আমাদের তিন বন্ধু (মনিকা, রামকৃষ্ণ, আনিস) জেলে। (আজ ৯মাস পূর্ণ হলো) সরকার তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করেছে। কারণ তারা শিক্ষিত হয়ে ওঠার রাস্তা ছেড়ে 'অশিক্ষিত' কৃষকদের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলো। রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা হয় কি কি করলে? আমরা কি জানি? জানি না। কিন্তু যখন শুনলাম তাদের জব্দ করা মালামাল এর তালিকা তখন নতুন কিছু বিষয় জানার আনন্দ পেয়ে বসলো- ওওও আচ্ছা, এই এই জিনিষ থাকলে তাহলে মুশকিলে পড়ার শঙ্কা আছে।
ওদের রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলার আলামতের তালিকা দেখতে চান?? দয়া করে মন দিয়ে পড়ুন
১. ১টা লাল ব্যাগ, ১টা কালো ব্যাগ (দেখুন ওদের সংগঠনের নাম নয়া বাংলার লাল পদক্ষেপ, সন্দেহ এমনই দাড়িয়েছে এবং লাল পতাকাকে এতোই ভয় পেয়েছে যে লাল ব্যাগও জব্দ হয়। )
২. মনিটর
৩. সিপি ইউ
৪. ইউপিএস
৫. নোকিয়া ফোনসেট যেটা মনিকা ব্যবহার করতো
৬. স্যামসং ফোন সেট যেটা আনিস ব্যবহার করতো
৭. স্ট্যাপলার মেশিন
৮. মার্কিং পেন
৯. তিনটা বাক্স
১০. বাংলাদেশে মৌলবাদের অর্থনীতি- আবুল বারাকাত (এই লেখা নিষিদ্ধ নয়, লেখকও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পাঠকরা কারাবন্দি, অতএব পাঠক সাবধান)
১১. সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ (এই লেখা নিষিদ্ধ নয়, লেখকও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছেন, পাঠকরা কারাবন্দি, অতএব পাঠক সাবধান)
১২. রাজনীতিতে দ্বিচারিতা
১৩. ব্যাটারি চার্জার
১৪. ৩২খানা পোস্টার যেগুলোতে নারীমুক্তি, কৃষক জাগরণের কথা বলা আছে
১৫. একটা ব্যানার (সমানাধিকার, গণমুক্তি, গণক্ষমতা লেখা)
১৬. আজকের সাম্রাজ্যবাদ নামক বই
১৭. মাউস
১৮. ডিজিটাল ক্যাম
১৯. কি-বোর্ড
২০. ঘোষণাপত্র- নয়া বাংলার লাল পদক্ষেপ এর
২১. মোবাইল চার্জার
অবাক হচ্ছেন কি? আমি আর অবাক হই না। যারা ভিতরে আছে তারা আরো হয়না। কেনো জানেন?
জানুয়ারীতে এ সরকার আসার পর জরুরি অবস্থা বিলুপ্ত হয়েছে। জানুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত ওদের শুধু শুধু আটকে রাখা হয়েছিলো।
মার্চে এসে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা দেয়া হয়েছে। এবং এই মাসেও তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় থাকায় তাদের ডাণ্ডাবেরী পরে থাকতে হচ্ছে। (একাধিক কেস থাকলে ডাণ্ডাবেরী পরানো যেতে পারে) ৬ মাস পর জুলাইয়ে কোর্টে খবর নিয়ে দেখা গেলো তাদের জরুরি অবস্থা ভাঙার কেসটা স্থগিত হয়ে আছে, হাইকোর্ট থেকে জামিন নেয়া আছে সেই কাগজও বাগেরহাট এর কোর্টে আছে। কিন্তু?? তারপরও ওদের কোর্টে আনা হয় হাজিরা দিতে, দুইটা কেস থাকার কথা বলে ডাণ্ডাবেরী পরানো হয়। কি আশ্চর্য এ দেশ!!
ওদের বিরুদ্ধে যরা মাঠে নেমেছে তারা জানেন ক্ষমতা তাদের হাতে, আর আমরা যারা বাইরে কি করলে বন্ধরা কারামুক্ত হবে ভাবছি তারা জানি, কেবল বুদ্ধি, বন্ধুরা শলা-পরামর্শ আর আইনজীবীদের ভালো-মন্দ পরামর্শ মতো কাজ করা ছাড়া উপায় নেই।
ডাক্তার জানে তাকে কি করতে হবে কিন্তু সে যদি তার রোগীকে না জানায় তাহলে রোগী এবং তার স্বজনদের কি আতঙ্কে থাকতে হয় তা যদি ডাক্তার অনুভব করতো। তেমনই বাগেরহাটের উকিলরা বলছেন না এর পর কি কি করতে হবে। তাদের কথা আমরা খালি তাকে টাকা তিবো, আর সে তার কাজ করবে। সে কি কাজ করবে সেটা জানারতো আমার দরকার নেই। খুব ঠিক কথা, কি বলেন? আর সেই পথ ধরে গেলো ৯ মাসে আমরা কেবল টাকা দিচ্ছি, ফল পাচ্ছি না।
কেনো ফল হচ্ছে না জানি না। জানলে না যে ফলে যে সার দরকার সেটা দিতে পারতাম। ভিতরে যারা আছে তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া বেশি কিছু আপাতত করতে পারছি কই?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।