আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে কনটেইনার পোর্ট নির্মাণ করবে ভারত!! আমরা কি আঙ্গুল চোষা জাতি?

পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ করেছিলাম এজন্য নয় যে ভারতকে দেশটা লিখে দেব। একবার যুদ্ধ করেছিলাম, প্রয়োজনে আবার করব। নারায়ণগঞ্জে কনটেইনার পোর্ট নির্মাণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের তোয়াক্কা করেনি ভারত!! বাংলাদেশে ভারতের ট্রানজিটের অংশ হিসেবেই নারায়ণগঞ্জের কনটেইনার পোর্ট নির্মাণ করা হবে। আর বন্দরটি বাংলাদেশে নির্মাণ করা হলেও নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে মানতে হবে ভারতের আইন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইনকে কোনো তোয়াক্কা করেনি বন্দরের দরপত্র আহ্বানকারী ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের লংঘন বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। দরপত্রের অগ্রাধিকারের শর্ত (টার্মস অব রেফারেন্স) বিশ্লেষণে এসব তথ্যই ওঠে এসেছে। নারায়ণগঞ্জে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার পোর্ট নির্মাণে প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ১০ মে দরপত্র আহ্বান করে ভারত। ভারতকে অতি গোপনে এই বন্দর নির্মাণের অনুমোদন দেয়ার কথা শনিবার ইনকিলাবের কাছে স্বীকার করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। দরপত্রের অগ্রাধিকারের শর্তে পার্ট-এ’র ৪ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, ভারত থেকে নারায়ণগজ্ঞের বন্দরে পণ্য আনা-নেয়ার সড়ক জরিপ করতে হবে।

একই অংশের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের এফ উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এই বন্দরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনে ট্রানজিটের সময় ও ব্যয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে হবে কার্যাদেশপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে। অগ্রাধিকার শর্তের দ্বিতীয় অংশের প্রথম অনুচ্ছেদের প্রথম উপ-অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সড়কপথে ভারত থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত কনটেইনার পরিবহনের মূল্যায়ন ও নারায়ণগঞ্জে জাহাজিকরণ করে ভারতে পণ্য পরিবহনের মূল্যায়ন করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় ভারতের এক অংশ থেকে অন্য অংশে পণ্য পরিবহনের সময় ও খরচের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে নারায়ণগঞ্জে পণ্য পরিবহন ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ভারতে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের সময় ও খরচের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। টার্মস অব রেফারেন্সের দ্বিতীয় অংশের ৯.৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘এই চুক্তির সকল কাজ সম্পন্ন হবে ভারতের আইন অনুযায়ী।

’ সকল ভূতাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক জরিপ বাংলাদেশে হলেও দরপত্রে বাংলাদেশের আইনের প্রতি কোনো সম্মান দেখায়নি ভারত। দেশের অভ্যন্তরে অন্যদেশের আইনে কারো কাজ করাকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। জ্বালানি-গ্যাস-বিদ্যুৎ ও বন্দররক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেছেন, এটা ভারতকে দেয়া ট্রানজিট সুবিধারই অংশ। এটা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। গোপনে সরকার ভারতকে পোর্ট নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে।

এটাই প্রমাণ করে এখানে স্বচ্ছতা নেই। এটা বিপজ্জনক। জনগণের কাছে আড়াল করেই বাংলাদেশে অন্য দেশ পোর্ট নির্মাণ করছে। ট্রানজিটের ক্ষেত্রেও একই লুকোচুরি হচ্ছে। ভারত একদিকে বাংলাদেশের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে জেলখানা বানাচ্ছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশকে তাদের সড়ক বানাচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের বন্দর নির্মাণ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ৪৬ একর জমিতে নির্মাণ করা হচ্ছে এই পোর্ট। দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৭ জুন বিকাল ৩টা পর্যন্ত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত দরপত্রের টার্মস অব রেফারেন্সে উল্লে¬খ করা হয়েছে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে ৪৬ একর জমি রয়েছে কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অব বেঙ্গল লিমিটেডের।

প্রতিষ্ঠানটি ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ওই জমিতে একটি অভ্যন্তরীণ নৌ-কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। টার্মিনাল নির্মাণে কারিগরি ও বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ভারত সরকারের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ দরপত্র আহ্বান করেছে। দরপত্র বিবরণীতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আওতাও তুলে ধরা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নারায়ণগঞ্জের প্রস্তাবিত টার্মিনালের স্থান পরিদর্শন করে একাধিক প্রতিবেদন জমা দেবে। এসব প্রতিবেদনে স্থানীয় বিভিন্ন শিল্পপণ্যের উৎপাদন, বর্তমান প্রবৃদ্ধি, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে হবে।

পাশাপাশি প্রকল্পের শক্তি, সম্ভাবনা, দুর্বলতা ও ঝুঁকি বিষয়েও বিশ্লে¬ষণ করতে হবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.