আমাদের এই প্রজন্মের অনেক বিপথগামী [ব্রেইনওয়াশড] ছেলে বেজন্মাদের পরহেজগার বুযুর্গ ভাবছে ।
তারা আবার মাঠে ঝাঁপ দিয়ে নামে তাদের কথায় ।
'উনারা খুব পরহেজগার মানুষ' - ওওওওও , তাই ??
হযরত ওকবা ইবনে খালেদ লাইসী (রাঃ) বলেন , রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক দল পাটাহিয়েছিলেন । তাঁরা এক কাফেরের কওমের উপর আক্রমণ করলেন । কাফেরদের মধ্যে এক লোক তীব্রবেগে হামলা করলে একজন মুসলমান তার পিছু নিলেন ।
লড়াই এর একপর্যায়ে যখন ওই মুসলমান সেই কাফেরকে মারতে উদ্যত হলেন তখন কাফের বলতে লাগল , 'আমি মুসলমান,আমি মুসলমান'
মুসলমান ব্যাক্তি তার এই কথায় কান না দিয়ে তাকে তালোয়ার দিয়ে হত্যা করেন ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এই কথা পৌঁছালে তিনি ওই হত্যাকারী মুসলমান সম্পর্কে অনেক কঠিন কথা বললেন । এই কথা ওই মুসলমান জানতে পেরে সে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে আসল । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তখন খোতবা দিচ্ছিলেন ।
সেই মুসলমান বলল , 'আল্লাহর কসম , সেই লোক তো শুধুমাত্র প্রাণে বাঁচার জন্য 'আমি মুসলমান'' কথাটা বলেছিল ।
'
নবী করিম (সাঃ) ওই লোক আর সেইদিকের সমস্ত লোক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে খুতবা দিতে থাকলেন ।
সেই হত্যাকারী মুসলমান একই কথা তিনবার বললেন ।
এবার হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকালেন । তাঁর চেহারাতে পরিষ্কার অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছিল । তিনি তিনবার বললেন , 'আল্লাহ তায়ালা আমাকে কোন মুমিন হত্যা করতে নিষেধ করেছেন ।
'
এটা গেল সাধারণ পর্যায়ের মুসলমানের কথা ।
এবার শুনুন সাহাবী(রাঃ) এর একটা ঘটনা ।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত , রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর এক সাহাবী দলকে তিনি পাঠিয়েছিলেন কোন এক কাফের গোত্রের মোকাবেলা করতে । ওখানে এক লোক মুসলমানদের বাহিনী দেখে 'আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ' পড়তে থাকেন । হযরত মেকদাদ (রাঃ) তাকে হত্যা করে ফেলেন ।
এই খবর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে পৌঁছলে তিনি হযরত মেকদাদ (রাঃ) কে ডেকে আনলেন এবং তাকে বললেন , 'হে মেকদাদ , তুমি এমন ব্যক্তিকে হত্যা করেছ যে কালেমা পড়ছিল ? কাল কেয়ামতের দিন এই কালেমার দাবীর মোকাবেলায় তোমার কি উপায় হবে ? (কালেমা দাবী করবে ওই ব্যক্তি আমাকে পাঠ করেছিল)'
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা এই আয়াত নাযিল করেন -
"হে ঈমানদারগণ , যখন তোমরা আল্লাহর রাস্তায় বের হও তখন প্রত্যেক কয়াজকে যাচাই কর এবং এমন ব্যক্তিকে যে তোমাদের সামনে (আল্লাহর প্রতি) আনুগত্য প্রকাশ করে - এরূপ বল না যে ,তুমি মুসলমান নও , তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর "
ভাই , চিন্তা করে দেখুন ! সাহাবী ! আল্লাহ যাঁদের প্রতি রাজি ও খুশি ! সাহাবী মেকদাদ রাযিআল্লাহু তায়ালা আনহু । সেই মেকদাদ (রাঃ) কে বলা হল - কেয়ামতের দিন এই কালেমার দাবীর বিনিময়ে কি বলবেন তিনি ?
আসুন এবার তাকাই ১৯৭১ সালের দিকে ।
পাকিস্তানীদের ধারণা ছিল 'এরা তো অর্ধেক হিন্দু ! আমাদের যুদ্ধ কাফেরদের বিরুদ্ধে । ভারতীয় দালালদের বিরুদ্ধে । '
আমাদের সাধারণ জনতা রাতে ঘুমাচ্ছিল , তাদের হঠাৎ হামলা করে গুলি করে সবাইকে মেরে ফেলছিল ২৫ মার্চ রাতে !!
