দুর্নীতি প্রতিরোধে সক্রিয় হই-এখনই...
প্রকাশিত হয়েছে ইয়েস-এর ৩য় সংখ্যা
আজ এই ব্লগে সকলের জন্য
১ম পর্ব প্রকাশ করা হলো-
অমিত তেজ তারুণ্য
এ্যাড. এনামুল হক চৌধুরী চাঁদ
ইয়েস (ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট)-এর শাব্দিক অর্থ যে যেভোবেই করুন না কেন ইয়েস সদস্যরাই সনাক-এর কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি বৈশিষ্ট্যময় ভূমিকা পালন করে আসছে তা বোধ করি কারোরই অস্বীকার করার জো নেই।
দুর্নীতির সংজ্ঞা, দুর্নীতির প্রকার, রূপ, দুর্নীতির নানাবিধ কুটকৌশল-এর প্রয়োগ ইত্যাদি নিয়ে বিজ্ঞজনেরা নানা প্রকার নিজ নিজ ব্যাখ্যা, মতামত দিতে পারেন এবং এরূপ মতামত ও ব্যাখায় ভিন্নমত থাকলেও সর্বেেত্র একটি ঐক্যমত্য থাকছেই আর তা হচ্ছে দুর্নীতি আমাদের সকল প্রকার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। সে উন্নয়ন সামাজিক, রাজনৈতিক, আর্থিক কিংবা মানবিক যাই হোক না কেন।
ইয়েস সদস্যরা তাদের সকল কর্মকান্ড দ্বারা এই দুর্নীতিবিরোধী একটি সামাজিক আন্দোলনে নিজেদেরকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত ভাবে নিয়োজিত করেছে। সেকারণেই তাদের নাটকে আমজনতার চোখে আঙ্গুল দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সজাগ হওয়ার আহবান থাকে।
থাকে তথ্য উপাত্ত সরবারহের মাধ্যমে জনগণকে অধিকার ও দায়িত্ববোধে উজ্জীবিত করার নিরলস প্রচেষ্ঠা। ইয়েস গ্রুপের সকল কাজই দুর্নীতিবিরোধী কর্মকান্ডের পথপরিক্রমায় পরিচালিত হয়ে আসছে। দেশে অনেক যুব গোষ্ঠী আছে যারা সমাজ, দেশ, জাতিকে অগ্রসর করার জন্য নিজ নিজ ত্রে থেকে নানা প্রক্রিয়ায় কাজ করে থাকে। আর তাই তারা নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করে না কোনো টেন্ডারবাজীর সঙ্গে, নিজেদেরকে দূরে রাখে বিরাজমান অপসংস্কৃতি থেকে। ইয়েসরা সামাজিক অবয়ের সঙ্গে নিজেদেরকে সামিল না করে পাঠ অভ্যাসে নিজেদেরকে গড়ে তোলে সাপ্তাহিক পাঠচক্রে।
বর্তমান সময়কার বিরাজমান অবস্থার বিপরীতে ইয়েসদের এই সুদৃঢ় অবস্থান নিঃসন্দেহে আশার আলো। যা যেকোনো নিরাশ মানুষকেও আশান্বিত করে তোলার মত আলোকছটা।
তারুণ্যের উদ্দীপনায় উদ্ভাসিত, নি:স্বার্থ চিন্তার ধারক, চেতনাদ্বীপ্ত যুব ও যুবার এই মেলবন্ধ আত্মপ্রত্যয়ে বলিষ্ট এই নবীনেরা আগামী দিনের দিশারী। জনকল্যাণে নিজেদের গড়ে তুলুক অভিভাবক সমাজের এটাই প্রত্যাশা।
সংখ্যায় যাই হোক গুনগত দিক থেকে ইয়েস সদস্যরা যেমন গড়ে তুলছে নিজেদেরকে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে উঠুক সেটাই জাতির প্রত্যাশা।
অমিতাভ তারুণ্যই পারে সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে। তরুণের নিকট জাতির এ দাবি জন্ম-জন্মান্তরে।
সংস্কৃতি: নিয়ন্তা মানব সমাজ
মিশতে চাই মিশে যেতে চাই না
ইউসুফ আলমগীর
গুহা জীবন ছেড়ে মানুষ শ্রম আর শিল্পের পথে এগিয়ে যায়। এ সময় সমতা থাকে। থাকে আত্মরক্ষার সমষ্টিক লড়াই।
মানুষ তার বাঁচার প্রশ্নে, নিজের প্রয়োজনে গড়ে তোলে সমাজ ও সামাজিক ভিত।
সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ধারায় প্রকৃতি ও আবহাওয়ার মধ্যে মানুষ তৈরি করে আপন বলয়। টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রবহমান ক্রিয়া এক সময় হয়ে যায় তার আপন সংস্কৃতি, গৌরবময় ঐতিহ্য। অত:পর সেই গৌরবময় সংস্কৃতি ও এতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে মানুষকে যুথবদ্ধ থাকতে হয়, লড়াই করতে হয়। সংগ্রাম করতে হয়।
সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষ বাস করছে গোষ্ঠীবদ্ধ-দলবদ্ধ হয়ে। প্রথম থেকেই প্রায় প্রত্যেকটি গোষ্টী বা দলের ছিল ভিন্ন ভিন্ন টাবু, টোটেম ও সংস্কৃতি। কিন্তু একে অপরের সাথে সখ্যতা-ঘনিষ্টতা-আন্ত:যোগাযোগ তাদের সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করেছে। সেই ধারবাহিকতার পথ ধরে শেকড়স্পর্শি সংস্কৃতি- বাঙলার। বাঙালির।
বাংলাদেশের।
সংস্কৃতি গড়ে ওঠে ধীর গতিতে এবং হঠাৎ করে কিংবা চোখের পলকে সংস্কৃতি পরিবর্তনও হয় না। কিন্তু সংস্কৃতি আদানপ্রদান হয়। আর এই বিনিময়ের প্রশ্নটি এলে, চলে আসে যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা। যোগাযোগ ব্যবস্থা যত দ্রুত পরিবর্তন হয় তার সাথে পাল্লা দিয়ে
সংস্কৃতিও এগিয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, নৌবন্দর কিংবা স্থল বন্দরে বিদেশ থেকে শুধু মানুষ আর পণ্যেই আসে না। তাদের সাথে তারা নিয়ে আসেন সেইসব দেশের সংস্কৃতিও। যে অঞ্চলে, যে সমাজে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই সেখানের সংস্কৃতি বিকশিত হয় না, বিকলঙ্গ হয়ে পড়ে। আর এই সুযোগে সেখানে ভর করে কুসংস্কার নামক জীবাণু।
২.
মানুষকে আমরা সামাজিক জীব বলে থাকি।
কিন্তু সমাজ মানবজাতির একচাটিয়া সম্পত্তি নয়। কেননা অন্যান্য জীবের মধ্যেও সামাজিকতা দৃষ্ট হয়। সমাজ জীবনের প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে, সহাবস্থান-সহমর্মিতা ইত্যাদি। এসমস্ত গুণ পশু, পাখি, মৎস্য ইত্যাদি কোনো কোনো ইতর জীবের মধ্যেও দেখা যায়। এবং কোনো কোনো কীট পতঙ্গের মধ্যেও বিরল নয়।
পিঁপড়া ও মৌমাছিও সমাজবদ্ধ জীবনযাপন করে থাকে। এমনকি অনেক জাতের জীবাণ্ওু সমাজবদ্ধ জীবনযাপন করে।
এ দৃষ্টিকোন থেকে বুঝতে হবে মানুষ ছাড়াও অন্য জীবের মধ্যেও সামাজিকতা আছে। কিন্তু ওদের সংস্কৃতি নেই। ওদের সামাজিকতা স্থবির, ওদের সামাজিকতা একই ধারায় প্রবাহিত হয়ে আসছে আদিমকাল থেকে আজ পর্যন্ত।
আসল পার্থক্য হলো, মানুষ সংস্কৃতিবান, ইতরপ্রাণী তা নয়।
৩.
সংস্কৃতি বিকশিত হয়-প্রকাশিত হয় শিল্প-সাহিত্য-সাংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন ধারায়। মানুষের আর্থ সামাজিক জীবনবোধ কিংবা ব্যক্তিক টানাপোড়েন ফুটে ওঠে গানে-নাটকে-কবিতায়। ব্যক্তিক-সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা সবসময় মানুষকে প্রভাবিত করে। সেই চর্যাপদ থেকে শুরু করে আজ একটু আগে সবার অজান্তে যে তরুণ তার প্রথম কবিতাটি লিখলো সেও একই অস্থিরতায় প্রভাবিত।
সংকট, নিরাপত্তাহীনতা, অভাব, নৈরাজ্য যত বিস্তার হয়েছে অস্থিরতাও তত ব্যপ্ত হয়েছে। দৃঢ় হয়েছে। অস্থিরতার ভেতর দিয়ে সংগঠিত-সংঘটিত বাঙালির বিভিন্ন সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে অসংখ্য বাংলা কবিতায়, গানে, নাটকে।
৪.
যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটেছে তেমনি মুক্তসংস্কৃতির চর্চার আগ্রাসন গ্রাস করেছে আমাদের লোকজ সংস্কৃতিকে। তথাপি যা কিছু ভালো, যা কিছু সুন্দর আমরা তা গ্রহণ করতে চাই।
কিন্তু কখনোই আমাদের সংস্কৃতিকে বিলীন করে নয়। তাকে আমরা দেখতে পারি অতিথি সংস্কৃতি হিসেবে। কেননা আমরা মিশতে চাই মিশে যেতে চাই না।
হাসনা বানু হাসু
নতুন শতক
বিংশ শতাব্দির শোক দুঃখ
কষ্ট বেদনা আর প্রবঞ্চনা
সব কথা ভুলে গিয়ে;
নতুন শতকের প্রত্যাশাকে
সামনে রেখে ভুলে যাই
অতিতের সমস্ত ঘটনা,
ভুলে যাই যত গ্লানির কথা।
মেঘের আড়ালে যেমন হারিয়ে যায়
সূর্যের উজ্জ্বল আলো।
তেমনি হারিয়ে গেলো একটি শতক,
যে শতকে ভাই হারিয়েছে তার ভাইকে
মা হারিয়ে তার সন্তানকে
আর বোন হারিয়েছে তার সম্ভ্রম।
সকালের সূর্যের নিষ্পাপ আলোয়
আলোকিত করে যেমন চারিদিক,
তেমনি আলোকিত করুক
আরও একটি নতুন শতক
যে শতকে কাঁদতে হবেনা
হারাতে হবেনা কিছুই
যেখানে ঘুণেধরা স্মৃতির পাতা থেকে
বিদায় নিয়ে যাবে
অতীতের সকল প্রতাপ।
নাজমুল হাসান বাবু
অপেক্ষা
যখন আমি রাস্তায় নেমে পড়ি
পরিচয়ের পোষাক পড়ে নগর সাজাতে ব্যস্ত তখন
পৌরসভার লোকেরা।
ভীড়ের মাঝে মিউ মিউ করা বিড়ালগুলো
আধার রাতে চোখ রাঙায়
আমি বিচলিত হই, বিরক্ত হইনা
ওরা তো পরিবেশেরই; নয়তো
নিজেদের মানুষ বলে দাবী করব কিভাবে?
তাছাড়া এ আওয়াজ সুধিজনের কানেও পৌছবে নিশ্চয়!
সেদিনই হয়তো শুরু হবে বিড়াল মারার বিশাল কর্মযজ্ঞ।
ফিরে আসবে শান্তি, উঠবে স্বস্তির ঢেকুর
এরপর অলস তন্দ্রায় কেটে যাবে মুহূর্ত,
বেরিয়ে আসবে লুকিয়ে পড়া বিড়ালগুলো
শিশুর হাসির সাথে বড় তুচ্ছ মনে হবে তাদের কান্না
এক সময় মিলিয়ে গেলেই জেগে উঠবে বিস্ময়
ফাতেমা পারভীন
দুর্নীতি থামাবো
কে আছো উদ্দামী ছাত্র
যে নও দুর্নীতির ভক্ত
দুহাত উচিয়ে জানাও
দুর্নীতি করবনা, দুর্নীতি রুখবো
আমরা নওজয়ান আমরা বীর
আমরা ভাঙ্গবো দুর্নীতির উচ্চ শীর
আমাদের প্রতিবাদে কেঁপে উঠবে
দুর্নীতিবাজদের গোপন ভীত
মাহমুদ আল হাকিমুজ্জামান
অভিশপ্ত আলো
কুরুক্ষেত্র সমাজের চিত্রে
অঙ্কন ভুলে গেছে মানুষেরা
রক্তের কালিতে অঙ্কিত হচ্ছে
প্রতিদিন নতুন কোনো মানচিত্র।
অন্ধকার আর আলোর মেলায়
খোলস পাল্টায় আমলা নামের জোনাকি
জোছনার আলোয় পৃথিবী হাসে
কথিত জোনাকি পোকার এ আলোয়
নতুন ন্যাক্কার খবর তৈরি হয়।
অন্ধকার, আর জোনাকির আলো চায় না
অন্ধকার, জোনাকির বিভৎস রূপ দেখেছে
অন্ধকার অন্ধকারই থাকতে চায়
জোনাকির আলোর নামের যে চিত্র
অন্তত তা থেকে মুক্তির জন্য
রিয়াদুল ইসলাম
নীরবতা
এ রজনী আপন হৃদয় আলয়
কল কষ্ঠতার বারী ধার
খুঁজে ফিরে বেয়েছে নিছক
বেদনার পাথার।
শুকনো পাতার সুরান্নীত ধ্বনী
শর্বরী ঝিঝানী হাক,
শীর শীর কম্পিত পবন
স্মৃতিতার্থ হৃদয় সমর।
ক্ষতবিক্ষত হৃদয়
আজিকার বাণী
ললনা ওরে, এযে সবেই তোমারী
ছলনার বৈশ্বানর।
বিভারী এ লোচন
চেয়েছে সুধাকর,
এই আজ, এই নেই
অনিকেত স্বপ্ন বিজনে শুধুই নীরব প্রহর।
সোহাগ রহমান
সহজ
প্রচন্ড শব্দে লক হয়ে যাওয়া জীবন
ওপার হতে ওপারে ভেসে আসে
অতীত অনিবার্য সহজ।
পরসমাচারে বানীচিরন্তনী
রায় পায় ধর্ম আর সমাজ
সংস্কারক সংসারে।
অপেক্ষা করুন আরও কিছু পড়ার জন্য
৩য় সংখ্যা সম্পাদনা করেছেন- আকরাম হোসেন ও জিন্টু হিমালয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।