স্বাগতম
হজ্বের সফরে বের হওয়ার পূর্ববর্তী কার্যাবলী
১. নিজ পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের ভাল কাজ করা ও মন্দ কাজ বর্জন করার উপদেশ দেয়া।
২. নিজের নিকট কারো ঋণ থাকলে বা অন্যের নিকট কোন পাওনা থাকলে তা লিখে পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া।
৩. পরিবার যাতে সুন্দরভাবে চলতে পারে এমন ব্যবস্থা করে যাওয়া।
৪. সকল প্রকার পাপ থেকে খালেসভাবে তাওবা করা।
৫. অন্যায়ভাবে অর্জিত সম্পদ তার প্রাপকের নিকট ফিরিয়ে দেয়া।
৬. হজ্জের ব্যয়ভার ও অর্থ হালাল রিযিক থেকে চয়ন করা।
৭. একজন সৎ ও যোগ্য লোককে বন্ধু হিসেবে নির্বাচন করা, যে তার কল্যাণ কামন করবে এবং তাকে সহযোগিতা করবে।
৮. হজ্ব ও উমরা সংক্রান্ত জ্ঞান অর্জন করা এবং কোন ব্যাপারে সন্দেহ হলে আলেমদের কাছ থেকে জেনে নেয়া।
৯. মনে মনে নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর প্রতিজ্ঞা করা।
ক. কখনো গুনাহ বা পাপকাজে লিপ্ত না হওয়া
খ. মহানবীর সুন্নাত পালন করা
গ. আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে হজ্ব করা এবং তার সন্তুষ্টি কামনা করা।
ঘ. সর্বদা ইবাদত করবো বলে পাপমুক্ত নিয়্যত করা
ঙ. ঝগড়া-বিবাদ, পরনিন্দা, অপপ্রচার ইত্যাদি পরিহার করা।
১০. সফরে বের হওয়ার পূর্বে আত্বীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও পরিচিত লোকদের নিকট থেকে বিদায় নেয়া।
মিকাত থেকে এহরাম বাঁধা
মিকাতে অবতরণ করার সুযোগ থাকলে সেখান থেকে এহরাম বাঁধা উত্তম। অন্যথায় মীকাত অতিক্রম করার পূর্বে এহরাম বাঁধা। বাংলাদেশীদের জন্য মীকাত হল ‘ইয়ালামলাম'।
যেহেতু সেখানে অবতরণ করা সম্ভব নয় সেহেতু বিমানে উঠার পূর্বে অথবা বিমানে উঠার পর ইহরাম বাঁধতে হবে। তবে যারা হজ্ব বা উমরা ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে জেদ্দা বা সৌদি আরবের অন্য কোন স্থানে যাচ্ছেন এবং কাজ করে করার পর হজ্ব বা উমরা করা ইচ্ছা পোষণ করছেন তাদের জন্য বিমান বন্দর থেকে এহরাম বাঁধার প্রয়োজন নেই। তারা তাদের কাজ শেষ করার পর সে স্থানের নির্দিষ্ট মীকাত থেকে এহরাম বাঁধবেন। অনুরূপভাবে যারা প্রথমে মদীনা শরীফে যাবেন তাদেরও এহরাম বাঁধার প্রয়োজন নেই। বরং তারা মদীনা থেকে মক্কায় যাওয়ার সময় মদীনার মীকাত থেকে তাদের নিয়্যতানুযায়ী এহরাম বাঁধবেন।
মীকাতে পৌঁছার পর করণীয়
এহরামের নিয়্যতকারীর উপর নিম্নোক্ত বস্তুসমূহ হারাম হয়ে যাবে:
১. নারী-পুরুষ নিজের বা অন্যের চুল কাটা বা মাথা মুণ্ডানো।
২. নখ কাটা।
৩. সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৪. পুরুষের জন্য সেলাইযুক্ত কাপড় পরিধান করা।
৫. পুরুষের জন্য মাথা ঢাকা।
৬. মহিলাদের জন্য চেহারা ঢাকা পর পুরুষের মুখোমুখী হওয়া ছাড়া।
৭. স্থলপ্রাণী শিকার করা।
৮. নিজে বিবাহ করা বা অন্যকে বিবাহ দেয়া।
৯. সহবাস করা।
১০. যৌনপথ ছাড়া অন্য কোন পন্থায় শাহওয়াত পূর্ণ করা।
১১. হারাম শরীফের গাছ-গাছালী কর্তন করা, তবে এটি এহরামকারী ও অন্যান্য সকলের জন্য নিষিদ্ধ।
