ভালো লাগে জোছনা রাতে মেঘ হয়ে আকাশে ভাসতে.... :)
জলদস্যুরা কার না ছোট বেলার স্বপ্ন ছিল। বইপোকা কিশোরটিও যে ক্রিকেট ব্যাট ঠিকমত ধরতে পারেনা, সেও একদিন সমুদ্রে ভেলা ভাসিয়ে চলে যেতে চায়। সেগুলো অনেক পুরনো দিনের গল্প। সাম্প্রতিক সময়ে সোমালিয়ান পাইরেট-দের দাপট শুনা গেলেও, আমি আজকে বলব অন্য রকম আধুনিক যুগের পাইরেট-দের গল্প।
সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দলটির নাম পাইরেট পার্টি।
২০০৬-এর পয়লা জানুয়ারীতে জন্ম নেয়া এই দলটির মূল এজেন্ডা ছিল কপিরাইট, পেটেন্ট, প্রাইভেসী ইস্যু। ২০০৯-এ তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নির্বাচনে দখল করে নেয় একটি সিট। বিশেষ করে পাইরেট বে (টরেন্ট ওয়েব সাইট)-কে আদালতে নেয়ার পর পর পাইরেট পার্টির জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়তে থাকে (তাদের মধ্যে সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই)। এখন শুধু সুইডেন না, ইউরোপের অনেক দেশেই পাইরেট পার্টি নিবন্ধিত বৈধ রাজনৈতক দল। সারা দুনিয়াতে যে হাওয়া লাগিয়েছে তার ধারাবাহিকতায়, লাটিন আমেরিকাতে পাইরেট-রা অনেক সক্রিয়।
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সাউথ আফ্রিকা, আর রাশিয়া-তে চলছে অনেক কাজ। এমন কি ব্রিটেনে সম্প্রতি পাইরেট পার্টি নির্বাচন কমিশনে নিজেকে নিবন্ধিত করেছে (গতকাল সম্ভবত)।
ডিজিটাল পাইরেটদের যে সবাই খুব পছন্দ করছে তা কিন্তু নয়। মিডিয়াতে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্ররা পাইরেসীর রেফারেন্স দিচ্ছে। আবার ওপেন সোর্স ওয়ার্ল্ড লর্ড স্টিলম্যান ইতিমধ্যে তার অসমর্থনের কথা বলেছেন যে পাইরেট পার্টি কপিরাইটের সময় সীমা যে ৫ বছর করতে চাচ্ছে তা তিনি সমর্থন করেন না, কারণ অনেক ওপেন সোর্স প্রজেক্ট লং টার্ম কপিরাইটের সুফল ভোগ করছে।
সবশেষে বলব, সাম্প্রতিক সময়ের কিছু ট্রেন্ড দেখে ২০-৩০ বছর পরের দুনিয়া সম্পর্কে একটা ধারণা করা যায়। এখন অনেক মানুষ সৃজনশীল কাজে জড়িত হচ্ছে। ছবি আঁকা, গল্পলেখা আর গান গাওয়া যেটাই হোক। সাথে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সৃষ্টি করছে অনেক প্রাইভেসী বিষয়ক জটিলতা। সেটা ফেইসবুক হোক, আর আপনার হাতের মুঠোফোনটি হোক।
এসব সমস্যা সমাধানে নতুন কিছুকে তো আসতেই হবে। আমাদের দেশে হয়ত মৌলিক চাহিদা মিটাতেই সরকার এখন অনেক ব্যস্ত। এর মাঝেই সারা দুনিয়াতে হয়ে যাবে আরেকটি বিপ্লব। পাইরেট পার্টি আর কিছুই না, তারা সময়ের বিদ্রোহী। এই বিপ্লব শুধু ডিজিটাল বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করবেনা, করবে আমাদের ভবিষ্যতকে।
আমরা কিছু একটা টের পাই; ছোট ছোট করে দানা বেঁধে উঠছে বিশাল বিপ্লব: ন্যাপস্টার থেকে শুরু হয়ে, সাম্প্রতিক সময়ে পাইরেট বে মামলা, বিভিন্ন মাল্টি বিলিয়ন ডলার কোম্পানীগুলোর পেটেন্ট নিয়ে ঝামেলা, রিয়া (RIAA)র সবকিছুতে মাতব্বরী- সব কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছে একটি অন্যরকম ভবিষ্যত-এর। নতুন প্রজন্মও হয়তো বুড়োদের বানানো নিয়ম থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে। দেখা যাক আমাদের মানব সভ্যতা কোথায় গিয়ে ঠেকে!
পাইরেট পার্টির অফিসিয়াল ইংরেজি সাইট: Click This Link
পাইরেট পার্টি আর পাইরেসি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। কেউ গুলিয়ে ফেললে আমার দোষ নেই! উপরের কোনো দেশে পাইরেসি লিগ্যাল না- পাইরেট পার্টির কোনো ইচ্ছা নেই পাইরেসি লগ্যাল করা। পাইরেসী অন্যায় ছিল, আছে, অনেকদিন থাকবে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।