ফটোগ্রাফি, ভ্রমন, সিনেমা, ওয়ার্ডপ্রেস, এবং সব এলোমেলো ভাবনা
সম্ভবত ১৯৯৯ সালের ঘটনা। কলেজে পড়ি। মধুমিতা সিনেমা হলটা সম্বন্ধে তখন কোন ধারনা ছিল না। এমনিতে নামটা শোনা ছিল। একদিন মতিঝিল স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে দিয়ে যাচ্ছি।
হঠাৎ রাস্তার পূর্ব দিকে তাকিয়ে হলটা চোখে পড়ল। একটা ইংরেজি সিনেমা চলছে।
ঢাকায় তখন কোন হলে ইংরেজী সিনেমা মানে ছিল নীল ছবি। ছন্দ, পর্বত, মানষী এইগুলো তখন ছিল বন্ধুদের নিয়ে কলেজ পালিয়ে নিয়মিত দর্শনীয় স্থান। কিন্তু এই হলটার খবর আমরা জানতাম না।
তাই কৌতুহল হলো। তার উপর সিনেমার পোষ্টারটা দেখে নীল ছবির কোন আভাস পেলাম না। বরং একটার এ্যাডভেঞ্চার সিনেমার গন্ধ পেলাম। প্রচণ্ড কৌতুহল দমন করতে না পেরে ঢুকে পড়লাম দেখতে "রেইডার্স অফ দি লস্ট আর্ক"।
হলের ভেতর ঢুকেই অভিভূত হয়ে গেলাম।
এত বিশাল পর্দা! আরো অবাক হলাম যখন হলে শো-এর আগে মিউজিক শুরু হলো। কি সেই মিউজিক! মনে হচ্ছিল বাস্তবে যন্ত্রগুলো আমার চারদিকে বাজছে। বুঝলাম কাকে বলে ডিজিটাল সারাউন্ড সাউণ্ড। সিনেমাটা যখন শুরু হলো সত্যি সত্যিই আমি তখন অভিভূত। মনে হচ্ছিল গায়ে কাঁপন ধরানো এ্যাডভেঞ্চারাস কাহিনীটার মাধখানে আমি দাঁড়িয়ে আছি।
ঘটনাগুলো সব আমার চারপাশে ঘটছে। জীবনে প্রথম কোন সিনেমা দেখে মনে হয়েছিল, টিকেটের পয়সার চেয়ে শত গুণ উসুল হয়ে গেছে।
এর পর থেকে আমি মধুমিতার নিয়মিত দর্শক। পরের সপ্তাহে আবার চলে গেলাম নতুন কোন ছবি দেখার আশায়। কিন্তু গিয়ে দেখি আগেরটাই চলছে।
আবারো ঢুকে পড়লাম দ্বিতীয় বারের মতো দেখতে রেইডার্স অফ দি লস্ট আর্ক। এতই ভালো লেগেছিল ছবিটি, কোন ভাবেই ফিরে যেতে পারছিলাম না হলের সামনে এসে।
সিনেমার শুরুতে দেখা যায়, বিক্ষাত প্রত্নতত্ববিদ প্রফেসর জোন্স গেছেন দক্ষিন আমেরিকার গহীন এক জঙ্গলে একটি সোনার দেব-মূর্তি উদ্ধার করতে। একটার পর একটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেটা উদ্ধার করে নিয়ে এসে দেখে বাইরে অপেক্ষা করছে জার্মান প্রতিপক্ষ ব্যালাক, যে তার কাছ থেকে মুর্তিটি নিয়ে নেয় এবং পেছনে লেলিয়ে দেয় জংলী ইণ্ডিয়ানদের। কোনমতে দৌড়ে অপেক্ষমান প্লেনে উঠে পালিয়ে বেঁচে আসে আমেরিকায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে দেখে তার জন্য অপেক্ষা করছে আমেরিকান গোয়েন্দারা। তারা জানায়, জার্মানরা মিশরে একটি প্রত্নতাত্বিক সাইট খনন করছে। জায়গার নাম শুনেই জোন্স বুঝতে পারে সেখানে পাওয়া যাওয়ার কথা একটি মহামূল্য প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন "লস্ট আর্ক" যাতে আছে বিরাট সুপারন্যাচারাল ক্ষমতা, যা কোনমতেই জার্মানদের হাতে পড়তে দেয়া যাবে না। সুতরাং জোন্স বেরিয়ে পড়ে নাৎসিদের টেক্কা দিয়ে আর্কটি উদ্ধার করার আরেকটি শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে, যা তাকে নিয়ে যায় আমেরিকা থেকে নেপাল হয়ে মিশরে।
১৯৮১ সালে নির্মিত অসাধারন এই ছবিটির প্রেক্ষাপট ১৯৩৮ সাল যখন হিটলার ক্ষমতায়।
পরিচালনা করেছেন বিক্ষাত পরিচালক স্টিফেন স্পেলবার্গ, কাহিনী লিখেছেন জর্জ লুকাস, এবং ডক্টর জোন্স হিসেবে অভিনয় করেছেন আমার অসম্ভব প্রিয় হ্যারিসন ফোর্ড।
ছবিটি অনলাইনে দেখা যাবে এখানে।
---------------------------------------------------------------------------------
বাংলা সিনেমা আর্কাইভ - দুই বাংলার পুরনো সাদা-কালো সব বাংলা সিনেমা, গান, ও রিভিউ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।