http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002
আমরা পরিবর্তন প্রিয় জাতি। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর আমরা পরিবর্তন চাই। ব্যাপারটা অপ্টিমিস্টিক। কিন্তু যাদের কাছে আমরা পরিবর্তন চাইছি তারা তো পরিবর্তিত কেউ নন, নতুন কেউ নন। ঘুরে ফিরে অপরিবর্তিত, সেকেলে , জীর্ণ-শীর্ণ কারো কাছেই পরিবর্তনের বইঠা তুলে দেই আমরা।
নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগ বেঁচতে চাইলো, দিনবদলের সনদ। আমাদের পরিবর্তনপ্রিয় মানসিকতার সরল চাওয়াটার ওপর ভিত্তি করেই তারা এগিয়ে গেলো। কিন্তু হিসেবটা ছিল অন্যখানে। আমরা কিসের পরিবর্তন চেয়েছিলাম? কিসের বদল চেয়েছিলাম? ক্ষমতার না বঞ্চনার! আর ভোটপ্রার্থীরা কোন দিন বদলের কথা বলেছিলেন? ক্ষমতার দিন বদল না দেশ ও জনগণের ভাগ্যবদল!! দু'পক্ষের চাওয়া পাওয়ার হিসেবটা কি মিসম্যাচড হওয়ার পথে?
দিনবদল: একটি সংজ্ঞাহীন সংজ্ঞা
আমি ব্যক্তিগত ভাবে দুজনের কথা এখানে উল্লেখ করতে চাই। একজন আমার এক বড়ভাই এবং অন্যজন আমার কলেজের বন্ধু।
দুজনেরই একটি জায়গায় চরম মিল ছিল, সেটা হলো, দুজনই মাঝে মাঝে পরীক্ষার খাতায় "'সংজ্ঞা" বানিয়ে বানিয়ে লিখতো। কিন্তু দুজনের মধ্যে সফল হতো বড়ভাই। উনি ছিলেন আই বি এর স্টুডেন্ট এবং সংজ্ঞা বানিয়ে লেখার রিক্সটা নিতেন পরীক্ষার বিষয়টির ওপর সম্পূর্ণভাবে দখল রেখে, মানে বোধগম্যতার আলোকে। আর আমার কলেজ বন্ধু সংজ্ঞা লিখতো নিজের নামে এবং বিষয়বিবর্জিতভাবে। যদিও অনেকে মনে করেন দুজনেরটাই ব্যাড প্র্যাকটিস!
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ওবামা এবং বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে একই ব্যাপার ঘটেছে।
দুজনই ক্ষমতার ১০০ দিন পার করেছেন। কিন্তু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনমূখী পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে কে এগিয়ে আছেন? বুশকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা জাতীয় ইস্যুর চেয়ে ওবামার কাছে জনগণের ভাগ্য উন্নয়ন ইস্যুটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, বিশ্বের কাছে আমেরিকার বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তিনি সেই পথেই এগুচ্ছেন। ওবামা ক্ষমতায় আসার পরই ডেমোক্রেটের দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়নি, খুনোখুনি হয়নি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়নি বা কথিত রেসিজমের কারণে দাঙ্গা-হাঙ্গামা শুরু হয়নি। মিশন ডিজিটাল বাংলাদেশের মতো ইউটিউব বন্ধ হয়ে যায়নি এবং এখন পর্যন্ত জঙ্গীবাদ নতুন করে মাথাচারা দিয়ে ওঠেনি, কোথাও জঙ্গীবাদ দমনে আগ্রাসন চালানো হয়নি। কিন্তু আমাদের দেশে কি হয়েছে?
প্রথম থেকেই আমার আওয়ামী "দিনবদল", "পরিবর্তন"-এর সংজ্ঞা নিয়ে জিজ্ঞাসা ছিলো।
এর মানে কি? এর শক্তিটা কোথায় এবং এর প্রয়োগ কতোটুকু বাস্তবসম্মত? এটা কি পজেটিভ পরিবর্তন না নেগেটিভ পরিবর্তন? দিনবদলের প্রথম সাফল্য এলো ক্ষমতার পালাবদলের মাধ্যমে কিন্তু জনগণের ভাগ্যবদলের কি হলো?
হ্যা, কিছুপদক্ষেপ সত্যি উল্লেখযোগ্য। যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম এবং বিডিআর ট্র্যাজিডির ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা। কিন্তু এ দুটো কার্যক্রমও প্রশ্নাতীত নয়। যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যক্রমকে অরাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে পারবে সরকার? এটা কে কি কোনো ফাইনাল শেইপ দিতে চাইবে তারা নাকি ইস্যু করে রাখবে? আর প্রাথমিকভাবে পিলখানার ঘটনাকে ভালোভাবে ট্যাকল করতে পারলেও পরবর্তীতে জঙ্গী ইস্যু, বিডিআর সদস্যদের পালিয়ে যাওয়া ও দফতরের ভিতরে বিডিআর সদস্যদের আত্মহত্যাসহ বিবিধ ঘটনায় জনমনে এ নিয়ে নানান প্রশ্ন জমাট বেঁধেছে।
পূর্ণিমার চাঁদ যেন বরফশীতল এসি!
রাত ১২টায় একবার গেল, এলো ১টায় তারপর আবার গেলো ভোর ৪টায় এলো ৫টায়।
আরেকদিন রাত ১:৩০ শে গেলো, এলো ২:৩০শে আবার গেলো ৪:৩০শে এলো ভোর পাঁচটা ত্রিশে। আর দিনের হিসেব তো বাদই দিলাম। ৯৬-১০৫ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ঘনঘন লোডশেডিং কোন দিন বদলের কথা বলে? প্রধানমন্ত্রী জানালেন, সময় লাগবে! কিন্তু বলেন নি কতো সময় লাগবে!! এইচ এস সি পরীক্ষার্থী, হাসপাতালের রোগী, ব্যবসায়ীবৃন্দসহ সুবিধাবঞ্চিতরা জানতে চায়! কেউ আর দিনবদলের কথা শুনতে চায়না, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ চায়।
ছাত্রলীগের বিরতীহীন সংঘর্ঘের বদনাম এড়াতে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের অভিভাবকের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। কিন্তু সংসদে বললেন, বিরোধী দলের লোকজন ছাত্রলীগের ঢুকে এ কাজ করছে।
তাহলে উনি কেন সরে দাঁড়ালেন, ওনার তো উচিৎ ছিলো বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে জেলে ঢুকানো। অবশ্য সেই চেষ্টা যে চলছে না কে বলতে পারে!!
নিয়ন্ত্রণহীন ছাত্রলীগের যন্ত্রণা ও বদনাম এড়াতে প্রধানমন্ত্রী অভিভাবক পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও আমরা চাইনা দিনবদলের সুফল জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে না দিয়ে ব্যর্থতার সারথী হয়ে আওয়ামীলীগ ক্ষমতা বদলের শিকার হোক!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।