আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র‌্যাব পুলিস তৈরীর নৈতিক দিক!!!!!!



বাংলাদশে স্বাধীন হয়েছে প্রায় চার দশক হতে চললো। এই চার দশকে রাষ্ট্রে যে চরিত্র দাঁড়িয়েছে তা একদমই গণবিবরোধী এবং কতপিয় পুঁজপিতি ( যারা আবার বাইররের দেশের মাল এনে বিক্রি করে,( এদেরকে দোকানদার বললে অত্যক্তুতি হয় না) ও সেনাবাহীনি দেশের মানুষরে ওপর জগদ্দল পাথররে মত চেপে বসে আছে) জনগণরে পাল্টা প্রতিরোধ সংগ্রাম যেনো উঠে দাঁড়াতে না পারে তার জন্য শাসক শ্রেণীর প্রচারযন্ত্র প্রথম আলো ( গোল আলু, যা সবার সাথে যায়) ডেইলিস্টার, চ্যানলে আই সহ নানা জাতের মিডিয়া ও মিডিয়া ব্যক্তত্বি; কত গোল টেবিল ঝাল টক টিভি শো। তবে এর চাইতেতো ভিন্নপথ হলো ক্রস ফায়ার। কিন্তু কথতি গণতান্ত্রিক দেশেরতো আইন আছে, আছে বিচার বিভাগ। তাদের পাশ কাটিয়ে কিভাবে ক্রসফায়ার হয়? এটাতো বিরাট এক একাডেমেকি ডিবেট তৈরি করবে এবং খোদ কথিত গণতান্ত্রকি রাষ্ট্রকে বিপদে ফেলে দেবে।

ফেলে দেবে, তারপরো হচ্ছে। আমরা একটু পেছন তাকিয়ে দেখি পুলিসের জন্ম এবং ক্রস ফায়াররে আইনি দিক । এর পরের পোস্টগুলিতে না হয় ক্রসফায়াররে রাজনতৈকি দৃষ্টভিঙ্গি নিয়ে কথা বলা যাবে। পুলিস চলছে নিপিড়নমূলকঔপনবিশেকি আইনে বাংলাদশে পুলশিরে মূল আইন পুলশি রেগুলেশন অব বেঙ্গল বা সংক্ষেপে পিআরবি। পিআরবি অনুযায়ী পুলশিরে র্কমকান্ড পরিচালিত হয়ে আসছ।

ব্রিটিশ ঔপনবিশেকি শক্তি তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য ১৮১৩ সালে প্রথম পুলশি বাহিনি গঠন কর। এই সময় উপনবিশেবিরোধী কৃষকদের সংগ্রাম চলছলি। পুলশিশের সে সময়কার ভূমিকা ছিল উপনবিশেবরিোধী কৃষক সংগ্রাম দমন করা। পুলশি পরিচালনা অন্যতম যেসব আইন রয়েছে তার মধ্যে পুলশি আইন ১৮৬১, ফৌজদারি র্কাযবিধি ১৮৯৮, পুলশি রেগুলেশন অব বেঙ্গল ১৯৪৩ প্রধানভাবে উল্লখেযোগ্য। উক্ত আইনগুলোর আলোকে পরর্বতীতে যথাক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলশি ‘ল’ ১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৮৪ ও ১৯৯২ এবং আমরর্ড পুলশি ব্যাটালয়িন অডিন্যান্স ১৯৭৯ জারি করা হয়।

এই আইনগুলো করার ফলে ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রামরে মতো মেটট্রোপিলটন অঞ্চলের পুলিশ উক্ত আইনরে অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। তবে ১৮৬১ সালরে আইনটি মূল আইন হসিাবে এখনো পুলিশ বিভাগের সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে আসছে। ১৮৬১ সালের ওই আইন তৈরি করা হয়েছিল ১৮৫৭ সালের ভারতের প্রথম জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের শক্তিকে দমনের জন্য। ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যেন ভবিষ্যতে আর কোনো আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে। পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল ১৯৪৩ জারি করা হয় তেভাগা আন্দোলনকে দমনের জন্য।

পুলিশ বাহিনী গঠনের ইতিহাস শাসক দলকে রক্ষা করার ইতিহাস। যুগে যুগে পুলিশ শাসকশ্রেণীর ভাড়া খেটে এসেছে এখনো সেই ভাড়াই খাটছে। পুলিশকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আত্মরক্ষার অধিকার সবার আছে। আত্মরক্ষার জন্য যদি কেউ মারা যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে খুনের সাজা হবে না। তবে সেক্ষেত্রে আদালতে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে যে, বিষয়টি সত্যি আত্মরক্ষার প্রয়োজনেই করা হয়েছে, খুনের উদ্দেশ্যে করা হয়নি।

