zahidmedia@gmail.com
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আত্মীয়স্বজন বনানী কবরস্থানে শায়িত আছেন। শনিবার জাতীয় শোক দিবসে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বনানী কবরস্থানে যান। তিনি সেখানে গিয়ে শোকবিহবল হয়ে পড়েন।
অশ্রুসিক্ত নয়নে শেখ হাসিনা সাড়ি বাধা আঠারটি কবরে পাশে দাঁড়ান। ১৫ আগস্টে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনও শ্রদ্ধা জানাতে তার সঙ্গে ছিলেন।
স্বজন হারানো অব্যক্ত যন্ত্রণা আর হাতে ফুল নিয়ে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় শোকাতুর বাঙ্গালির শ্রদ্ধার মিছিল। শোকের এ মিছিলে শামিল হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সদস্যরা।
ফুলে ফুলে ভরে যায় বনানী কবরস্থানের সারি বাঁধা ১৮টি কবর। ৩৪ বছর আগে ঘাতকের উদ্ধত বন্দুকের নলের মুখে রাতের অন্ধকারে জীবন দেন তারা। কেঁদে-কেটে ক্লান্ত রাসেলও রেহাই পায়নি ঘাতকদের হাত থেকে।
দীর্ঘ প্রায় তিন যুগে এখনও তাদের ভোলেনি বাঙালি। শ্রদ্ধা আর ভালবাসার একরাশ ফুল নিয়ে হৃদয়ের আকুতি জানাতে ভিড় করে তারা স্বজনদের সমাধি পাশে।
বনানী কবরস্থানে শায়িত রয়েছেন বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, ছোট ভাই শেখ আবু নাসের, বড় ছেলে শেখ কামাল, কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, মেজ ছেলে শেখ জামাল, জামালের স্ত্রী পারভীন জামাল রোজী, ছোট ছেলে শেখ রাসেল, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর বোনের স্বামী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, পৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর নিকটাত্মীয় শহিদ সেরনিয়াবাত, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলসহ আরও কয়েকজন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ জিল্লুর রহমানও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
সে সময় মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১৫ আগস্টের শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। কামনা করা হয় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধি।
মা-ভাইয়ের কবরে গিয়ে চোখের জল থামিয়ে রাখতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তিনি প্রিয় স্বজনদের কবরে ফুল দেওয়ার পর মোনাজাত করেন।
প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে মুঠো মুঠো ভালবাসার ফুল ছড়িয়ে দেন প্রিয় স্বজনদের কবরে।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের কবরের পাশে হাজারো জনতা ভিড় করে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালীর স্বপ্ন বাস্তবায়নের শপথ নেয় তারা। তারা বলছেন, প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি জানতো শুধু জাতির জনককে হত্যা করলেই তাকে মুছে ফেলা যাবে না, সেজন্য হত্যা করা হয়েছে তাঁর পুরো পরিবারকে। যতোভাবে সম্ভব চেষ্টা করেছিলো ইতিহাসকে ভুলভাবে উপস্থাপনের।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় সত্যের। বনানী কবরস্থানে আসলেই আগামী প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয়, দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।