মানুষ তো না... আমি জানোয়ার... মানুষ যেদিন হব ফিরে আসব সেইদিন...
গত ২৪ অক্টোবর বিকাল ৫ টা। আগারগাওঁয়ে অবস্হিত " শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়" প্রাঙ্গণে হাহাকার উঠেছিল, কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন একটি ছেলের মা। ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলেটি রোজকার মতই বন্ধুদের সাথে বের হয়েছিল স্কুলের উদ্দেশ্যে; ছুটির সময় দেখা গেল সবাই আছে শুধু নেই ছেলেটি, যে কোন এক মায়ের নাড়ি ছেঁড়া ধন বা কোন এক বাবার শ্রেষ্ঠ ঐহিক ঐশ্বর্য!
এই ছেলেটি ফিরে এসেছিল, কিন্তু তার মত অনেক ছেলেই হারিয়ে গিয়ে ফিরে আসেনা..... কোনদিন আসেনা ফিরে......
যা ঘটেছিল: ছেলেটি বন্ধুদের বয়ান অনুযায়ী ( ছেলেটি বা ছেলেটির পরিবারের কারো বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি) ছেলেটিকে রিক্সাওয়ালা নিয়ে যায় কোন এক অজানা পথে। ছেলেটি প্রতিবাদ করতে গেলেই ছেলেটিকে কেউ এমন কিছু করে যাতে ছেলেটি অজ্ঞান হয়ে যায়। জ্ঞান ফিরলে ছেলেটি নিজেকে আবিষ্কার করে বেনাপোলে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি।
সে বুঝতে পারে তাকে পাচার করার জন্য আনা হয়েছে। সুযোগ বুঝে পালায় ছেলেটি। বলতেই হবে ছেলেটি সৌভাগ্যবান, কেননা সে খুঁজে পায় একটি বিডিআর (এখন কী নতুন নামে ডাকতে হবে আমাদের সীমান্ত প্রহরীদের?) ক্যাম্প। সীমান্ত সেনাদের সহায়তায় আরো কয়েকটি শিশুকে উদ্ধার করা হয়। কার হেফাজতে বা কার সাহায্যে ছেলেটি ঢাকায় আসে তা জানা যায়নি।
তবে সে গাবতলী থেকে ফোন করে বাবাকে আসতে বলে, বাবা আসেন এবং হাসিমুখে বাড়ি ফিরে যান।
এবং একইভাবে গতবছরও " শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়" প্রাঙ্গণে হাহাকার উঠেছিল, সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলেটি চকলেট খেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল এবং পরে নিজেকে আবিষ্কার করেছিল (সম্ভবত) যশোরে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি গ্রামের রাস্তায়। সন্দেহ করা হয় যে, জ্ঞান না ফিরলে ঝামেলাহীনভাবে সীমান্ত পার করা যেত না বলেই তাকে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। এক বৃদ্ধের আশ্রয়ে থেকে সে তার বাবার সাথে যোগাযোগ করে......
এই ছেলেটিও ফিরে এসেছিল, কিন্তু তার মত অনেক ছেলেই হারিয়ে গিয়ে ফিরে আসেনা..... কোনদিন আসেনা ফিরে...... সেই পরিবারগুলো, কাঁদে, শুধুই কাঁদে......
এথেকে বোঝা যায় আইডিবি ভবন প্রাঙ্গণ, আগারগাওঁ বাসস্ট্যান্ড, তালতলা.... এইসব এলাকায় শিশু অপহরণকারীচক্র নিয়ত সক্রিয়.....
আর কতদিন??? আর কতদিন এইভাবে মায়েরা হাহাকার করবেন স্কুল প্রাঙ্গন গুলোতে?? নিয়ত অভিভাবকের প্রহরায় আসা যাওয়া করা শিশুগুলোর নিরাপত্তা নেই যেখানে সেখানে অভিভাবকহীন পথশিশুদের নিরাপত্তাই বা কে দেবে???
কাল হয়ত আমাদেরই কারো স্বজন হাহাকার করে উঠবেন " আমার মানিক কোথায়??" বলে...... সেই অসহায়ত্ব বলার নয়... কওয়ার নয়.. কী বোর্ড দিয়ে লেখার নয়....... সেই পরিস্হিতে দাঁড়িয়েই শুধু বোঝা যায়.......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।