যানবাহনে উঠার পরবর্তী দোয়া
যানবাহনে উঠার পর এ দোয়াটি পড়া মুস্তাহাব, “বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম, আল্লাহ আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, সুবহানাল্লাহি, সুবহানাল্লাহি, সুবহানাল্লাজী সাখখারা লানা হাজা ওমা কুন্না লাহু মুকরিনীন, ওয়াইন্না ইলা লাব্বিলা লামুনকালিবুন। আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফী সাফারিনা আলবিররা ওয়াত্তাকাওয়া ওয়ামিনাল ‘আমালে মা তারদা। আল্লাহুম্মা হাওয়্যিন আলাইনা সাফারানা, হাযা, ওয়াতয়ি আন্না বু'অদাহ। আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফীস সাফারি ওয়ালখালীফাতু ফিল আহলি।
আল্লাহুম্মা ইন্না না'উযুবিকা মিন ওয়া'অসাইস সাফারি ওয়াকাআবাতিল মানযার ওয়াসূইল মুনকালিব ফীল আহলে ওয়ালমালি ওয়ালওয়ালাদি। ”
গন্তব্যস্থলে পৌঁছার পরবর্তী দোয়া
আর যখন গন্তব্যস্থানে পৌঁছবে তখন হাজীসাহেব যে দোয়া পড়বেন তা হল, “আ'উযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শারির মা খালাকা। ”
হজ্বের ওয়াজিবসমূহ
হজ্বের ওয়াজিব সাতটি যথা:
১. মীকাত থেকে এহরাম বাধা।
২. মুযদালিফায় রাত্রিযাপন করা।
৩. ৯ তারিখের সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘আরাফাতে অবস্থান করা।
৪. মিনায় রাত্রি যাপন করা
৫. মাথা মুণ্ডানো অথবা চুল ছোট করা। তবে মাথা মুণ্ডানোই উত্তম। কারণ তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনবার দোয়া করেছেন।
৬. কংকর নিক্ষেপ করা।
৭. তাওয়াফুল বিদা'অ করা।
হজ্বের সুন্নাতসমূহ:
১. এহরাম বাধার পূর্বে গোসল করা।
২. এহরাম বাঁধার পর তালবিয়া পাঠ করা।
৩. এফরাদ ও কিরান হজ্বের নিয়্যতকারী তাওয়াফে কুদুম করা।
৪. আরাফাতের রাত্রিতে মিনাতে রাত্রিযাপন করা।
৫. তাওয়াফে কুদুমে ইজতেবা'অ করা।
ইজতেবা'অ হল, এহরামের চাদর ডান বগলের নীচ দিয়ে এনে বাম কাঁধে জড়ান।
৬. প্রথম তিন চক্কর রামল করা। রামল হল, বীরদর্পে হাত দুলিয়ে দ্রুতপায়ে চলা।
মক্কার হারাম শরীফ তথা বাইতুল্লাহতে পৌঁছার পর হাজী সাহেবের যা করণীয়
১. এফরাদ হজ্জের নিয়্যতকারী তাওয়াফে কুদুম তথা বাইতুল্লাহর চারদিকে সাত চক্কর মারা। আর তামাত্তু'উ ও কিরান হজ্বের নিয়্যতকারী উমরার তাওয়াফ করা।
২. সম্ভব হলে মাকামে ইবরাহীমের পিছনে অন্যথায় যে কোন স্থানে দু'রাকাত সালাদ আদায় করা।
৩. যমযমের পানি পান করা।
৪. সা'য়ী করা তথা সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে সাত চক্কর মারা। সাফা পাহাড় থেকে চক্কর শুরু হবে এবং মারওয়া পাহাড়ে গিয়ে শেষ হবে। তামাত্তু'উ ও কিরান হজ্বের নিয়্যতকারী ‘উমরার সা'য়ী করবে।
আর এফরাদ হজ্বের নিয়্যতকারী হজ্বের সা'য়ী করবে। তবে এফরাদ হজ্বের নিয়্যতকারী চাইলে সায়ী ১০ তারিখের পরও করতে পারবেন।
৫. তামাত্তু'উ হজ্বের নিয়্যতকারী মাথা মুণ্ডন করে অথবা চুল ছোট করে প্রাথমিক হালাল হওয়া আর এফরাদ ও কিরান হজ্বের নিয়্যতকারী এহরাম অবস্থায় ৮ তারিখ পর্যন্ত মক্কায় অবস্থান করবে।
