আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাতাসে মালতীর নিঃশ্বাষের গন্ধ ভেসে বেড়ায়



ও ছিল আমার ছোট চাচার বড় মেয়ে আমরা একই ক্লাশে পড়তাম। স্কুলে যেতে যেতে আমরা কতইনা দুষ্টমি করতাম। ঢাঁলীদের গাছ থেকে পেয়ারা চুরি, ব্যাপারির গাছের আম এখানেই থামতামনা আমরা! পাটের শলার মাথায় আঠা লাগিয়ে ঘাষ ফড়িং ধরা, তিলের খেত থেকে মৌমাছি, পশ্চিমের বিল থেকে শাপলা তোলা সবই করতাম এক সাথে। বেলি ছিল ওর প্রিয় ফুল বেলি ফুল পেলে ও যে কি খুশি হত। আজও ওর কথা মনে হলে সেই খুশি মুখটি ভেসে ওঠে।

- শরতের শেষ বিকেলে আমি আর মালতি যাচ্ছি ঘুড়ি উড়াতে আজ আমাদের ঘুড়ি কাটা-কাটি খেলা। হঠাৎ দেখি মালতির পায়ে রক্ত! সেকি কোথাও কেটে গেলো না তো? নাটাই ছুড়ে মালতি ছুটে গেল ওর মায়ের কাছে। তার পর থেকে মালতিকে যখন খেলতে যেতে বলতাম ও বলতো আমি বড় হয়েছি তুই যা। আমরা তো একই কাশে পড়ি, একই স্যারের কাছে, তাহলে তুই বড় হলি কিভাবে? মলতি বলতো- জানিনা! আমি আর মালতি একই আকাশের নিচে একই নত্রপুঞ্জির আলোয় বড় হতে থাকলাম মুদ্রার এ পিঠে আর ও পিঠে। যেখানে ইচ্ছা করলেই আগের মতো মালতিকে কাছে পেতামনা যেখানে ইচ্ছা করলেই ওর হাতে বেলি ফুল দিতে পারতামনা।

- অনেক দিন পর পুরনো বাড়িটা উৎসরের সাজে সজ্জ্বিত হল। কাঁচা হলুদের গন্ধ এসে অস্তির করে তুলল মনটা সহসা বিদ্রোহ করে ওঠলো পাগলামি শুরু করলাম আমি- মালতিকে আমার চেয়ে কে বেশি ভালবাসে? কেউ কি আমার চেয়ে বেশি ভালবাসতে পারে? - ভেবেছিলাম- মালতিকে ছাড়া আমি একদিনও বাঁচবোনা কিন্তু কি আশ্চর্য! যে বাতাসে মালতির নিঃশ্বাষের গন্ধ ভেসে বেড়ায় সে বাতাস বক্ষে ধারণ করে আমি আজও বেচে আছি! এবং অবলিলায় বলছি ভাল আছি!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।