জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা কী দেখছি ? স্থানীয় সরকারকে পঙ্গু করে সর্বত্র এমপিদের রাজত্ব চালু করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেবল উপজেলা নয়, পৌরসভাও এমপিদের আন্ডারে দেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। দুর্নীতিকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কুক্ষিগত রাখার জন্যই এটা করা হচ্ছে।
দুদককে বেকার করে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে দুদক কোন প্রকাশ্য কার্যক্রমে আসছে না।
তারা একটি স্থবির ও অথর্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চলেছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের শর্তানুযায়ী তাদের চূড়ান্ত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়ার কথা। সেটা এখন পালন করেনি কোন রাজনৈতিক দল।
বেকারদের চাকুরি দেয়ার কথা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকলেও সরকার বেকারদের চাকুরি না দিয়ে তাদের দলীয় ক্যাডারদের চাকুরি দিচ্ছে প্রকাশ্যে ঘোষণা করে। মনে হয়, এই দেশে সরকারী দল করা ছাড়া আর কোন যোগ্যতা দরকার নাই চাকুরি পাওয়ার জন্য।
রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারের নাম করে একে একে দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যহতির পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে ফেলেছে রাজনীতিবিদরা। যেন তারা কখনও কোন দুর্নীতি করেনি, অনর্থক বাংলাদেশ দীর্ঘ ৫ বছর দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ছিল।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকারের ৫টি বিয়য়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছিল। দুদকের কার্যক্রম বন্ধ ও কালো টাকা সাদা করার নামে অবৈধ টাকা সাদা করার অবাধ সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে তারা সেই ওয়াদা থেকে বহু আগেই সরে এসেছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, একজন জেনারেলের পকেট থেকে অবৈধভাবে জন্ম নেয়া একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি এখন আরেকজন জেনারেলের বিচারের জন্য মাঠে নেমেছে।
তাদের অভিযোগ জেনারেল মউন উ আহম্মেদ তাদের উপর অন্যায় আচরণ করেছে - তারা ধোঁয়া তুলসি পাতা।
ক্ষমতার সিঁড়ি পাওয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক দল এখনও যুদ্ধাপরাধীদের তাদের জোটে টেনে রেখেছে এবং স্বাধীনতার সপক্ষের দল বলে দাবিকারী দলটি আরেক জেনারেল পতিত স্বৈরাচারকে জোটে ধরে রেখেছে। এদের নীতি নৈতিকতার কোন বোধ নাই। রাজনীতিতে শেষ কথা নাই বলে এরা যে কোন অনাচার করতে অভ্যস্থ। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ, চামচাতন্ত্র ইত্যাদি করে এরা গণতন্ত্রের জয়গান গায়।
ক্ষমতার জন্য যাকে দরকার তাকে কাছে টানছে, প্রয়োজন ফুরালে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছে।
এক সময় এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার কুটচালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করার দাবিতে দীর্ঘদিন হরতাল জ্বালাও পোড়াও করে আমাদের জ্বালিয়ে মেরেছে, সেই আওয়ামী লীগই এখন তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থার অবসান চায়। যথারীতি তাদের বিরোধী দল বিএনপি সেই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কঠোর বিরোধী হলেও এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একনিষ্ঠ সমর্থক। ক্ষমতা কুক্ষিগত করার স্বার্থে তারা বার বার ফর্মুলা বদলায়, বার বার রং বদলায়।
জরুরি অবস্থা জারি ও গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এদের পারস্পরিক অবিশ্বাস, মারামারি, অরাজকতা, দায়িত্বহীনতা ও ক্ষমতার লোভের ফল।
নিজের দলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করে তারা গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে চিৎকার করে আমাদের বোকা বানিয়ে রাখে। গণতান্ত্রিক এসব দলে দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, কালো বাজারি, টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, চামচা ও সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্যে কোন সৎ ও ভালো মানুষ টিকতে পারে না। কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে খারাপ মানুষদের নেতা বানানোর অদৃশ্য খেলা সবসময় চলতে থাকে। ফলে রাজনৈতিক দলে ভালো মানুষের সংখ্যা নগণ্য এবং যারা আছে তারা কোণঠাসা।
আমাদের ভাগ্য ভালো একজন জেনারেল মইন উ আহমেদ আগের জেনারেলদের মতো ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসেননি।
হ্যা, না ভোটের নাটক করেননি। সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে যাননি। জেনারেল জিয়া বা পতিত এরশাদের মতো রাজনৈতিক দল গঠন করে গণতন্ত্রী সাজেন নি। বরং তাদের ক্ষমতালিপ্সার আগুন থেকে দেশকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছেন। দুঃখজনকভাবে তার সেই চেষ্টা সফল হয় নি।
কেননা, যে দেশে সবাই অন্ধ, সেই দেশে কানাই রাজা হয়। আমাদের দেশের বার বার এ কথা প্রমাণিত হয়েছে। এই দেশে যতদিন পর্যন্ত জনগণ অন্ধ থাকবে, তত দিন পর্যন্ত এই কানাদের রাজত্বই চলবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।