আমি এই আমাকে খুঁজে ফিরি সবার মাঝে………………….. তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত মুসলমান হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাকেই পছন্দ করে যা সে নিজের জন্য ভালো মনে করে। আল-হাদিস
সাইদুল ইসলাম,১২ বছর বয়সের একটা ছেলে,হতে পারত সে আমার ভাই,যার থাকার কথা ছিল বিদ্যামন্দিরের আঙ্গিনায়। সে কাজ করে একটা Aluminium factory তে। সকাল ৬ টায় তার দিন শুরু হয় বিপদজনক ভারী যন্ত্র চালানোর মধ্য দিয়ে। হাতে কলমের পরিবর্তে থাকে double ended wreench বা এ ধরনের কোন সরঞ্জাম,যে হাতে থাকার কথা বই সে হাতে থাকে lubricant এর বোতল,তার সময় কাটে acid বা alkali নিয়ে,আমরা University’র Laboratoryতে হাতে গ্লাবস, গায়ে এপ্রন দিয়ে অতি নিরাপদ পরিবেশে যে Chemicals নিয়ে কাজ করি আমাদের দক্ষ শিক্ষকদের তত্ত্বাব্ধানে সেই বিপদজনক Chemicals নিয়ে সাইদুলের মত শতশত কচি ছেলেরা কাজ খালি হাতে অতি বিপদজনক পরিবেশে,যে কোন মুহূর্তে তারা শিকার হতে পারে ভয়ংকর কোন দূর্ঘটনার।
সাইদুলের বাবা নেই, মা একটা বাসায় ঝিয়ের কাজ করে। ঘরে আছে ২ ভাই ২ বোন। তারা সকলেই ছোট। মা ঝিয়ের কাজ করে মাসে ৬০০ টাকা পায়,যার পুরটাই খরচ হয় বাসা ভাড়াতে। সাইদুল কাজ় না করলে পুরো পরিবারকেই উপোস দিতে হয়।
আমি কোন উপন্যাস লিখছি না,লিখলে হয়ত উপন্যাসের শেষে বিভিন্ন Chemicals এর প্রতিক্রিয়ায় সাইদুলকে মেরে ফেলতে হত। কিন্তু সত্যিই হয়ত বিষাক্ত chemicals এর প্রতিক্রিয়ায় ১২ বছরের শ্রমিক সাইদুলরা ৪০ বছর বয়সে বিভিন্ন রোগ শোকে মারা যাবে। ছোট বেলায় পড়েছিলাম আজকের শিশু আগামির ভবিষ্যৎ। এই সইদুলরা কি শিশুদের সংগার বাইরে?নাকি শিশু শুধু বড়লোকদের ভাগ্যবান সন্তানরা,সকল নাগরিক সুবিধা যাদের জন্য সীমাবদ্ধ?এই সাইদুল ও তো হতে পারত দেশের সম্পদ কিন্তু দরিদ্রতার কষাঘাত তাকে ধীরে ধীরে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর গহীন অন্ধকারের দিকে।
অনেককাল আগে সক্রেটিসকে Hemlock poison দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল,নিকট অতীতে নেপলিয়ানকে হত্যা করা হয়েছে Arsenic apply করে।
আর বর্তমানে সাইদুলদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে এই সব কারখানায় কাজ করতে দিয়ে।
এরা সারা দিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সপ্তান্তে পায় ২৫০ টাকা। কারখানার মালিকরা এই সব ছেলেদের শ্রমিক বানায় কারন এদেরকে নামমাত্র পারিশ্রমিক দিলেই চলে। Skillness এর দোহাই দিয়ে তাদের উপর চালান হয় শোষণ আর অবিচারের steam roller। সরকারী কর্মকর্তারা এসব বিষয়ের কি কিছুই জানেন না?নাকি সব কিছু জেনেও কিছুই করতে পারছেন না?নাকি কিছু করার কোন ইচ্ছাই নেই, এরা ছিন্নমুল শিশু বলে? মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বললেন এই মুহূর্তে সরকারের এ বিষয়ে কোন পরিকল্পনা নেই,কবে তারা পরিকল্পনা করবেন, ততদিন এই বাচ্চা ছেলেরা বেঁচে থাকবে তো ? একদিকে কারখানার মালিকরা এদের ব্যবহার করে মোটা অঙ্কের মুনাফা কামাচ্ছে, অন্যদিকে দেশের সরকার এক্ষেত্রে নিরব ভুমিকা পালন করছে।
অবিলম্বে সরকারের উচিত শিশু শ্রম বন্ধে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। হয়ত সমস্যাক্রান্ত এ দেশে কয়েকদিনে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না,তবুও সরকারী উদ্যোগ এ সমস্যা বহুলাংশে লাঘব করতে পারে,অন্তত ঝুকিপূর্ন কাজ থেকে শিশুদের রক্ষা করা খুব বেশি কঠিন কাজ নয়। আমরা কি চাই না এই বাংলার সকলশিশু বেড়ে উঠুক ঝুকি মুক্ত পরিবেশে,পাক একটা সুস্থ জীবন? (Referance: The Daily Star,Date 14.05.09)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।