আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অন্ধের দেশে কানাই রাজা হয় - ০১

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

ঢাকা শহরে যে কোন সিএনজিচালিত অটো রিক্সায় উঠবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন যে, এই গাড়ির দাম কত ? তারা জানাবেন, গাড়ির দাম তো লাখ টাকার বেশি হওয়ার কথা না, কিন্তু এই গাড়ি কিনতে হয়েছে আড়াই লাখ টাকায়। - লাখখানেক টাকার গাড়ি কেন আড়াই লাখ হল ? - বাকি টাকা নাজমুল হুদায় খাইছে। এই হল আমাদের বেহুদা নামে বিখ্যাত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দুর্নীতি সম্পর্কে প্রচলিত কথা। এই সিএনজিচালিত অটোরিক্সা ক্রয়ে দুর্নীতির দায়ে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী নাজমুল হুদা, বিআরটিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান এড. তৈমুর আলম খন্দকারসহ কয়েকজনকে আসামী করে দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন নেতাকর্মীর বিপক্ষে করা মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ১১টি মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ১১টি মামলার মধ্যে কয়েকটি দুর্নীতির মামলা। সারা দেশে প্রায় ৩১ হাজার মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন পড়েছে এবং সেগুলো প্রত্যাহারের জন্য যাচাই বাছাই চলছে। এই সব মামলার মধ্যে অনেক মামলাই দুর্নীতির মামলা। আজ পত্রিকায় পড়লাম জেনারেল মইন উ আহম্মেদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ ৪ মামলা করবেন নাজমুল হুদা।

পড়ে বেশ মজা লাগল। কেন মজা লাগল সেটা একটু ব্যাখ্যা করে বলি। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যত্থানে স্বৈরাচার সেনাশাসক এরশাদের পতন হলে আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জয়যাত্রা শুরু হয়। সেই সাথে আওয়ামী লীগের আগ্রহে প্রথমবারের মতো দেশে একটি তৎকালীন প্রধান বিচারপতিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় আনার মাধ্যমে অনির্বাচিত সরকার উপহার দেয় দেশের বর্তমান ২টি প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। সেই অনির্বাচিত সরকার আয়োজিত ভোট গ্রহণের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

সেই সাথে অনির্বাচিত সরকার ব্যবস্থার ওখানেই শেষ হয়। কিন্তু শেষ হইয়াও হইল না শেষ। বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগ রাজপথে আন্দোলন শুরু করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য । বিএনপি মানে না। পুরো বিএনপি সরকারের সময়টা হরতালসহ নানা রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে।

বিএনপি মানে না। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি সাধারণ নির্বাচন দেয়। আওয়ামী লীগ ওই নির্বাচন বয়কট করে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পরস্পর বিরোধী অবস্থানে তখন দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে ওয়াকওভার পেয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি।

মাত্র ১১ দিন ক্ষমতায় ছিল সেই সরকার। সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পাস করে সেই সরকার পদত্যাগ করে। বিচারপতি হাবিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হন। নির্বাচিত হয়ে আসে আওয়ামী লীগ । ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছেড়ে দিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন বিচারপতি লতিফুর রহমান।

এবার ক্ষমতায় আসে বিএনপি। আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য বিএনপি একটু চালাকি করে এবার । বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স ২ বছর বাড়িয়ে ৬০ বছর করা হয়। ফলে যেই বিচারপতির তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা, তার সম্পর্কে আপত্তি জানায় আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সন্দেহ উনি বিএনপির লোক।

তারপর ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির ক্ষমতা ত্যাগের দিন ঘটে এদেশের নারকীয় সহিংসতার ঘটনা। আওয়ামী লীগের লগি বৈঠা আন্দোলনে দেশ অচল হয়ে পড়ে। সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতি প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। ( চলবে) বেহুদা চাচার হুংকার হুংকার নং - ২ হুংকার নং - ৩ হুংকার নং - ৪

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।