...............হিস্টোরি অব ওয়ার্ল্ড এর ৩২৯১০ নং অনুচ্ছেদ থেকে।
২৭০৩; ২রা জানুয়ারি।
বিজ্ঞানি শিয়াও জাং এর নাম এদিনই প্রথম পৃথিবীর মানুষের সামনে আসে। গত ৫০০ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত আবিষ্কারটি ছিল তার।
শিয়াও জাং ইনস্টিটিউট তার পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, গবেষণাগারের বাইরে, এই প্রথম তারা সফল ভাবে মানব শিশুর জন্ম দিয়েছে।
কোন ধরনের কৃত্রিম প্রক্রিয়া ছাড়াই দীর্ঘ ৯ মাসের ক্লান্তিকর ধাপ পেরিয়ে জন্ম নিয়েছে মেয়ে প্রজাতির মানব শিশু- যার কোড নেম রাখা হয়েছে 'ডলি'। শিয়াও জাং আরো দাবী করেন, এই শিশুর জন্য শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিশিক্ত করা হয়েছে সনাতন পদ্ধতিতে!
এই ঘোষণার সাথে সাথে হই চই শুরু হয়ে গেলে ব্রিফিং ৩০ মিনিট বন্ধ থাকে। পরে আরো বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায়।
দ্বাবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে যখন মানব প্রজাতিকে বিপন্ন প্রাণীর অন্তর্ভূক্ত করা হয়; তার পর থেকেই প্রজনন বিপর্যয় বন্ধের জন্য শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে প্রজনন প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। রিবোলা, নানকিং, জুইনি ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীর জনসংখ্যা এক পর্যায়ে ৭০ মিলিয়নে এসে দাড়ায়।
কেবলমাত্র শারীরবৃত্তিয় কার্যকলাপের মাধ্যমে এসব রোগ ছড়াতো বলে; শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে, সে সময় সন্তান জন্মদান প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য এর আগেই ক্লোনিং, আইনানুগ ও ধর্মীয় স্বীকৃতি পেয়ে যাওয়ায়, সবাই বিকল্প খুঁজে পেয়েছিল। পরবর্তি ৫০০ বছরে বিজ্ঞান অনেকদূর এগিয়ে গেলে, মানুষ শারীরিক সম্পর্কেও অনভ্যস্ত হয়ে পড়ে। পুরুষ বা নারী বলে কোন ব্যবধানও তেমন একটা ছিলনা। বৃহনল্লা হিসাবে নিজেদের স্বীকৃতি দেয়াটা ফ্যাশনে পরিনত হয়।
তাই বিজ্ঞানি ডঃ শিয়াও জাং এর এই গবেষণা তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করে। সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় চারদিকে।
মৌলবাদিরা তীব্র প্রতিবাদ করে; ধর্ম ধ্বংসের ধুয়া তুলে। তাদের মতে এটা মানুষকে বিংশ শতাব্দির অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নেবার ষড়যন্ত্র! ধর্মীয় কলোনি গুলোতে নিয়মিত মিটিং, মিছিল করে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার শপথ নেয়া হয়।
উদারমনারা আবার এটাকে রেনেসার সাথে তুলনা করতে চায়।
তদের মতে এই মৃতপ্রায়, শোকেস বন্দী মানব সভ্যতাকে আবার স্বর্ণযুগে ফিরিয়ে নেবার এটাই শেষ সুযোগ।
দুপক্ষে দলাদলি ও কোন্দল জমে উঠতে সময় নেয়না। স্থানীয় প্রশাষনও নিরপেক্ষতা হারাতে থাকে। এই সুযোগে হিপ্পি টাইপ কিছু গোষ্ঠি গবেষণার কৌশল চুরি করে নিয়ে এই পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানের প্রক্রিয়াও শুরু করে! এরকম গোলযোগ চলতে থাকে প্রায় বছর জুড়ে। বিগত ৫০০ বছরে এমন অসহিষ্ণুতা আর কখনও দেখা যায়নি।
পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে সেন্ট্রাল কাউন্সিল শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয় হস্তক্ষেপে।
২৭০৪ এর ১লা জানুয়ারী জারী করা হয়, ঐতিহাসিক "বিলুপ্তপ্রায় মানব জাতি রক্ষা আইন ২৭০৮"!
রোবট কাউন্সিলের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়-
"সাম্প্রতিক বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলির কারণে 'সেন্ট্রাল রোবটিক কাউন্সিল ফর ওয়ার্ল্ড পিস' ( CRCWP)- এই মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করছে যে- মানবজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে, তারা এর সংখ্যা পুনরায় নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। র্যানডম সিলেকশন মেথডে আগামী ২৪ ঘন্টার ভেতরে বর্তমান জনসংখ্যা ১০০ মিলিয়ন থেকে কমিয়ে ৫০ মিলিয়নে নিয়ে আসা হবে। এ মর্মে আরো জানানো যাচ্ছে যে- এখন থেকে যেকোন গবেষণা কার্যক্রম সীমিত আকারে চালাতে হবে এবং তা একমাত্র CRCWP পূর্ব অনুমতিক্রমেই পরিচালিত হবে। এই প্রজ্ঞাপনের কারণে ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি CRCWP সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।
"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।