৮ তারিখের কার্যাবলী
তামাত্তু'উ হজ্বের নিয়্যতকারী ফজরের সালাতের পর মসজিদ বা মক্কার বাসস্থান থেকে হজ্বের এহরাম বেধে এবং এফরাদ ও কিরা হজ্বের নিয়্যতকারী তাদের পূর্বোক্ত এহরামের সহিত মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা এবং সেখানে ফজর, যোহর, আসর, মাগরিব, ইশা ও ৯ তারিখের ফজরের সালাত আদায় করা।
৯ তারিখের কার্যাবলী
১. ফজরের পর আরাফাতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা, সেখানে জোহর ও আসরের সালাত আদায় করা এবং বেশি বেশি যিকির, দোয়া ও তেলাওয়াত করা (সূর্যাস্ত পর্যন্ত)।
২. সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা এবং সেখানে মাগরিব ও ইশার সালাত আদায় করে ফজর পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
১০ তারিখের কার্যাবলী
১. ফজরের পর সূর্যোদয়ের পূর্বে জামরাতুল আকাবাতে পাথর মারার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করা এবং দ্বিপ্রহরের পূর্বে পাথর মারা। যারা অপারগ তারা দ্বিপ্রহরের পর পাথর মারলেও চলবে। যদি এমন কেউ থাকে যে তার পক্ষে কিছুতেই জামরাতুল আকাবাতে গিয়ে পাথর মারা সম্ভব নয় সে অন্য কাউকে পাথর মারার দায়িত্ব দিতে পারবে।
২. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছোট করে প্রাথমিক হালাল হওয়া।
৩. সম্ভব হলে তাওয়াফে ইফাদাহ করা। অন্যথায় ১১/১২ তারিখেও করা যাবে।
৪. সম্ভব হলে তামাত্তু'উ ও কিরান হজ্বের নিয়্যতকারী হজ্বের সা'য়ী করা। আর এফরাদ হজ্বের নিয়্যতকারী আগে সা'য়ী না করে থাকলে সা'য়ী করা। তবে চাইলে সা'য়ী ১১/১২ তারিখেও করা যাবে।
৫. মক্কায় গিয়ে থাকলে মিনাতে রাত্রিযাপনের জন্য প্রত্যাবর্তন করা।
১১-১২ তারিখের কার্যাবলী
১. দ্বিপ্রহরের পর তিন জমরাত (ছুগরা, উসতা ও কুবরা) এ পাথর নিক্ষেপ করা।
২. ১৩ তারিখে তাওয়াফুল বিদার উদ্দেশ্যে মক্কায় আসা এবং বিদায়ের পূর্বে তাওয়াফুল বিদা করে হজ্বের কার্য পূর্ণভাবে সম্পন্ন করে পরিপূর্ণ হালাল হয়ে যাওয়া।
বাইতুল্লাহ শরীফের বৈশিষ্ট্য
১. এখানে সালাত আদায় করা অন্যান্য মসজিদে সালাত আদায় করার চেয়ে ১ লক্ষ গুণ বেশি সওয়াব।
২. এ ঘরটি বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট ঘর।
৩. এটি সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলমানদের কিবলা।
৪. এটির দিকে হজ্বকে ওয়াজিব করা হয়েছে।
৫. যে এটি যিয়ারতের কামন করে তার জন্য সাওয়াবের সুসংবাদ রয়েছে।
৬. যে এতে প্রবেশ করবে সে নিরাপদ।
৭. যে এতে কোন প্রকার অনিষ্টতার চিন্তা করবে তাকে তার শাস্তি দেয়া হবে।
মহান রাব্বুল আলামীন বলেছেন, “আর যে কেউ এতে অন্যায়ভাবে সীমালংঘন করবে আমি তাদের কঠিন শাস্তি আস্বাদন করাবো। ” (সূরা আল হজ্ব: ২৫)
৮. এর আশপাশের গাছগাছালী কর্তন করা হারাম।
৯. এতে কোন প্রাণী শিকার করা হারাম।
উমরার হুকুম
