সাহিত্যে প্রবন্ধ , নিবন্ধ ও সম সাময়িক কলামের একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। যারা কলাম লিখেন, তারা তাদের ভাবনার তুলনামূলক আলোচনা
তুলে ধরেন সেইসব লেখায় । বলেন সামাজিক অসংগতির কথা । কলামগুলোতে সাধরণত রাজনৈতিক ,সামাজিক ,পারপার্শ্বিক বিষয়াদির
সুষ্পষ্ট চিত্রণ থাকে।
বিলাতে যারা এই ধারার লেখাকে প্রাণবন্ত করে রেখেছেন, আব্দুল গাফফার চৌধুরী তাদের অন্যতম।
এ ছাড়াও সিরাজুর রহমান, আব্দুল মতিন, আমিনুল হক বাদশা ,ফরীদ আহমদ রেজা, মাসুদা ভাট্টি, ফারুক যোশী, রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী, রেণু লুৎফা , শামীম আজাদ, সৈয়দ নাহাশ পাশা, ইসহাক কাজল, নবাব উদ্দিন, নজরুল ইসলাম বাসন, মোনায়েম আহমদ মায়েনীন, প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
স্মরণ করতে চাই ,১৯৮৮ - ১৯৯৪ সালে নজরুল ইসলাম বাসন এর
'' সালাম লন্ডন'' কলামটি ছিল অত্যন্ত জনপ্রিয় কলাম। একই সময়ে
মোনায়েম আহমদ মায়েনীন এর '' সুরমা বহিয়া যায় '' কলাম টিও ছিল
খুব প্রশংসিত। দুটি লেখাই ধারাবাহিকভাবে '' সুরমা'' য় ছাপা হতো।
১৯৯০ - ২০০০ সালে 'সাপ্তাহিক জনমতে' নবাব উদ্দিন এর '' পজিটিভ
নেগেটিভ'' কলাম টিও জনপ্রিয়তা পায় ব্যাপকভাবে।
.............................................
লেখালেখি এক অনন্ত সাধনার নাম। এই ধারা থেকে সরে গেলেই ক্রমশ:
ভুলে যায় পাঠক। বিলাতে যারা লিখছেন, এরা সবাই লিখছেন প্রাণের
টানে। শিকড়ের অন্বেষণে। এর মাঝে কোনো কৃত্রিমতা নেই।
বিলাত অভিবাসী অনেক লেখকের বই ও বেরিয়েছে ,বেরুচ্ছে। এসব বইগুলো কালের দলিল হিসেবেই বিবেচিত হবে , নি:সন্দেহে। সাহিত্যের
মূল প্লাটফর্ম হলো ছোটকাগজ। এটা আমরা অনেকেই জানি, বিশ্বের অনেক ভাষার জাতীয় দৈনিকই সাহিত্য সাময়িকী করে না। তাহলে ঐসব
ভাষার সাহিত্যের পরিশুদ্ধ প্রকাশ কিভাবে ঘটে ? ঘটে , সাহিত্যপত্রের
মাধ্যমেই।
'' পোয়েট্রি'' , '' আমেরিকান পোয়েট্রি রিভিউ '' , ''পোয়েটস এন্ড রাইটার্স '' ইত্যাদি যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতিমান সাহিত্যপত্র। যা দখল করে রেখেছে বলা যায় , গোটা বিশ্বের সাহিত্যমোদীদের মন।
..............................................
বিলাতে এই সময়ে যে কজন লিটলম্যাগ সম্পাদক তাদের মনন দিয়ে
সাহিত্যসেবা করায় ব্রতী রয়েছেন তাদের মাঝে - ''শব্দপাঠ'' সম্পাদক
আবু মকসুদ , '' স্রোতচিহ্ন'' সম্পাদক সুমন সুপান্থ , '' লোকন'' সম্পাদক
ওয়ালী মাহমুদ, ''অর্কিড'' সম্পাদক সৈয়দ আফসার, ''ভূমিজ'' সম্পাদক
আহমদ ময়েজ, ''কবিতা'' সম্পাদক ফরীদ আহমদ রেজা, ''তৃতীয় ধারা''
সম্পাদক আকাশ ইসহাক প্রমুখের নাম প্রনিধানযোগ্য। এরা নিরলস প্রকাশনার মাধ্যমে সাহিত্যের মাঠতলা নির্মাণের যে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন- তা অবশ্যই ধন্যবাদের সাথে গৃহীত হবে প্রজন্মের কাছে।
এখানে একটি বিষয় খুব ঘনিষ্টভাবে লক্ষ্যনীয় , সাহিত্যের বীজ বুনে
যাওয়া আর গোষ্ঠীচর্চা করা ভিন্ন বিষয়।
যারা গোষ্ঠীসেবা করার জন্য
সাহিত্যকে মুখ্য হাতিয়ার করে মাঠে নামেন, তারা কোনোমতেই শুদ্ধ
সাহিত্যের পথ প্রদর্শক নন।
বরং সাহিত্যের নামে সমাজে কলহ , বিভক্তিকে ছড়িয়ে দেন কিংবা লালন করেন। আধুনিক কবিতার সংজ্ঞা কি ? এই প্রশ্নটি যখন ডব্লিউ
এস মারউইন কে করেছিলাম তখন তিনি সহাস্যে বলেছিলেন ,
''মাটি খুঁড়া '' ।
হাঁ, মাটি খুঁড়েন কৃষক। ফসল ফলান।
আমরা সেই শস্য ভোগ করি।
কিন্তু আমরা ক'জন মনে রাখি কৃষকের যাপিত জীবনের প্রতিকূলতার
কথা ?
( চলবে ............)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।