বলতে পারেন কোন জিনিস মানুষকে পরিপূর্ণ প্রশান্তি দিতে পারে? কোন ব্যবহার মানুষের মনুষ্যত্বের সর্বোচ্চ প্রকাশ? সেটা হচ্ছে দান। বিশ্বাস না হলে আপনি আপনার কোন বড় দানের কথা স্মরণ করুন। দেখবেন দান করে আপনি যে আনন্দ পেয়েছিলেন অন্য কোন কাজেই আপনি তেমন আনন্দ পাননি । তবে দানের পূর্বশর্ত হচ্ছে দান হতে হবে নি:শর্ত। সেই দানে কোন দাবী থাকতে পারবে না।
তাহলেই আপনি সেই দান করে নিজে যেমন আনন্দিত হবেন, তেমনি অপরকেও আনন্দিত করতে পারবেন। দান করার তাৎক্ষণিক যে প্রাপ্তি তা হচ্ছে প্রশান্তি , যদি আপনার দান ঠিকভাবে হয়।
আমরা কিন্তু হরহামেশাই দান করি। যেমন ফকির মিসকিনকে একটাকা দুটাকা দেয়না এমন মানুষ খুবই কম। কিন্তু আমরা দানের পরে যে প্রশান্তি পাওয়ার কথা তা পাইকি? না , কারন আমাদের এই দান সেই শর্তগুলো হয়তো পূরণ করেনা যার মাধ্যমে একজন মানুষ সত্যিকারের দাতা হিসাবে পরিচয় পেতে পারে।
দানের শর্তগুলো তাহলে কি হওয়া উচিৎ?
১। দান আপনার নিজের উপার্জন থেকে হলে অবশ্যই ভালো । অবশ্য যিনি উপার্জন করেন না কিন্তু খরচ করেন তারও দান করায় কোন বাধা নেই । ছাত্র ছাত্রীরাও দানের সুফল লাভ করতে পারেন তাদের খরচ থেকে দান করার মাধ্যমে।
২।
দান করে খোঁটা দেয়া যাবে না । তাহলে আপনার দানের মূল্য থাকবে না । এটা কোরানের শিক্ষা । আপনি দানও করলেন আবার বললেন- হারামজাদাদের দিতে দিতে শেষ হয়ে গেলাম। তাহলে আপনার দানের কোন মূল্যই থাকলো না।
৩। দান করে দু:খ করা যাবে না । আহারে আমার টাকা শেষ হয়ে গেলো । তাহলে হবে না ।
৪।
লোক দেখানো দান করা যাবে না । আমি দানবীর এই প্রকাশ আসলে আপনার দানের প্রশান্তি নষ্ট করবে।
৫ । সবচেয়ে খারাপ জিনিসটি বেছে বেছে দান করা ঠিক নয়। আপনি যা পরতে পারেন যা ব্যবহার করতে পারেন তাই দান করা উচিৎ ।
উপরের সবগুলো শর্ত পূরণ করে যদি আপনি দান করেন তাহলে দেখবেন আপনি সত্যিকারের প্রশান্তি পাবেন। আর নিয়মিত দান আপনার প্রশান্তিকে সবসময় বাড়িয়ে দেবে।
. ..হাদীস শরীফে বলা আসে – সেই দানই সর্বোত্তম যেখানে ডান হাত যা দান করে বাম হাত তা জানে না ।
আবার কোরানে আছে- তোমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি দান করো।
আমরা আসলে মানুষের মানুষ হয়ে ওঠার সর্বোত্তম সম্পদ এই দান সম্পর্কে বিশেষ উদাসীন।
বিশেষ বিশেষ দিন কিংবা মন ভালো থাকার ওপর আমাদের দান নির্ভরশীল । কিন্তু এটা হওয়া উচিৎ নয়। আমার সকল সম্পদে অভাবী ও বঞ্চিতের অধিকার রয়েছে এটা জানতে হবে। তাই আমাদের দান নিয়মিত হওয়া উচিৎ । আর দান করে আপনি কি পাবেন তা খুব সুন্দরভাবে পবিত্র কোরানে আল্লাহতাআলা বলেছেন:
---যারা তাদের উপার্জন থেকে রাতে বা দিনে প্রকাশ্যে বা গোপনে দান করে তাদের জন্য রয়েছে পুরস্কার , তাদের কোন ভয় বা পেরেশানী থাকবে না ।
-- সূরা বাকারা: ২৭৪
সুতারং আমরা দেখছি আমাদের ভয় বা পেরেশানী থেকে মু্ক্তির জন্যও আমাদের দান করার কথা বলা হয়েছে। আজ আমাদের যা সম্পদ তা কাল যে আমাদের থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তাই আমাদের এই সম্পদ হতে আজই দান করতে থাকি। এবং দান আপনার সম্পদ বৃদ্ধির কারন হবে । দান শুধু মুসলমানদের জন্য বলা হয়েছে তা নয় , বিশ্বের সব ধর্মের মনীষীরা দানের জন্য বলে গেছেন ।
সব ধর্মগ্রন্থে দানের জন্য বলা হয়েছে।
প্রিয় বন্ধুরা , আমরা হয়তো দাতা হাতেম তাঈ হতে পারবো না । কিন্তু আমাদের সাধ্যের মধ্যে নিয়মিত দানের মাধ্যমে আমরা কিন্তু একটা দারিদ্রমুক্ত সমাজ গঠনে নিজেদের অবস্থানকে পাকা করতে পারি ।
আসুন নিয়মিত দানের অভ্যাস করি, ভালো মানুষ হই, সৃষ্টির সেরা হিসাবে নিজেদেরকে গড়ে তুলি।
ধন্যবাদ ।
আগামীকাল আবার দেখা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।