আর এ ক্ষেত্রে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হলো বিচার বিভাগ, যে বিভাগ এ বিষয় সুস্পষ্ট বক্তব্যর মাধ্যমে হয় সাজা নয় দোষ থেকে রেহাই দিবেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কোনো ব্যক্তি আটক হলে রাষ্ট্রই হবে তার একমাত্র হেফাজতকারী। সেখানে কোনোভাবে কোনো আটক ব্যক্তি বা বন্দির মৃত্যু হলে সেটা অবশ্যই তদন্ত হতে হবে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত না হলে তার কোনো আইনি মূল্য নেই। পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা পুলিশ সদর দপ্তরের পূর্বানুমতি ছাড়া তারা গুলি চালাতে পারে না। তবে তিন ধরেনের পরিস্থিতিতে গুলি চালাতে পারে।

১. মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বা যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত কোনো আসামি পালানোর চেষ্টা করলে, সেই আসামিকে রুখতে গুলি চালাতে পারে। ২. দাঙ্গা দমনকালে প্রথমে হুঁশিয়ারি, তারপর পর্যায়ক্রমে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ছোড়া; এরপরও যদি দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন ঐ দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ গুলি চালাতে পারে। ৩. বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে যদি কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘিœত হয় তাহলে, সেক্ষেত্রেও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বা আত্মরক্ষার স্বার্থে পুলিশ গুলি চালাতে পারে। এই তিন ধরনের প্রেক্ষাপটে পুলিশ গুলি চালালে পরবর্তীতে পুলিশের বিভাগীয় একটি তদন্ত সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে। শুধু পুলিশের নিজস্ব বিভাগের তদন্ত এক্ষেত্রে গ্রহণীয় নয়, বিচার বিভাগীয় তদন্তও সম্পন্ন করতে হবে।

তবে বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে যারা ক্রসফায়ারের নামে লাইন অব ফায়ারে সরাসরি নিহত হচ্ছে তাদের বেলায় এসব কোনো আইন এ পযন্ত কার্যকর ছিল বলে সাপ্তাহিকের অনুসন্ধানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। র‌্যাব গঠন বাংলাদেশের শাসকশ্রেণী ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য প্রতিবারই হয় বিশেষ কোনো নিবর্তনমূলক আইন তৈরি করে নতুবা কোনো বাহিনী তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় রক্ষী বাহিনী করে সে সময়কার প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক বামপন্থী সংগঠনের নেতাকর্মীকে নিশ্চিহ্ন করার দায়ভার এখনো আওয়ামী লীগের শরীর থেকে যায়নি। এরপর জিয়াউর রহমান থেকে সদ্য বিদায়ী ফখরুদ্দীনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় জারি করা নিবর্তনমূলক আইনে লাখ লাখ মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তবে এসব সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে খালেদা নিজামীর সময় করা র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা র‌্যাব গঠন।

ঞযব অৎসবফ ঢ়ড়ষরপব ইধঃঃধষরড়হং (অসবহফসবহঃ) অপঃ ২০০৩ আইনটি ১২ জুলাই ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকার গেজেট আকারে প্রকাশ করে। ঞযব অৎসবফ ঢ়ড়ষরপব ইধঃঃধষরড়হং ঙৎফরহধহপব, ১৯৭৯ সংশোধন করে র‌্যাব গঠন করা হয়। র‌্যাব গঠনের কতিপয় দিক দেশের বিভিন্ন সংস্থা ও জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে র‌্যাব গঠন করা হয়েছে। সরকার ইচ্ছে করলে যে কোনো বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে যে কোনো বিভাগে নিয়োগ করতে পারে। সরকারের এই ক্ষমতাকে নির্বাহী ক্ষমতা বলে।