উমরা বিশুদ্ধ মতানুযায়ী সুন্নাত। কেননা হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উমরা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল সেটি কি ওয়াযিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ওয়াযিব না, তবে তুমি উমরা করলে ভাল।
” (সুনান তিরমিযী)
উমরার কার্যাবলী
১. মিকাত থেকে উমরার নিয়্যত (মক্কায় অবস্থানরত ব্যক্তি মক্কায় অবস্থিত মসজিদে আ'য়িশা তথা তান'ঈম থেকে এহরাম বেধে বাইতুল্লাহতে এসে তাওয়াফ, সা'ঈ ও অন্যান্য কার্য আদায়ের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করতে হবে। )
২. তাওয়াফ করা।
৩. দু রাকাত সালাত আদায় করা (সম্ভব হলে মাকামে ইবরাহীমের নিকটে আদায় করা, অন্যথায় মসজিদের যে কোন স্থানে আদায় করলেই চলবে)
৪. জমজমের পানি পান করা।
৫. সা'ঈ করা।
৬. মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা।
৭. ইহরাম থেকে হালাল হওয়া।
মদীনা শরীফের যিয়ারত
মসজিদে নববী যিয়ারতের নিয়ত করে আপনি মদিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। মদিনায় প্রবেশের সময় মদিনায় ইসলামের যে ইতিহাস বনেছে তা স্মরণ করবেন। মক্কার মতো মদিনাও পবিত্র। তাই মদিনায় গিয়ে যাতে আপনার দ্বারা কোনো বেয়াদবি না হয়, কোনো গুনাহ-পাপে লিপ্ত না হন, সে জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন।
মদিনায় আপনার হোটেল বা বাসায় গিয়ে মালপত্র রেখে সামান্য বিশ্রাম করে নিন। এরপর মসজিদে নববীতে চলে যান।
মসজিদে নববীতে প্রবেশ
যে কোনো দরজা দিয়ে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করতে পারেন। প্রবেশের সময় ডান পা আগে দিন। আল্লাহর নাম স্মরণ করুন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ পাঠ করুন। আল্লাহ যেন আপনার জন্য তাঁর রহমতের সমস্ত দরজা খুলে দেন সে জন্য দোয়া করুন। মসজিদে প্রবেশের পর, বসার পূর্বে তাহিয়াতুল মাসজিদের দু' রাকাত সালাত আদায় করুন। রাওজাতুল জান্নাতে মসজিদের মেহরাবের কাছে সাদা ও সবুজ কার্পেট বিছানো জায়গায় আদায় করতে পারলে ভালো। কেননা রওজা শরীফ পবিত্রতম একটি জায়গা, জান্নাতের বাগান হিসেবে হাদীসে যার পরিচয় এসেছে।
রওজায় জায়গা না পেলে যে কোনো স্থানে তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করুন। এরপর লাইন ধরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র কবরের দিকে এগিয়ে যান।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর দুই সাথীর কবর যিয়ারতের আদব
১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র কবরের সামনে এলে আদবের সাথে দাঁড়ান। দাঁড়ানোর সুযোগ না পেলে চলমান অবস্থাতেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি সালাম পেশ করুন, বলুন “আসসালামু আলাইকু আইয়ুহান নাবীউ, ওয়ারাহমাতুল্লাহি ও ওয়াবারাকাতুহ। ”
২. এরপর সামনের দিকে এক গজ পরিমাণ এগিয়ে যান।
