প্রাপ্য, মানুষ ইসেবে,মায়ের জাতি হিসেবে।
আফসোস, আধুনিক নারীবাদীরা এসব খেটে খাওয়া নারীদের পক্ষে কখনই কথা বলে না। মেয়েদের ওয়েস্টার্ণ ড্রেস পড়ার অধিকার নিয়েই তারা লাফায় বেশি। ওই যে, আকাশোটাশকি বলেছেন, “সবাই মজা নিতে ভালবাসে রে মামা। সব্বাই মজা নিতে চায়। “ এই আকাশোটাশকি আসলে পুরাই লুল।
আফসুস, আফসুস।
মেয়েদের নিয়ে লিখছি, অনেক ভড়ংবাজ নারীবাদীর গায়ে লেগে গ্যাছে। পুরা পোস্ট পড়ার দরকার নাই। গায়ে লাগলে এমনিই মাইনাস দিয়ে যান।
ইনারা আবার পুরা কথা কখনও শোনেন না।
উনাদের গং ছাড়া অন্য কেউ নারীদের নিয়ে এক দুই লাইন বললেই সাথে সাথে ঝাপাইয়া পড়েন, জ্ঞান দেন। একজন বলে যাবেন, “শিক্ষিত ছেলেরা এমন চিন্তা করে দেখে লজ্জায় মাথা নুয়ে যায়। ” কিছু না বুঝেই চ্যাট সাইটে কমেন্ট করবেন, “ মেয়েদের নিয়ে ও পোস্ট দিছে এটা দেখার সাথে সাথে মাইনাস দিয়ে আসছি। ” আফসুস। আফসুস।
(এই পোস্টটা নিজের শোকেসে রাখব ঠিক করছি। আধুনিক ভড়ংবাজ নারীবাদীদের কমেন্ট আর পোস্ট পেলে ওখানে যেয়ে এটার লিংক দিয়ে আসব। হিটাকাংখী মনোভাবের জন্য নিজেরেই আফসুস দিলাম। )
© আকাশ_পাগলা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।