র‌্যাবে যেমন পুলিশের লোক আছে, তেমনি আছে বিমান ও সেনাবাহিনীর লোক। তবে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা হলো বিভিন্ন বাহিনী থেকে এসে র‌্যাব গঠন করা হলেও এখানে যদি কোনো সদস্য ফৌজদারি দণ্ডবিধির আমলযোগ্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে তবে তাকে কোন আইনে বিচার করা হবে সে বিষয় কোনো দিকনির্দেশনা নেই। যদি দিকনির্দেশনা না থাকে তবে ধরে নেয়া যায় বিভিন্ন বাহিনী থেকে প্রেষণে আসা সদস্যদেরকে নিজ নিজ বিভাগের আইন দ্বারা বিচার হবে। র‌্যাবে আসা সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য যদি হত্যার মতো মারাত্মক ফৌজদারি দণ্ডবিধি লঙ্ঘন করেন, তবে তার বিচার হবে সেনাবাহিনীর প্রচলিত আদালতে। আর এক্ষেত্রে ন্যায় বিচার উপেক্ষিত হওয়ার সম্ভাবন থেকে যায়।

আর সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাজ ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা নয়, সেনাবাহিনীর কাজ হলো দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় বাহিনীকে র‌্যাবে এনে বিতর্কিত করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা মূলত পুলিশের কাজ। আর এ কাজ পুলিশকেই করতে দিতে হবে। তবে স্বাধীন নিরপেক্ষ হিসেবে পুলিশকে গড়ে তুলতে হলে এখনই দরকার পুলিশের ব্যাপক আধুনিকায়ন ও সংস্কার।

বাংলাদেশের ক্রসফায়ারের গোড়ার কথা ২০০৪ সালে শুরু হওয়া ক্রসফায়ারই বাংলাদেশের প্রথম ক্রসফায়ার নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এবং তৎকালীন সভাপতি সিরাজ সিকদারকে ক্রসফায়ারে হত্যা করে শেখ মুজিবুর রহমান সরকার। চট্টগ্রাম থেকে গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যারা তাকে অপহরণ করে ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে সাভারে নিয়ে হত্যা করে। তবে সরকারি প্রেসনোটের মাধ্যমে যে নাটক সাজানো হয় তার ভাষা আজকের ক্রসফায়ার হওয়ার পরে যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় ছাপানো হয় তার হুবুহ তখনো বিদ্যমান ছিল। সে সময় সর্বহারা পার্টির কত নেতা কর্মী এরকম এনকাউন্টরে মারা গেছে তা একেক জায়গা থেকে একেক রকম শোনা যায়।

তবে মৃত্যুর মিছিল যে বর্তমান ছিলো তা কিন্তু অস্বিকার করার উপায় নেই। বিচার বহির্ভূত হত্যার সংখ্যা বাড়ছে সব আমলেই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সংখ্যা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভিন্নমত রয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যার শিকার হয়ে ১২১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই সংখ্যা ৫৫৮ জন বলে দাবি করা হচ্ছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২৩ মাস রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুরো সময়টা ছিল জরুরি অবস্থা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২৩ মাসের জরুরির অবস্থার মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মারা যায় ৩১৯ জন। এরা সবাই বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার। এর মধ্যে ২৫৬ জনের মৃত্যু হয় ক্রসফায়ারে আর বাদবাকি ৩৮ জন মারা যায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতনে। খালেদা নিজামীর সন্ত্রাস দমন বনাম রাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছিল সন্ত্রাস দূর করবে।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে প্রথমে বাংলাভাই তারপর র‌্যাট এবং সর্বশেষ র‌্যাব গঠন করে। সন্ত্রাস কতটুকু কমেছে তা জনগণ ঠিকই বুঝেছে। ব্যবসায়ীদেরকে ৪০ টুকরা করে হত্যা করার ঘটনা ছিল সাধারণ প্রবণতা। শিবির সহ উগ্রপন্থী ইসলামী জঙ্গিবাদী দলগুলোর সীমাহীন সন্ত্রাসী আক্রমণ উল্লেখ করার মতো। সে সব সন্ত্রাস বন্ধ না করতে পারলেও র‌্যাব পুলিশ দিয়ে মানুষ হত্যা থেমে ছিল না।

খালেদা-নিজামীর জোট সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ক্রসফায়ারে মারা যায় ৯৩৪ জন। রক্ষী বাহিনী তৈরির কারণে আজো নিন্দিত হয়ে আসছে আওয়ামী লীগ সরকার । অনেকে মুজিবের মৃত্যু এবং দীর্ঘ ২৩ বছর আওয়ামী লীগের ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণ হিসাবে রক্ষী বাহিনী তৈরির কারণ উল্লেখ করেন। সরকারি তথ্য মতে রক্ষী বাহিনীর হাতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৮ জন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ ও নেতাকর্মী ছিল ১৯৮ জনেরও বেশি।

