আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ব্যবহারে বংশের পরিচয়-বিশ্ব বংশ দিবস উপলক্ষে সবিশেষ বা সব শেষ বাঁশ



একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা যাক। "কোন উদ্ভিদে ফল হয় না? অতএব তা খাওয়া কোন কাজের কথা নয়; কিন্তু তবুও আমরা তা প্রায়ই নিজে খাই এবং অপরকেও দিতে দ্বিধা করি না। বলুন তো কোন সে উদ্ভিদ?" কথায় বলে, " বৃক্ষের পরিচয় তার ফলে"। আর এর কোন ফল না থাকায় এর পরিচয় তার 'ব্যবহারে'। হ্যাঁ, এতি হল বাঁশ।

সাধুজনে তাকে আদর করে ডাকে 'বংশ'। এই বাঁশেরই ডিসেকশান করে অত্র পাতার যত্রতত্র ফাঁস করব বলেই আজ কলম ধরেছি। যাহাই বাঁশ, তাহাই ঘাস বিজ্ঞানমনস্ক হবার ছলে অন্যমনস্ক হবার ধান্ধা আমার নেই। তবে ক্ষুদ্র ঘাসের বংশধর কি করে এহেন বিপুল্বপুর মালিক হল তার কারণ পিক করা আমার খুদে মস্তিষ্কের কম্ম নয়। তবে এটি বেশ বুঝা যাচ্ছে বাঁশ ঘাসের দোসর এবং আজকের ডাইনোসর।

বাঁশ সাহিত্য কতশত ফুল-ফলের গাছকে রবি-নজরুলেরা জাতে তুলেছেন কিন্তু বাঁশের দুঃখ তারা বুঝেননি। কিন্তু একজন ঠিকই বুঝেছিলেন। সাধে কি তাঁর নাম 'দুঃখবাদের কবি'! আলবাত তিনি যতীন্দ্রমোহন বাগচী। বিখ্যাত 'কাজলা দিদি' কবিতার প্রথম পংক্তিতাই তাইতো অপাংক্তেয় বাঁশকে ঠাঁই দিয়েছেন- " বাঁশবাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ঐ"। যদিও তাঁর বংশপ্রীতি সংশয় জাগায় তবুও তো যতুবাবু বংশের মান বাঁচিয়েছেন বতে।

প্রবাদপ্রতিম বাঁশ কবিতায় বাঁশের খাসদখল না থাকলেও বাংলা প্রবাদে তার জায়গা বেদখল হবার নয়। 'কাঁচা বাঁশে ঘুণধরা' কোন অকালপক্ক যদি তাকে সে জায়গা হতে হটাতে চায় তবে তার জেনে রাখা ভাল যে তাকে 'বাঁশ দিয়ে' নাশ করার উপায় বাঁশের হাতেই বাস করে। কারণ সে জানে 'কাঁচায় না নোয়ালে বাঁশ পাকলে করে ঠাস ঠাস'। তবুও ত গুরুমারা বিদ্যে গিলে 'বাঁশের চেয়ে কঞ্চি দড়' হয়েই যায় তাহলে তার হাঁসফাঁস করে লাশ হওয়া ছাড়া গতি নেই। তবু রক্ষা 'বাঁশবনে যে ডোম কানা' নইলে কবেই যে বাঁশের বংশ ধ্বংস হয়ে যেত- আল্লাহ মালুম।

বাঁশ দেওয়া কথা, লাগে বড় ব্যথা সেই কবে রগুড়ে ভানু তাবত বাঙ্গালিকে বাঁশ দিয়ে গেছেন। সে ক্ষোভেই কি আমরা বাঙ্গালিরা একে অপরকে বাঁশ দিচ্ছি এবং নিচ্ছি। যেন 'এ খেলা চলবে নিরন্তর.... '। এটা যে কেবল কথার কথা, তাই বাঁচোয়া। নইলে অনেকেই যেভাবে আছোলা বাঁশ দিচ্ছে বাস্তবিকই যদি তা সম্ভব হত তাহলে বাঁশাবাঁশির চোটে যে কী রেষারেষিই না বেঁধে যেত, ভাবতেই হাসাহাসি করতে মনে চায়।

যতক্ষণ বাঁশ, ততক্ষণ আশ চমকাবেন না। প্রবচনটিতে শ্বাসের স্থলে বাঁশ মোটেও আনফিট নয় বরং সুপারহিট বৈকি। কেননা বাঁশ একতা গাছ আর গাছের থেকেই মেলে অক্সিজেন- শ্বাসের আসল মসলা। এমন শাঁসালো লজিকের সাথে রয়েছে এন্তার বাঁশালো ম্যাজিক। শুধু এটুকুই বলব, একবিংশ শতাব্দী হতে জাচ্ছে 'এক বংশ শতাব্দী' কারণ... আজ আমরা বাঁশের মর্ম বুঝে কর্ম করছি; পালন করছি "বিশ্ব বংশ দিবস"।

বুঝেশুনে বাঁশের ব্যবহার করুন, কারণ ব্যবহারেই বংশের পরিচয়।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.