সূর্য আমার চিরশত্রু। আমি অন্ধকার ভালবাসি...
আজ থেকে শুরু হচ্ছে রমযান, (যদিও শুধু রোজা বলতেই ভাল লাগে আমার) সমগ্র মুসলিম জাতির জন্য এক গুরুত্বপুর্ন ব্যাপার। আমিও একজন মুসলিম, উত্তরাধিকার সুত্রে লাভ করেছি এ ধর্ম। একারনেই অন্যান্য অনেকের মত আমার রক্তেও মিশে আছে বাঙালী-মুসলিম সংস্কৃতি। যদিও মননে আমি নিজেকে মুসলমান বা অন্য কোন ধর্মের ধারক মনে করি না, তবুও, রোজা শব্দটি শুনলে বুকের মধ্যে কেমন করে ওঠে।
আজকে আমার রুমমেট বলল, আজকে তো রোজা (আমি রোজা শুরুর ঠিক দিনটি কবে জানতাম না, জানতাম রোজা আসছে)। আমি চমকে উঠলাম। আজ রোজা। মাথার ভিতর ছেলেবেলার অনেক স্মৃতি ভেসে উঠল। মা বলছে, রোজা থাকবি কে কে? আপামনি তো থাকবেই, মেঝ বোনটাও বড় হচ্ছে ওরও থাকা উচিৎ আর আমি ছোট, তাতে কি? আমিও থাকব।
একবার মনে আছে, বিকেল চারটা পর্যন্ত আমি রোযা ছিলাম। মা অনেক কষ্ট করে রোজা ভাঙাল। আমি গম্ভীর মুখে বলি, তোমার তো পাপ হবে। মা ঠিক কি বলেছিল তা আমার মনে নেই, তবে নিশ্চই তার ছোট্ট ছেলেটির থেকে পাপ-পুণ্য তার কাছে বড় মনে হয়নি।
রোজার সবচেয়ে আনন্দময় সময় ছিল, সেহরি।
সেহরি খেতে উঠলে মাঝে মাঝে কেউ আমাকে ডেকে তুলত। মাঝে মাঝে আমিই টের পেয়ে উঠে যেতাম। গায়ে বড় বড় চাদর জড়িয়ে মেঝেতে একসাথে সবাই বসে পড়তাম। চাদর না পেলে সরাসরি নেমে পড় লেপ নিয়ে। শীতের সাদা-কাল ভোররাত গুলি উদার আর প্রশান্ত (পুনশ্চ: রোজা যে কখনও গরমকালে হতে পারে, আমি ভাবতে পারিনি।
আজকাল দেখে আশ্চর্য লাগে)। নামাজ পড়ে আবার ঘুম। গাদাগাদি করে একই লেপের নিচে সবার শুয়ে পড়া। এখন কেমন যেন স্বপ্নের মত মনে হ্য়। আর ইফতার সম্পর্কে আমি কখনই তেমন একটা আবেগ বোধ করিনি, যেহেতু খাওয়া দাওয়ার প্রতি আমার কোন আগ্রহ নেই।
আমি এখন মা-বাবা-বোনদের কাছ থেকে অনেক দুরে থাকি, আর কখনও একসাথে থাকা হবে না আমাদের। দেখা হবে ঈদ-উৎসবে। এমন নয় যে তাদের খুব মিস করি আমি, তবুও পুরনো স্মৃতিগুলো মাঝে মাঝে নষ্ট করে দেয় কিছু আলোকিত সন্ধ্যা। আজকের বিকেলটা হারি্যে গেল। আরেকটু পরই সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
শুরু হবে রোজা, সেই দিনগুলি আর ফিরে আসবেনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।