আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ কোন বর্বরতা?


আজকের বেশিরভাগ পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষ কর্তৃক পার্কিং স্পেস উদ্ধারের জন্য ধানমন্ডি এবং কলাবাগান এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকান ভেঙ্গে দিয়েছে। দোকান ভাঙ্গার সময় একজন মহিলা কান্না করছে এরকম একটি ছবি প্রকাশিত হয়েছে অনেকগুলি পত্রিকায়। যা দেখে সত্যি হতবাক হয়েছি। কিছুক্ষণ কোন চিন্তা করতে পারিনি। এটি কি রকমের অভিযান।

আমরা কি গাড়ির দাসে পরিণত হয়ে গেছি। মানুষ যাতায়াতের প্রয়োজনে গাড়ি ব্যবহার করবে ঠিক আছে। কিন্তৃ গাড়ি যে আজ মানুষের মুখের খাবার কেড়ে নেবে, শিশুকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করবে, অসুস্থকে চিকিতসা তথা জীবন ধারনের অধিকার হরণ করবে তা কি মানুষ কখনো ভেবেছে। অনেকেই ভাববেন আমি আবেগ তাড়িত হয়ে লিখছি। হ্যা সত্যি এই আবেগটুকু মানুষের থাকতে হবে।

না হলে আমরা কিসের মানুষ। এখন আসা কথা নিয়ম নীতি এবং যুক্তির কথায়। রাজধানী উন্নয়ন কর্তপক্ষ এখন বিদ্যমান নকশা অনুযায়ী যেসব স্থানে গাড়ির জন্য পার্কিং স্পেস রাখার কথা ছিল, সেখানে দোকান করায় তা উচ্ছেদ করছে। এমন কি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে গাড়ির পার্কিং এর স্থান রাখার বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। বলা হচ্ছে গাড়ি পার্কিং এর জন্য যথেষ্ট জায়গা না থাকায় সড়কে গাড়ি রাখায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

কি পরিমাণ জায়গা পার্কিং এর জন্য দেওয়া হলে সড়কে গাড়ি পার্কিং বন্ধ হবে? তাকি কোন হিসেব আছে। নতুন করে যে গাড়ি যোগ হচ্ছে সেগুলি কোথায় যাবে? একটি গাড়ি ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৯৫ ভাগ সময় পার্কিং অবস্থায় থাকে। আর একটি গাড়ি পার্কিং এর জন্য জায়গা দখল করে ১৬০ বর্গফুট। যে দোকানগুলি ভাঙ্গা হচ্ছে সেখানে বড়জোর ১ থেকে ২ টি গাড়ি পার্কিং করা যাবে। এতেই কি সড়কে গাড়ি পার্কিং বন্ধ হয়ে যাবে।

আর যার দোকানটি ভাঙ্গা হলো। ভাবা হলো না তার সংসার কিভাবে চলবে। তার সন্তানের পড়ালেখার খরচ, পরিবারের সকলের চিকিৎসা খরচ থেকে সংসারের খরচ হয়তো এই দোকানের উপর নির্ভর করে চলতো। আর যে মানুষগুলি এখান থেকে কেনাকাটা করতো তাদের তো আরো দূরে যেতে হবে কেনার জন্য। সেক্ষেত্রে যাতায়াতের চাহিদা বেড়ে যাবে।

তাহলে কি যানজট কমবে? ঢাকা শহরে প্রাইভেট কারের নিয়ন্ত্রণ লাগবে। এর জন্য পাবলিক বাস এর উন্নয়ন প্রয়োজন। পাবলিক বাসে একসাথে অনেক মানুষ চলাচল করতে পারে। একটি বাস প্রায় একসঙ্গে ৩০ টি প্রাইভেট কারের সমান যাত্রী পরিবহণ করে। একটি বাস সারাদিনে প্রায় পাঁচশো যাত্রী পরিবহণ করে।

রাত্রে গিয়ে বাসটি পার্কিং এর প্রয়োজন পড়ছে। আর প্রাইভেট কার দিনে ৩ থেকে ৪ জন যাত্রী পরিবহণ করে। আর বেশিরভাগ সময় পার্কিং অবস্থায় থাকে। ঢাকায় ভূমির তূলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। এখানে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।

অথচ গাড়ির জন্য যেভাবে দোকান ভাঙ্গা হচ্ছে। মনে মানুষ গাড়ির দাস। নিয়ম নীতি মানুষের জন্য সুতরাং বর্তমান যদি প্রাইভেট গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য কোন নিয়ম বিদ্যমান থাকে। তার পরিবর্তন প্রয়োজন।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।