তবে পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি এবং জাসদ বা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের দাবি সরকারি হিসেবের বহুগুণ। খালেদা নিজামীর জোট সরকার র‌্যাব গঠনের পর জোট সরকারের আমলেই ক্রসফায়ারে মৃত্যুর সংখ্যা মুজিব সরকারের সময়কারের মৃত্যুর বহুগুণ বলে সংখ্যার বিচারে তুলনা করলে। রক্ষী বাহিনী গঠনের কারণে যদি আওয়ামী লীগকে নিন্দিত হতে হয়, আজও তার ক্ষত বয়ে বেড়াতে হয়। বিরোধী দলের কাছ থেকে বাকশালী রক্ষী বাহিনী বলে ভৎসনা শুনতে হয়, তবে র‌্যাব গঠনের কারণে কেন খালেদা-নিজামী বিচারের কাঠগড়ায় উঠবেন না। র‌্যাব গঠনের কারণে কেন তারা নিন্দিত হবেন না এটাই প্রশ্ন।

তবে কি র‌্যাব গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক কোনো পরামর্শ ছিল। কি সেই আন্তর্জাতিক পরামর্শ জনগণ সেটা জানতে চায়, ভালোমন্দ বিবেচনা করে তার পক্ষ অথবা বিপক্ষালম্বন করতে চায়। এই অধিকার জনগণের আছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারেকে জনগণের সামনে জবাবদিহি করতে হবে। র‌্যাবে বিভিন্ন বাহিনী নিয়োগের আইনি জটিলতা র‌্যাব গঠন করার পর এখানে বিভিন্ন বাহিনী থেকে কর্মকর্তা ও বাহিনী সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয়।

এই মিশ্র বাহিনীতে রাষ্ট্রের জাতীয় নিরপাত্তার সঙ্গে জড়িত এবং প্রতিষ্ঠান যেমন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে নিয়ে গঠিত হয়। এই তিন বাহিনীর কাজ দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা এই বাহিনীর কাজের মধ্যে পড়ে না। র‌্যাব গঠনের যে আইন সেখানে কিন্তু পুলিশ আইনকে একটু পরিমার্জন পরিবর্ধন করে করা হয়েছে। তবে এই আইনের প্রধান দুর্বলতা হলো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত তিন বাহিনীর সদস্যরা র‌্যাবে থাকাকালীন কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হলে তার বিচার কোন আইনে হবে সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই।

সেনা আইনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিচার করা হয়। কিন্তু র‌্যাবে যখন একজন সেনা কর্মকর্তা অথবা একজন সেনা সদস্য আসছে তার বিচার কোন আইনে হবে সে সম্পর্কে র‌্যাব আইনে কোন দিকনির্দেশনা না থাকায় আইন হিসেবে জটিলতা আরও বেড়েছে। দিনবদলের ক্রসফায়ার দির্ঘদিন ধরে চলে আসা ক্রসফায়ার বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ সমালোচনার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। আর সে কারণে বাংলাদেশের মানবাধিকারের বিষয়টি বার বার উপেক্ষিত হয়ে আসছে বলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিচার বিহর্ভূত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছে। সবশেষে আওয়ামী লীগ সরকার বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো জোরের সঙ্গেই বলেছিল তাদের আমলে কোনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটবে না।

অথচ সরকারের প্রথম ৬ মাস পূরণ হওয়ার আগেই ত্রিশের অধিক ক্রসফায়ার হয়ে গেছে। চলমান এই অবস্থা বজায় থাকলে ভবিষ্যতে এই পরিমাণ আরও বাড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের মতামত। ইতোমধ্যে ২০০৯ সালে প্রকাশিত এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রিপোর্টে বাংলাদেশের বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত ২৮ মে প্রকাশিত বার্ষিক রিপোর্টে এই উদ্বেগ প্রকাশিত হয়। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব আইরিন খান উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশকালে বলেন, সেনাবাহিনীকে নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার কাজে ব্যবহার করা হলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুকি বাড়ে।

’ এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব র‌্যাবের মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য থাকার ব্যাপারটি উল্লেখ করেছেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সরাকারের ওপর নাখোশ বলে তাদের একাধিক বক্তব্য বিবৃতিতে সেটা প্রকাশ পেয়েছে। যদি ক্রসফায়ার চলতে থাকে তবে সরকারকে আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছ থেকে একঘরে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.