একখানা মতামত দিয়েন কিন্তু!!!!!!
একটু শান্তি আর সুখের আশায় মানুষ কত কী যে করে তার কোন ইয়াত্তা নেই। তবুও শান্তি খুঁজে পায়না। পৃথিবীতে কত % মানুষ সূখী? এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন।
ছোট বেলায় একটা গল্প পড়েছিলাম। পুরোটা সঠিকভাবে হয়ত মনে নেই তবে সারসংক্ষেপটুকু মনে আছে।
গল্পের কাহিনীতে কোন এক রাজার অসুখ হলো। কোন ডাক্তারী চিকিৎসায় তার কাজ হচ্ছেনা। ধীরে ধীরে রাজা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। উঁজির, মন্ত্রী সর্বোপরী প্রজারা বিচলিত হয়ে পড়ল। সবশেষে রাজ্যের সকল কবিরাজ, গুণকদেরকে ডেকে আনা হলো।
সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিল যে, রাজাকে যদি কোন সুখী মানুষের জামা-কাপড় পরানো যায় তাহলে রাজা এ বিরল অসুখ থেকে মুক্তি পাবেন। যে কথা সেই কাজ। শুরু হয়ে গেল সূখী মানুষ খোঁজা। কিন্তু কাজটা যতটা সহজ মনে হয়েছিল একেবারেই তা নয়। রাজ্যের কোথাও কোন সুখী মানুষ খুজে পাওয়া গেল না।
যাকেই দূর থেকে সুখী বলে মনে হয় কাছে গেলে দেখা যায় তার অনেক রকম দূঃখ-কষ্ট। এদিকে রাজার শরীর দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। যে করে হোক একজন সুখী মানুষ চাই-ই চাই। … সবশেষে একব্যক্তিকে দেখা গেল খুব আনন্দ-খুশিতে মেতে আছে। লোকটা হাসছে, খেলছে ফূর্তি করছে আর মাঝে মাঝে এদিক সেদিক ঘুরে ফিরছে।
অনেক্ষন পর্যবেক্ষন করে তাদের মনে হলো এ লোকটা সুখী। কাছে যেয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করতে সে বলল অবশ্য আমি সুখি। তখন তাকে রাজার ব্যাপারে সব খুলে বলে তার কাছে তার নিজের একটা জামা চাওয়া হলো। জবাবে সে বলল: “আমারতো এই পরনের কাপড়টুকু ছাড়া আর কোন কাপড় নেই”। শুনে সবাই অবাক হলো।
...
এভাবেই গল্পের শেষ হয়ে গেল। কিন্তু আমার ভাবনা শুরু হলো।
আসলে সূখ জিনিসটা কি? যদি আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হয় সুখ বা সুখী বলতে আপনি কী বুঝেন? উত্তরে অনেকে অনেক কথা বলবে যার একটার সাথে অন্যটা অতি সামান্যই মিল। যদি কোন পন্ডিত বা দার্শনিক ধরণের লোককে এই প্রশ্নটা করেন তাহলে সে একই উত্তর একটু ঘুরিয়ে পেচিয়ে দিবে। এমন হতে পারে যে সে বলল: “সুখ হচ্ছে আপেক্ষিক একটা বিষয়।
এটা একেক জনের কাছে একেক রকম। ” আসলেই খানিকটা সেরকম। কোন অবস্থান দিয়ে সুখ বা সূখী নিরূপন করা যায় না। একটা উদহরন এখানে দেওয়া যেতে পারে। ধরুন একজন শ্রমজীবিকে জিজ্ঞাসা করা হলো “আপনি কি সূখী?” উত্তরে তার অনেক অভাবের কথা, পাওয়া-না পাওয়ার অভিযোগ উঠবে এটাই স্বাভাবিক।
আবার যদি একজন চাকুরিজীবি কে এই একই প্রশ্ন করেন তাহলে সে তার বর্তমান পরিস্থিতিতে অনুযোগের সুরে বলবে তার বর্তমান অবস্থা তার যোগ্যতার চেয়ে কম। তাকে আরও উচ্চপদে থাকা উচিৎ ছিল। উচিৎ ছিল আরো বেশী বেতন পাওয়া সাথে পারিবারিক ঝঞ্ঝাট-ঝামেলা তো আছেই। আবার ধরুন কোন রাজনীতিবীদকে একই প্রশ্ন করলেন। তার উত্তরে কি আসতে পারে তা যে কেই সহজেই অনুমান করতে পারবেন।
আবার যদি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিকে এই প্রশ্নটা করেন তাহলে দেখবেন তার বর্তমান অবস্থাও তাকে সুখী করতে পারিনি। এভাবে যদি একজন রাষ্ট্র প্রধান, রাজা বা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের প্রধানকেই জিজ্ঞাসা করলে উত্তরটা ঐ একই কাতারে পড়বে বলে আমার বিশ্বাস। সুতারাং যে বিষয়টা আমি বুঝাতে চাচ্ছি তা হলো কেউ তার নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট ন। তাই সে যতই ধনী হোকনা কেন, যত বড় শক্তিশালী ব্যক্তি হোক না কেন।
তাই বিষয়টকে যদি একটু অন্যভাবে বলা হয় যে, আমি সূখী; তাহলেই তো সূখী।
শুধু এটুকু মনে করা যে, আমার যা আছে তাই যথেষ্ট। সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা আমার মত অবস্থানেও নেই। সুতারাং তাদের চেয়ে একটু হলেও তো আমার অবস্থান ভাল। এমন মনে করাটা যদি আপনার বিশ্বাসে পরিণত করতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনার চেয়ে এ জগতে আর কেউ সূখী নয়।
একটু ভেবে দেখু আপনার অনেক কিছু নেই এটা ঠিক।
কিন্তু আপনার এমন কিছু জিনিস আছে যা আপনার আশে-পাশের অনেকেরই নেই। তাহলে কী আপনার অবস্থা ঐসকল লোকের চেয়ে ভাল নয়? যদি এ কথাটা সত্য হয় তাহলে আর দেরী কেন? সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এখন থেকেই বিশ্বাস করুন আপনি একজন সত্যিকারে সূখী মানুষ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।