আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নোবেল শান্তি পুরস্কারের ইতিহাসে এ বছর প্রথম একসঙ্গে তিনজন নারী হলেন নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত।

বলতে পারিস বিশ্বপিতা ভগবানের কোন সে জাত! কোন ছেলের তার লাগলে ছোঁয়া অসুচি হন জগন্নাথ! এই তিনজনের সম্পর্কে একটু বলি - একজন হলেন লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট এলেন জনসন সারলিফ। লাইবেরিয়ায় দীর্ঘ ১৪ বছর গৃহযুদ্ধ চলার পর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত আফ্রিকার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট সারলিফ দেশে শান্তি ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় নিরসনভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্যে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হওয়ার সুবাদে শুরু থেকেই তিনি শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নের দৃষ্টিতে পড়েন। তার সঙ্গে শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অপর দু'জন হলেন লেমাহ জিবোয়ি ও তাওয়াকুকুল কামান। লেমাহ নিজেও লাইবেরিয়ার অধিবাসী এবং তাওয়াকুকুল কামান ইয়েমেনর। এরা তিনজনেই পুরস্কারের অর্থ দশ মিলিয়ন নরওয়েজিয়ান ক্রোনার পাবেন সমান ভাগে।

বাংলাদেশী টাকার অংকে এই এক কোটি ক্রোনারের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় বারো কোটি টাকা। এই পুরস্কার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হবে বরাবরের মতো আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের মৃতু্যদিবস ১০ ডিসেম্বর। একটি আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে। এদের তিনজনকে কেন এই পুরস্কারে ভূষিত করা হলো তার ব্যাখ্যায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বলেছে অহিংস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নারীদের নিরাপত্তা বিধান এবং শান্তি প্রক্রিয়ার কর্মকাণ্ডে নারীর পূর্ণ অংশগ্রহণের অধিকার অর্জনে তাঁরা প্রভূত অবদান রেখেছেন। আরও বলা হয়েছে সমাজের সর্বস্তরে স্থায়ী শান্তি, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র অর্জন সম্ভব নয় যতৰণ পর্যন্ত পুরুষের মতো সমান প্রভাব বিস্তারের ৰমতা নারীদের দেয়া হবে।

এরই আলোকে সশস্ত্র সংঘাতপূর্ণ অবস্থায় নারীর বিরম্নদ্ধে সন্ত্রাস ও তা থেকে রৰার জন্যে প্রথমবারের মতো নিরাপত্তা পরিষদে নারীর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে গৃহীত হয়। '১৩২৫' নামের প্রস্তাবটি। এতে বলা হয়েছে পুরুষের মতো সমান অধিকার সম্পন্ন হয়ে সকল শান্তি প্রক্রিয়া এবং দৈনন্দিন জীবনের শানত্মিপূর্ণ কর্মকা-ে নারীর অংশগ্রহণের কথা। এই ৰেত্রে প্রেসিডেন্ট সারলিফ তার দেশের অর্থনৈতিক ও সমাজিক উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রভূত অবদানের মাধ্যমে দেশে শানত্মি স্থাপন এবং নারীর ৰমতায়নের অবস্থানকে সংহত করেছেন ২০০৬ সাল থেকে তার কর্মকা-ে নিমগ্ন থেকে। তারই মতো লেমাহ জিবোয়ি দীর্ঘদিন গোত্রীয় ও ধমর্ীয় জীবন ধারা বিভক্ত শ্রেণী ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘাতে লিপ্ত সকল নারী সম্প্রদায়কে অসাম্প্রদায়িক ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে অবসান ঘটিয়েছেন দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকা লাইবেরিয়ার সশস্ত্র সংঘাত।

তিনি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণের অধিকার। যুদ্ধ চলাকালে এবং যুদ্ধোত্তরকালে পশ্চিম আফ্রিকায় নারীদের ৰমতা ও প্রভাব বৃদ্ধি করেছেন। ইয়েমেনের তাওয়াকুকুল কামান সাম্প্রতিক সময়ে আরব স্প্রিং (অৎধন ংঢ়ৎরহম) নামে অভিহিত গণতন্ত্রকামী মানুষের গণজাগরণের আগে এবং আন্দোলনরত সময়ে নারীর অধিকার অর্জন এবং শানত্মি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পালন করেছেন নেতৃস্থানীয় ভূমিকা। এই তিন নারীকে পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে নোবেল কমিটি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই পুরস্কার- পৃথিবীর যেসব দেশে নারীরা তাদের অধিকার বঞ্চিত তারা যে শানত্মি এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কতটা গুরম্নত্বপূর্ণ এই বোধটা জাগিয়ে তুলতে এবং নারীর প্রবঞ্চনার ইতি টানতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। এবারের এই তিনজন নোবেল বিজয়ীকে নিয়ে এ পর্যনত্ম শানত্মিতে নোবেল বিজয়ী নারীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট বারো জন।

একই সংখ্যা বিরাজ করছে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী নারীর ৰেত্রেও। আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধু শানত্মি প্রতিষ্ঠার জন্যে আত্মনিবেদিত অস্ট্রিয়ার মনীষা নারী বার্থা ভন সাতনার এ দেয়া প্রসত্মাবে ১৯০৫ সালে প্রবর্তিত নোবেল শানত্মি পুরস্কারের প্রথম বারের পুরস্কারটি প্রদান করা হয় বার্থা ভন সাতনারের দেয়া প্রসত্মাবে ১৯০৫ সালে প্রবর্তিত নোবেল শানত্মি পুরস্কারে প্রথমবারের পুরস্কারটি প্রদান করা হয় বার্থা ভন সাতোয়ারকে। এরপর যারা পান তারা হলেন- জেন এ্যাডামস ১৯৩১ সালে, এমিলি গ্রীন বাল্ক ১৯৪৬ সালে, বেটি উইলিয়ামস ও মেরিড কোরিগান ১৯৭৭ সালে, মাদার তেরেসা ১৯৭৯ সালে, আলভা মিরদশ (সুইডেন) ১৯৮২ সালে, আউং সান সুচি ১৯৯১ সালেম বিগোবার্তা মেন্চু তুম ১৯৯২ সালে। ৩৮৮টি পেটেন্টের আবিষ্কারক সুইডেনের আলফ্রেড বার্নহার্ড নোবেলের নামে নোবেল পুরস্কার ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯০৫ সালে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ নরওয়ে সুইডেন থেকে আলাদা হওয়ার পর শানত্মি পুরস্কারটি সে দেশ থেকে প্রদান করা হয়। নরওয়ের সংসদ স্তুর থিং (ঝঃড়ৎ ঃরহম) এর প্রাক্তন সংসদ সদস্য নিয়ে গঠিত নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি প্রতিবছর শানত্মি পুরস্কারটি ঘোষণা করে।

এই নোবেল কমিটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট হলেন যুর বিওর্ন ইয়াগলান্দ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.