আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। মৌলবাদী তান্ডবে সন্ত্রস্ত এই দেশ আমার না! বলে হাহাকার করে ছিলাম রামু কান্ডের পর। রামু কান্ডের হোতা! কে? রামুতে সহিংস ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী ?
এবার রোহিঙ্গা জঙ্গীদের মাঠে নামিয়ে শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজার শহর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং আহত হয়েছে শতাধিক। আহতদের মধ্যে একজন এডিশনাল এসপিসহ ১৪ পুলিশ রয়েছে। আটক হয়েছে ১৩০ জন।
জুমার নামাজ শেষে জামায়াতী তাণ্ডবের পর শহর এলাকায় ১৪৪ ধারা বলবত করা হয়েছে।
সংঘর্ষ চলাকালে জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের ছোড়া ইট-পাটকেলে এডিশনাল এসপি বাবুল আকতারের মাথা ফেটে যায়। তিনিসহ ১৪ পুলিশকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, দুপুর পৌনে ২টার দিকে শহরের বাজারঘাটা মসজিদ থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা একটি মিছিল বের করে প্রধান সড়কের দিকে যেতে শুরু করে। এ সময় পুলিশও মিছিলকে অনুসরণ করতে থাকে।
এ সময় হাসেমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা অতর্কিতভাবে পুলিশের ওপর হামলে পড়ে। শুরু হয় সংঘর্ষ। দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় চলতে থাকে। এ সময় হাসেমিয়া আলিয়া মাদ্রাসার গেট থেকে তারাবানিয়ারছড়া, খুরুশকুল রাস্তার মাথা ও বার্মিজ মার্কেট পর্যন্ত পুরো এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে।
বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়, জামায়াত-শিবিরের নেতৃত্বে অসংখ্য রোহিঙ্গা জঙ্গীদের সকাল থেকে বিচ্ছিন্নভাবে কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে জড়ো করা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ এবং তাদের গোপন আস্তানায়ও রোহিঙ্গাদের সমবেত করা হয়। জেলা জামায়াত কার্যালয়ের সম্মুখে খানেকাহ মসজিদ, রোমালিয়ারছড়া, হাসেমিয়া মাদ্রাসা মসজিদ, আলিরজাহাল ও এসএম পাড়া গোদারপাড়া মসজিদে অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে লোকজনের ব্যাপক সমাগম দেখে স্থানীয়দের মনে সন্ত্রন্ত মনোভাব সৃষ্টি হয়। মুসল্লিদের পক্ষ থেকে বিষয়টি দ্রুত পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়।
জুমার নামাজ শেষে রোমালিয়ারছড়া ও তারাবানিয়ার ছড়া মসজিদ থেকে লোকজন বের হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডারবাহিনী ও রোহিঙ্গা জঙ্গীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশের ওপর। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
পুলিশও এর পাল্টা জবাব দেয়। বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ ঘটনা চলাকালে গুলিতে নিহত হয় ৪ জন। এ সময় পুলিশকে সহযোগিতা দেয়ার জন্য নামানো হয় র্যাব ও বিজিবি সদস্যদের।
জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা র্যাব-বিজিবি সদস্যদের ওপরও আক্রমণ চালায়। এ সময় বাধ্য হয়ে র্যাবের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়।
বেলা ৪টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় পুলিশী অভিযানে আটক হয় ১৩০ জন। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিজিবি ও র্যাব সদস্যদের ঘটনাস্থলে মোতায়েন রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার শহরে জামায়াত পরিচালিত আল ফুয়াদ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ ৩০ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের গেট বন্ধ রাখায় প্রশাসনের কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি।
আহত এডিশনাল এসপি বাবুল আকতার জানান, গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অভিযান এবং টহল জোরদার করা হলে জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। গোয়েন্দা সূত্র মতে, আল্লামা সাঈদী মুক্তি পরিষদ নামের একটি ব্যানারে এ তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবির। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে রামুতে বৌদ্ধ পল্লী ও পেগোডায় ধ্বংসলীলা সৃষ্টির কাজে জামায়াত-বিএনপি পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়েছিল। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ উদ্ঘাটিত হয়েছে বিভিন্ন তদন্তে।
চট্টগ্রামেও জামায়াত-শিবিরের ক্যাডার বাহিনী চরম বেকায়দায় রয়েছে।
পরিকল্পিত তাণ্ডব সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়ে এদের আর্মড ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা অনেকটা কচ্ছপের মতো মুখ লুকিয়ে রেখেছে। গত কয়েকদিন ধরে নগরীতে তাদের উল্লেখযোগ্য তৎপরতা নেই। বিভিন্ন আস্তানাতেও চিহ্নিত নেতাকর্মীদের দেখা যাচ্ছে না।
হঠাৎ করেই যেন তাদের গা ঢাকা দেয়ার ভাব। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের আশঙ্কা জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা কৌশল বদলে হিংসাত্মক কার্যক্রমের নীল নকশায় ব্যস্ত হতে পারে।
তবে তারাও বসে নেই। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফাঁদ পাতা হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী এ চক্রটির ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ রোধে।
পুলিশের ধারণা জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা মরণ কামড় দিতে চেষ্টা করবে। জামায়াত শিবির ক্যাডারদের কাছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র এবং গোলা বারুদ থাকতে পারে। প্রায় দশ বছর পর তারা ধীরে ধীরে এসব অস্ত্র রাজপথে ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে।
বিশেষ করে কাদের মোল্লার দ- হওয়ার আগে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা ছোট ছোট অস্ত্র ব্যবহার করেছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটে অস্ত্র চালান সহজ এবং দীর্ঘদিনের।
তাই এ সময়ের মধ্যে চক্রটি নাশকতার পরিকল্পনায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করতে পারে। পুলিশ বিভিন্ন স্থানে জামায়াত-শিবিরের এ ধরনের মজুদ সম্পর্কে গোপন অভিযানও চালাচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।