আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহিমান্বিত লাইলাতুল কদর



পবিত্র মাহে রমযানের ২৬তম দিবাবসানের মধ্য দিয়ে বিশ্বমুসলিমের জীবনে অশেষ রহমত ও কল্যাণের বারতা নিয়ে আসে লাইলাতুল কদর। আগামী বৃহস্পিতিবার মাগরিবের পর হতে রাতভর ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে বিশ্বাসীগণ পালন করবেন লাইলাতুল কদর। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন, কদরের রাত সহস্র মাস হতে উত্তম। এ রাতে ফেরেশতাগণ এবং জিবরাইল (আ.) ফজর পর্যন্ত রহমত প্রার্থনায় নিরত থাকেন। বর্ষিত হয় আল্লাহতায়ালার অপরিমেয় করুণাধারা।

পবিত্র এই রাতে আল্লাহতায়ালা প্রার্থনাকারী বান্দার জীবনের সমস্ত গুনাহ, পাপরাশি ক্ষমা করে দেন। তিনি দয়াময়, তিনি পরম ক্ষমাশীল। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চিরকল্যাণময় পালনকর্তার ক্ষমালাভের চাইতে মানুষের জন্য বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না। যে আল্লাহতায়ালার ক্ষমা পাবে, নিশ্চিতভাবেই সে পাবে ইহকাল ও পরকালের অফুরন্ত সুখ, শান্তি ও কল্যাণ। মহিমান্বিত এই রাত্রির গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে এমনই মহানবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.)'র সুস্পষ্ট ঘোষণা।

সালাম বা শান্তি মহান আল্লাহর নিকট হতেই আসে। তাঁর নিকট বান্দার পরিপূর্ণ সমর্পণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে পরম সুখ ও সাফল্য। পবিত্র কুরআনে লাইলাতুল কদরের মহিমার কথা বর্ণিত হলেও বছরের ঠিক কোন রাত লাইলাতুল কদরের রাত সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয় নি। পরিষ্কারভাবে মহিমান্বিত রাত্রিটি চিহ্নিত না করে দেবার পেছনেও নিশ্চয়ই নিহিত আছে মহান দয়াময়, আল্লাহতায়ালার কল্যাণপ্রদ কোনো না কোনো অভিপ্রায়। নবী করীম (সাঃ) বিশ রোজার পর প্রতিটি বিজোড় রাত্রে লাইলাতুল কদর অন্বেষণের তাগিদ দিয়েছেন।

তবে বেশিরভাগ আলেম ও ইসলামি চিন্তাবিদগণ এই অভিমত দেন যে, ২৭ রমযান রাতে শবেকদর হওয়ার সর্বাধিক সম্ভাবনা। সেই হিসাবে এই রাতেই বিশ্বমুসলিম নফল নামায, যিকির, কুরআন তেলাওয়াত, দুরূদ পাঠ এবং তাসবিহ তাহলিলের মাধ্যমে লাইলাতুল কদর পালন করে থাকেন। অনেকে মাহে রমযানের বিশেষ করে শেষ দশকের প্রতিটি বিজোড় রাত্রে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে শবেকদর তালাশ করেন। সন্দেহ নেই যে, লাইলাতুল কদর এক মহিমান্বিত রাত। আল্লাহতায়ালা কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন "ইন্না আনযালনাহু ফি লাইলাতিল কাদর্, অর্থাৎ নিশ্চয়ই ইহা (আল কুরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাত্রে।

দয়াময় আল্লাহর অনুগ্রহ এবং বরকতে পরিপূর্ণ এই রাতের ফযিলত লাভের জন্য আমাদেরও সেইভাবে কায়মনোবাক্যে তাঁর নিকট সমর্পিত হতে হবে। এই ক্ষেত্রে কৃত্রিমতা কিংবা লোক দেখানো ইবাদত-বন্দেগীর সুযোগ নেই। যারা যুলুম করে, যারা ইয়াতীম, মিসকিনদের গলা ধাক্কা দেয়, যারা লোক দেখানো ইবাদত করে এবং প্রতিবেশীর সামান্য প্রয়োজনেও যারা পাশে দাঁড়ায় না তাদের আল্লাহতায়ালা কুরআনুল করীমে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ক করে দিয়েছেন। সংযম সাধনার মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির এক বিরাট সুযোগ হিসেবে আমাদের জীবনে আসে মাহে রমযান। এটা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ।

সেই অনুগ্রহের সদ্ব্যবহার করে আত্মশুদ্ধির সাধনায় রত থেকে লাইলাতুল কদরের মধ্যে নিহিত কল্যাণ ও বরকত অন্বেষণ করা প্রতিটি মুসলমানের অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য। দয়াময় আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে ক্ষমা করুন। পরম ক্ষমায় তিনি আমাদের পুঞ্জীভূত পাপ মোচন করে দিন। প্রত্যেকের জীবন সুন্দর হউক, ভরে উঠুক শান্তি ও সাফল্যে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.