আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাগো ভোলাভালা টমি



আমি ছোটবেলা থেকে কুকুর পুষতে খুব আগ্রহী। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হয় বেশ দেরিতে। বছর দুই আগে একটা সংকর জাতের কুকুর আনি এক দোস্তের বাসা থেকে। নাম দিছিলাম টমি। প্রথমদিকে বারির সবাই তেমন একটা পছন্দ না করলেও একসময় ঠিকই বেশ ভালমতোন সবার মাঝে জায়গা করে নেয়।

আব্বা প্রতিদিন বাজার থেকে টমির লাইগ্যা গরুর উচ্ছিষ্ট নিয়া আসত। তো কয়েক মাসের মধ্যেই শরীর স্বাস্হ্য আল্লায় দিলে সেই রকম দেখার মতো। আর গলার ডাকটাও মাশাল্লাহ খুবই খানদানি। ডাক শুইন্যা অন্তত বুঝবার পারবেন যে এই বাড়িতে এককান সারমেয় আছে। তো আমাগো এলাকায় আবার মাঝে মধ্যে কিছু ভিক্ষুক আসে গায়ে ছালা জড়াইয়্যা মাটিতে গড়ান দিয়া ভিক্ষা করে।

তো এইরকম এক ভিক্ষুক আইছে এলাকায় ভিক্ষা করতে। যথারীতি একসময় আমাগো গেটেও হাজির। টমি আবার নবাবী স্টাইলে গেটের কাছাকাছি শুইয়্যা রোদ পোহাইতেছিল। কিন্তু ফকিরের উচ্চমার্গীয় সংগীত সাধনায়ও কিছু কইল না। তো আম্মায় ২টাকা ভিক্ষা দেওয়ার লাইগ্যা যেই গেট খুলছে, অমনি টমি আম্মারে ঠেইল্লা গেটের বাইরে আর সেই সঙ্গে বার দুয়েক ঠাঠাইন্যা ঘেউ ঘেউ।

আম্মায় অবাক নয়নে তাকাইয়্যা দেখে লুলা ভিক্ষুক কোন যাদু বলে জানি পুরা ১০০ মিটার স্প্রিন্ট দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন আর আমার ভোলাভালা টমিটাও ভিক্ষুকের পেছন পেছন একটু জগিং সাইরা লইতাছে। ভিক্ষুক মিয়ার চিল্লানিতে আশপাশের দোকানিরাও মাগনা মাগনা একখান "ভন্ড লুলা ভিক্ষুক বনাম সারমায়" দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করল। কিছুক্ষণ বাদে আমার ভোলাভালা টমির জগিং শেষ। আম্মায় পুরস্কার স্বরূপ ঐ ২টাকার লগে আরও ৩টাকা ভইরা টমিরে একখান রুটি কিনা দিলো। এলাকার দোকানিরাও এরপর টমিরে ফাউ ২খান বনরুটি খাইতে দিছে।

পুনচ্ছ: ঐ ঘটনার পর ছালা পরা ভিক্ষুক আমাগো এলাকায় খুব একটা আর দেখা যায় না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.