তারপর তারা কালেমা জিজ্ঞাসা করত , প্যান্ট খুলে চেক করত মুসলমান কি না ।
তখন হিন্দুরা কালেমা পড়লেও তাদের প্যান্ট খুলেই তাদের গুলি করে মেরে ফেলত ।
আর ওই মিলিটারি বাহিনীকে সাহায্য করছিল এই রাজাকাররা ।
‘আমরা দেশকে সাহায্য করছি , ধর্মের পক্ষে কাজ করছি’ – অন্যদের বলত তারা ।
রাজাকারদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয় । তারা মেরে ফেলে অসংখ্য বাঙ্গালীকে ।
ও , তোমরা ধর্মের কথা বল ??? নিরীহ মানুষ মেরে ধর্মের কথা বল ?
মেয়েদের ইজ্জত নষ্ট করে ধর্মের কথা বল ?
আচ্ছা , হিন্দুদের মেরে খুব নেকী পেয়েছ , না ???
আর মুসলমানদের মেরে ফেলেছিলা যখন তখনও তোমাদের একটুও হাত কাঁপেনি ।
তোমরা যেহেতু ধর্মান্ধ , ফ্যানাটিক , সুতরাং আমি শুধু ধর্মের কথাই লেখছি । @জামাত + শিবির ।
একজন সাহাবী ! আল্লাহ তাঁদের প্রতি রাজি ।
তিনি , একজন কাফেরকে [নামেও মুসলমান না , কাজেও মুসলমান না] হত্যা করলেন দেখে আল্লাহ তায়ালা সহ্য করলেন না ।
তিনি আয়াত নাযিল করে সতর্ক করে দিলেন । কোরআনের অংশ ভাই !! এক একটা আয়াত !
আয়াত নাযিল হল !!
আর ওই সব মুসলমান কি জীবনে একবারও কালেমা পড়েন নি ? যাদের রাজাকার আর পাকিস্তানের মিলিটারি মেরে ফেলেছিল ? ১৯৭১ এ ? তাঁরা কালেমা একদিনও , একবারও পড়েন নি ? এক আধ রাকাত নামায পড়েন নি ? জুম্মার নামায ঈদের নামায পড়েছেন তো অন্তত ? কোরআন পড়া শিক্ষা করেছেন তাঁরাও ছোট থাকতে ।
একজন কাফের , যে প্রাণের ভয়ে কালেমা পড়ল , তাকে হত্যা করায় আল্লাহ , আল্লাহর রাসূল (সাঃ) অসন্তুষ্ট হয়ে গেলেন । আর যে আসলেই ঈমান এনেছিল , সাথে কিছুমাত্র আমলও করেছিল – সে কি একজন কাফের থেকে বেশি ঈমানদার না ?
ওই কাফেরের হাতে তালোয়ার ছিল ভাই , সাহাবাদের হাতেও তালোয়ার ছিল । ফেয়ার ফাইট হয়েছিল ।
তারপরও কালেমা পড়া ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য আল্লাহ আয়াত নাযিল করে দিলেন !
আর আমাদের বাঙ্গালীদের ?
নিরস্ত্র ! কুকুরের মত গুলি করে মারছে ।
ওই রাজাকাররা , অনেকে আজ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর নেতা ।
সুন্নতী পোষাক পরনে , পাঁচ ওয়াক্ত নামায পরছে , পড়াচ্ছে । আল্লাহর হুকুম আহকাম খুব মেনে চলছে ।
আর আমাদের তরুণ প্রজন্মের কিছু অংশ , ‘এরা খুবই পরহেযগার ।
ছি ছি , এদের রাজাকার কেন বলা হচ্ছে ?’ টাইপ কথা বলছে !!
আল্লাহর রাসূল কি ব্যবহার করেছিলেন এক কাফেরকে হত্যার জন্য ??
সাহাবী(রাঃ) এর সাথে !
আর এরা আমাদের মুসলমান ভাইদের মেরে ফেলেছিল ।
এরা কি সাহাবী(রাঃ) দের থেকেও বেশি আল্লাহর প্রিয়পাত্র ?
আল্লাহ তায়ালার সবচেয়ে প্রিয় বান্দা ভাই এই সাহাবী(রাঃ) গণ ।
এদের [রাজাকারদের] পক্ষ নেয় যে/যারা তার কি ইসলাম সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান আছে ??
না শুধু মওদূদীর বই পড়ে পড়ে তারা ইসলাম জেনে বুঝে যাচ্ছে ??
আল্লাহ আমাদের মাফ করুন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।