সত্য বল সুপথে চল, ওরে আমার মন ...
কান্না। কাঁদা
মানুষ বা পশু-পাখি কেন কাঁদে? এর উত্তরে নানা মত থাকলেও_সবাই নিশ্চিয়ই একটি
মতে আমার সাথে একমত পোষণ করবেন, তা হলো_ব্যাথা থেকে কান্নার উৎপত্তি।
ব্যাথা। ব্যাথার আবার নানা ধরন আছে। শারীরিক।
মানসিক। আধ্যাত্মিক। ভোগ-লোভগত। চাওয়া-পাওয়া গত। আরো অনেক বিষয় হতে পারে_ ব্যাথার মূল কারণ।
যা-ই-হোক, এ বিষয়ে আর কথা বাড়াচ্ছি না।
সেদিন এক ব্যাতিক্রমধর্মী কান্না কাঁদতে দেখেছিলাম_আমার স্থুল চেতনার দৃষ্টি দিয়ে। সে এক অদ্ভূত কান্না। অনুভব-উপলব্দি করতে করতে একটু আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম। আরো একটু বেশী আবেগী হওয়া উচিত ছিল।
হই নি। মেট্রোপলিটন মন আর কর্পোরেট চেতনায় গড়া পাষাণ মন কতটুকই-বা গলবে?
সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে নিজেকে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিলাম। জয় হোক বাবা পরিবেশের।
মামা, একটা চা। কিছুক্ষণ পর-----এই রুবেল, এই চা-টা ওনাকে দে।
খুব ছোট্ট একটি শিশু তাড়াহুড়া করে দোকানদার মামার কাছ থেকে চা-নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি ৭/৮ ফিট দূরে বসা। শিশুটির চোখে-মুখে ভয়, আতঙ্ক ও কষ্টের স্পস্ট ছাঁপ। যা দেখে আমি নিজেই আবেগতাড়িত হয়েছিলাম।
কি বেমানান পরিবেশে ও শুধু বেঁচে থাকার জন্য কত কস্ট করছে? সিগারেটের ধোঁয়া খেয়ে খেয়ে বার বার কাশি দিচ্ছে।
দোকানদার একসাথে ৩/৪ টা কাজের অর্ডার দিচ্ছে। আর ও সে কাজ করছে। নির্ভয়ে নয়, আতংক-ভয়ের মাঝে। তার উপর আবার চা-সিগারেট খাওয়া আসক্তদের জারি_এই এত সময় লাগে, তারাতারি দে। এতেও ও ভয় পায়।
সংকুচিত হয়ে যায়। তবুও কিছু করার নেই ওর। ওকে এই মানবতানামধারী সভ্য সমাজে-পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হবে।
ওই দোকানে কত বামপন্থী, মধ্যপন্থী, ডানপন্থী, উগ্রপন্থী, ধর্মপন্থীসহ সকলপন্থী মানুষের ওঠা-বসা। এর মধ্যে কেউ নেই_ওকে একটু আদর-স্নেহ করার।
একটু ভালোবাসা দেওয়ার। ওর ওকে জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার কেউ নেই। আমিও না। আমরা সবাই ব্যস্ত নিজেকে নিয়ে, নিজের পরিবার-পরিজন নিয়ে। ইহার নাম মানবতা-মনুষ্যত্ব_নিজের কপালে নিজে থু-থু মারি।
কারণ এই মানবতার পোশাক আমার শরীরে। তাই----- বেঁচে থাকলে, ওকে এই সমাজ কি বানাবে? ----মনে করি এ প্রসঙ্গে কিছু বলার য়ার প্রয়োজন নেই।
রুবেল। ৫ বছরে একটি ছেলে। শ্যমলা।
সিমসাম। তবে ওর মুখটা দারুণ মায়াবী। মিষ্টিও বটে। আর এসব দেখতে পেরেছিলাম ঠিক তখন, ওকে আদর করে যখন আমার পাশে বসিয়ে কথা বলছিলাম।
গল্পকারঃ শেখ রফিক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।