আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গেছো মিয়ার মুরগি ভাজা

শিক্ষিত মূর্খ। আকিবুকি। গননা করবার শখ আর জাগেনা আগের মত। মাথাটাকে না খাটাতে খাটাতে তেলের ড্রাম হয়ে যাচ্ছে।

আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের জনপ্রিয় মুখ সামিউল।

সামিউল আযম। বেশ মজাদার, স্মার্ট, ট্যালেন্টেড পাবলিক। মোট কথা সব কাজই পারে। আড্ডা জমানোর মূল হোতা। আদর করে আমরা ওকে গেছো বলে ডাকি।

গেছো নামের উৎপত্তি কোথা থেকে কেউ বোধহয় জানেনা আমাদের গ্রুপটাকে পেটুক গ্রুপ বলা যেতে পারে। চিকন মোটা সবাই ভোজন বিলাসি। ভোজন বিলাসদের কো-অরডিনাটর সজিব, কাঙ্খিত অনাকাঙ্খিত(পকেট ফাঁকা) সময় পেটপূর্তির প্রস্তাব উত্থাপন করে। প্রথমে কম বেশি সবাই গাইগুই করি পরে পেটের মিউটিনির কাছে মন আবধারিত ভাবে পরাজিত হয়। ২৮ ই রমযান।

দুদিন আগে সজিব অনাকাঙ্খিত ভাবে পুরান ঢাকার স্টার এ ইফতারি করার প্রস্তাব উত্থাপন করল। প্রথাগত ভাবে আমরা কিছু গাইগুই করে রাজি হয়ে গেলাম। ইফাতারির ১ ঘন্টা আগেই সবাই পৌছে গেলাম। চলতে ফিরতে লেট করা তারেক একটু লেট করল। চলতে ফিরতে লেট না করলেও তারেকের সাথে আসার কারণে মিথুনেরও একটু লেট হয়ে গেল।

ইফতারি কিনলাম। খাসির গোস্ত ভুনা, মুরগি ভুনা, নারগিসি কোপ্তা, চিকেন ফ্রাই, পরোটা, লাচ্ছি ইত্যাদি ইত্যাদি। সব খেয়ে পেট ভার চিকেন খেতে মন চায় কিন্তু পেট চায় না। কিছুক্ষন আড্ডা মারলাম। সিগারেট বাহিনী ধোঁয়া ভক্ষণ করে আসল।

পেটুক বাহিনীর পেটে ইতমধ্যে চিকেন ফ্রাই ঢোকার মত জায়গা হয়ে গেছে। আহহহ, এখন মন চায় পেট ও চায়। সবাই আরেক গ্লাস লাচ্ছি আর্ডার দিলাম। লাচ্ছিতে চুমুক দেই সাথে দাঁত দিয়ে চিকেন ফ্রাই ছিঁড়ে, চিবিয়ে পেটে ঢুকাই। আসাধারন স্বাদ।

হঠাৎ করে সবাই খেয়াল করল গেছো না খেয়ে ড্যাব ড্যাব করে আমাদের দিকে তাকায় আছে। জিগেস করলাম, কিরে খাস না কেন? ও বলে যে খাবেনা, ছোট বোনের জন্য নিয়ে যাবে। এই পর্যন্ত বললে মানতাম, সাথে আরো যোগ করল ও নাকি সবসময়ই বোনের জন্য নিয়ে যায়। এই কথা বলে আমাদের তোপের মুখে পরল। আরে বেটা ৪ বছর আছস আমাদের সাথে, কোনদিনই তো দেখলাম না।

গেছো বিভিন্ন উদাহরণ দিতে লাগল কোন কোনদিন খাবার নিয়ে গেছে বোনের জন্য, উল্লেখ্য আমাদের কেউই উদাহরণের দিনগুলোয় ওর সাথে ছিলাম না। সবাই মিলে চিকেন ফ্রাই খাওয়ানোর জন্য জোরাজ়ুরি করলাম কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গেছোর ভগ্নিপ্রেম উছলিয়ে পড়ছিল বলে ওকে আর খাওয়ানোই গেলোনা। গেছো টিস্যু দিয়ে মোড়ায়, স্টার থেকে প্যাকেট জোগাড় করে চিকেন ফ্রাইটিকে প্যাকেট বন্দি করল। সবাই বেরিয়ে পরলাম। আমি, সজিব, তারেক আর মিথুনের গন্তব্যস্থল নিউমার্কেট আর সবাই যে যার বাড়ি।

আমি আর সজিব এক রিকশায়। দীর্ঘক্ষণ রিকশায় চড়ে নিউ মার্কেট পৌছালাম। সজিবের মোবাইলে গেছোর মিসড কল। কি কথা হল শুনি নাই। কথা শেষ করে সজিব বলে সামিউলের একটা ব্যাড নিউজ আছে।

ভয় পেয়ে গেলাম । জিজ্ঞাসা করলাম কি নিউজ? বলল গেছোর চিকেন ফ্রাই হারায় গেছে........ কেমনে কিভাবে হারাল ইত্যাদি বৃত্তান্ত আর জানা হয় নাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।