এখানে আবুবকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন “আস্সালামুআলাইকা ইয়া আবা বকর, আস্সালামু আলাইকু ইয়া খলীফাতা রাসূলিল্লাহ ফি উম্মাতিহি, রাদিআল্লাহু আনকা ওয়া জাযাকা আন উম্মাতি মুহাম্মাদিন খাইরা। ” এরপর আরেক গজ সামনে আগান। এখানে উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর প্রতি সালাম পেশ করুন। বলুন “আস্সালামুআলাইকা ইয়া উমার, আস্সালামু আলাইকা ওয়া আমীরুল মুমিনীন, রাদিয়াল্লাহু আনকা ওয়া জাযাকা আন উম্মাতি মুহাম্মাদিন খাইরা।
”
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র কবর যিয়ারতের সময় নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ
১. কবরের দেয়াল ছুঁয়ে বরকত নেয়া।
২. বিপদমুক্ত অথবা কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে প্রার্থনা করা।
৩. গুনাহ মাফ করানোর জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলা। করে যদি কেউ আল্লাহর কাছে গুনাহ মাফ চায়, এবং রাসূলুল্লাহও তাদের জন্য গুনাহ মাফ চান, তাহলে তারা নিশ্চয়ই আল্লাহকে তাওবা গ্রহণকারী ও দয়াময় পাবে।
হজ্ব পালনকালে যেসব ক্ষেত্রে নারী, পুরুষ থেকে ভিন্ন
১. পোশাক পরিচ্ছদ
এহরামের ক্ষেত্রে নারীর আলাদা কোনো পোশাক নেই।
শালীন ও ঢিলে-ঢালা পর্দা বজায় থাকে এ ধরনের যে কোনো পোশাক পরে নারী এহরাম বাঁধতে পারে। এহরাম অবস্থায় সেলাইযুক্ত কাপড় পরা ও মাথা আবৃত করা পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ হলেও নারীর জন্য নিষিদ্ধ নয়। তবে এহরাম অবস্থায় নেকাব বা অনুরূপ কোনো পরিচ্ছদ দিয়ে চেহারা ঢাকা বৈধ নয়। হাদীসে এসেছে, ‘নারী যেন নেকাব না লাগায় ও হাতমোজা না পরে। (সহীহ বুখারী) তবে এর অর্থ এ নয় যে, বেগানা পুরুষের সামনেও নারী তার চেহারা খোলা রাখবে, এ ক্ষেত্রে ওলামাগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, মাথার উপর থেকে চাদর ঝুলিয়ে দিয়ে চেহারা ঢেকে নারীগণ বেগানা পুরুষ থেকে পর্দা করবেন।
২. পুরুষ মাহরাম
ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম আহমদের মতে নারীকে যদি সফরের দূরত্বে গিয়ে হজ্ব করতে হয় তবে মাহরাম সাথে থাকা শর্ত। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘মাহরাম ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে যেন একা না হয়। এবং নারী যেন মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার স্ত্রী আমার সাথে হজ্বের উদ্দেশ্যে বের হয়েছে, আর আমি যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্ব কর। (বুখারী ও মুসলিম
৩. তালবিয়া
নারীগণ উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়বেন না।
নিজে শুনতে পারে ও পাশে থাকা সঙ্গিনী শুনতে পারে এতটুকু উচ্চারণে নারী তালবিয়া পাঠ করবে।
৪. হায়েয
হজ্ব পালনকালে কোনো নারীর হায়েয এসে গেলে তার দুটি অবস্থা
এক. তাওয়াফে যিয়ারত তথা হজ্বের ফরয তাওয়াফ সম্পাদনের পর হায়েয শুরু হলে উলামায়ে কিরামের ঐকমত্যে হায়েযের কারণে তাকে আর বিদায়ী তাওয়াফ করতে হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।