আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে : একটি পর্যালোচনা



গতকাল একটি পোস্ট দিয়েছিলাম । সেখানে আমি কিছু প্রস্তাব রেখেছিলাম কিভাবে এ সংক্রান্ত কাজ এগিয়ে নেয়া যায় সে ব্যাপারে । লেখাটি আরো দুটো ব্লগে দিয়েছিলাম । আমার ব্লগের একজন সম্মানিত ব্লগার, যিনি গেদুচাচা নিকে লিখেন, আমার লেখাটির উপর একটি পর্যালোচনামূলক মন্তব্য করেন । তার মন্তব্যটি এখানে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি ।

আগামি- ব্লগের শক্তি কতটুকু ? গেদুচাচা–অনেক। আগামি-ক'জন পড়ে ব্লগ ? গেদুচাচা––অনেকেই পড়ে আর এর পরে যারা পড়তে পারে না তাদের কাছে ছড়িয়ে দেয়। ঘরে বাইরে আড্ডায় সব খানে ছড়িয়ে দেয়। আগামি-ব্লগের উদ্যোগে এ যাবৎকালে বড় কি সাফল্য এসেছে ? গেদুচাচা–ঠিক ঠিক বলা যাবে না, তবে প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষ ভাবে তো কিছু সাফল্য আসার কথা-ই। আগামি-ব্লগ কর্তৃপক্ষ কি সাহসী ? গেদুচাচা–অন্যদের কথা জানি না তবে আমারব্লগকে সাহসী বলে-ই মনে হয়।

আগামি-তাদের কি দেশের প্রতি দরদ আছে ? তারা ভালবাসে দেশকে ? দেশের মাটিকে ? মানুষকে ? গেদুচাচা–এই প্রশ্নগুলোই করা ঠিক হয়নি মনে হয়। দেশের প্রতি দরদ অবশ্যই আছে। আগামি-চলমান বৈশ্বিক ও রাষ্ট্রিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা দাঁড়াতে পারিনা । আমরা শক্তিমানের শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারিনা । আমরা ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার দর্প ভেঙ্গে দিতে পারিনা ।

আমরা পোস্ট মডার্ণ দাসত্বের জীবনে হেসে খেলে বেড়াই । আমরা সন্তুস্ট আমাদের দাসজীবনে । গেদুচাচা– তা ঠিক বৈ কি! তার পরেও এখনো অনেক মানুষ আছে যারা এর বাইরে জীবন যাপন করে। আগামি-তবু কিছু ব্যতিক্রম থাকে । এদের কারণে এখনো টিকে আছে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, মনুষ্যত্ব ।

বিবেকের ঘুণ ধরা দরজায় আঘাত হানুক নয়া কালবৈশাখী 'টিপাইমুখ বাঁধ' । গেদুচাচা-হ্যাঁ, এটা ঠিক বলেছেন। [আমি (আগামি) কিছু প্রস্তাব রেখেছিলাম সে প্রসংগে গেদুচাচার মতামত] আপনার প্রস্তাব গুলোতে আমার মতামত দিচ্ছিঃ ১.নেটের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা । এখানে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশীদের হত্যা করা, ফারাক্কার প্রভাব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের অনধিকার চর্চা সহ অন্যান্য আরো বিষয় স্থান পেতে পারে । - ভালো প্রস্তাব।

২.বাংলাদেশের বাইরে অবস্থানরত সকল বাংলাদেশীসহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে অবস্থিত মানবতাবাদী এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোকে এর সাথে সম্পৃক্ত করা । -এটাও ভালো প্রস্তাব। ৩.পৃথিবীর সকল রাস্ট্র ভারতের বন্ধু নয় । সুতরাং ভারতের বন্ধু নয় এমন রাষ্ট্রগুলোর কাছে বাংলাদেশের যৌক্তিক দাবীগুলো এবং ভারতের অন্যায়গুলো তুলে ধরা । প্রয়োজনে এদেশে অবস্থিত সকল বিদেশী দুতাবাসসহ অন্যান্য সংস্থায় স্মারকলিপি প্রদানের ব্যবস্থা করা ।

-এটার সাথে আমি একমত নই। কারণ ভারতের শত্রুর সাথে ফারাক্কা-টিপাইমুখ এর জন্য সাহায্য চাইতে হবে কেনো? ভারত তো আমাদেরও বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্তু বন্ধুত্বের অর্থ এই না যে আমার উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়া। বন্ধুত্ব মানে হচ্ছে সহযোগিতা। আর সেই সহযোগিতা যখন ভারত আমাদের করছে না তখন বিষয় টা আমাদের অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রকেও জানাতে পারি।

৪."একশন কমিটি এগেইনস্ট টিপাইমুখ ড্যাম" এর সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা । -ঠিক প্রস্তাব। ৫.যার যেখানে একসেস আছে প্রতিটি যায়গায় টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা । -ঠিক আছে। ৬. দেশের সরকারী বা বিরোধী সব দলের কাছেই এ ব্যাপারে স্পস্ট বক্তব্য চাওয়া এবং সব দলের পক্ষ থেকেই যেন ভারতীয় দুতাবাসে প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হয় এ ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করা ।

-ঠিক। তবে আমাদের একটা বদ খাসলত আছে তো, জাতীয় ব্যাপারে আমরা এক হতে পারি না। এই ইস্যুতে সরকারী বিরোধি দলের এক সাথে একই সুরে কথা বলা উচিত, রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু সেটা আমরা কতটা পারব এটাই চিন্তার বিষয়। ৭. বিশেষ করে যুক্তরাস্ট্র প্রবাসী বাংরাদেশীরা যেন এই ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা নেয় সে ব্যাপারে তাদের সাথে যোগাযোগ করা ।

- হ্যাঁ, তারা সেটা করতে পারেন। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সব চেয়ে বড় শক্তি সেহেতু তাদের দৃষ্টিগোচর করানো উচিত। সভা-সমাবেশ এবং সরকারের উভয় মাধ্যমেই তা করা উচিত। আপনার পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। আমাদের সবার উচিত এ বিষয়ে সিরিয়াসলী ভাবা।

আপনারা ঢাকার ব্লগাররা সমাবেশ করতে পারেন, আলোচনা সভা করতে পারেন, সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। আর আরেকটা বিষয় এই টিপাইমুখ বাঁধের ফলে কি কি ক্ষতি হতে পারে এই সব নিয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত যোগাড় করতে পারেন, বিভিন্ন ব্লগে, এই পোস্টে, বিভিন্ন পোস্টে বা কমেন্টে দিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারেন। ভারত আমাদের বন্ধু! তাই বলে কি আমি তার চাপিয়ে দেওয়া কিছু মেনে নেবো? কখনোই না। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, কর্ম পরিকল্পনা করতে হবে। ভারতের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং সকারের প্রতি এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

আপনাকে আবারো ধন্যবাদ এটা নিয়ে একটা পোস্ট দেওয়ার জন্য। এটা আমাদের জাতীয় ইস্যু এবং অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ বিষয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.