মিয়ানমারের বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি দেশটির রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ‘দুই সন্তান নীতি’ চাপিয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য ‘দু সন্তান নীতি’ চালুর প্রস্তাব ১৯৯৪ সাল থেকে আছে, তবে মুসলমানদের উচ্চ জন্মহার সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়াচ্ছে—এমন অজুহাতে কিছু কিছু এলাকায় এখন এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু হয়েছে।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে গত বছর বৌদ্ধ ও মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধে। ওই সংঘাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে যায় এবং অস্থায়ী ক্যাম্পে থাকা শুরু করে। ওই সময়ে রোহিঙ্গাদের অধিকার সম্বন্ধে সরব না হওয়ায় সমালোচিত হয়েছিলেন সু চি।
বিবিসি জানায়, ১৯৯৪ সালের নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রোহিঙ্গা মুসলমানদের দুটির বেশি সন্তান নিতে বারণ করা হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হয়ে পড়ে। তবে সাম্প্রদায়িক সংঘাত তদন্তে গঠিত একটি কমিটি পরিবার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাগিদ দিয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে—এই অজুহাতে এ সুপারিশ করে ওই কমিটি।
গতকাল শনিবার রাখাইন রাজ্য কর্তৃপক্ষ সেখানকার মং দাউ ও বু থি দং শহরে দুই সন্তান নীতি চালু করে। তবে এটি কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা পরিষ্কার করেনি কর্তৃপক্ষ।
মিয়ানমারের একজন জ্যেষ্ঠ অভিবাসন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, ‘ওই নির্দেশনা অনুযায়ী, বাঙালি (রোহিঙ্গা) পুরুষেরা একটি বিয়ে করতে পারবেন এবং প্রত্যেক বিবাহিত যুগল দুই সন্তান নিতে পারবেন। কোথাও দুই সন্তানের বেশি নিলে সেটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। ’
এ বিষয়ে সু চি সাংবাদিকদের বলেন, নীতিটা প্রয়োগ হবে কি না, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত নন। তবে সেটির প্রয়োগ অবৈধ মনে করছেন তিনি।
সু চি আরও বলেন, এ ধরনের বৈষম্য ভালো নয়।
এতে মানবাধিকারও লঙ্ঘিত হয়।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) কর্মকর্তা ফিল রবার্টসন রাখাইন কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপকে নিষ্ঠুর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সংগঠনটি গত বছরের জুন ও অক্টোবরে সংগঠিত সাম্প্রদায়িক সংঘাতের সময় সংখ্যালঘু মুসলমানদের হত্যার ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছে।
ওই সংঘাতে প্রায় ২০০ জন মানুষ নিহত হয়। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।