স্বাধীনতা চাই..........
২৯ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা নামলেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুরু হয় আওয়ামী লীগের কথিত দিলবদল (?)। ক্যাম্পাসে সে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ পরিস্থিতি। সশস্ত্র মহাড়ায় পুরো ক্যাম্পাস দখলে নেয় মতাসীন ছাত্রলীগ। ১৫ টি আবাসিক হল দখলে নেয়, বিতাড়িত হয় ভিন্ন মতাদর্শীরা। প্রক্টর অফিস ও রেজিস্ট্রার অফিস সূত্র অনুযায়ি-এসব হলের ৩২৭টি ক দখল হয়।
টাকা পয়সাসহ নানা জিনিসপত্র লুটপাট হয় অর্ধকোটি টাকারও বেশি। ৫৩ টিরও বেশি ক ভাংচুর করা হয়। বিতাড়িত হয় ৩ হাজার ৮৮ জন। যা মোট আবাসিক ও দ্বৈতাবাসিক ছাত্রদের ৪০ ভাগ।
নির্বাচনের দিন থেকে এখন পর্যন্ত ভিন্ন মতাদর্শী ছাত্রদল, শিবিরের প্রায় ৩০০ নেতা-কমী আহত হয়।
এসব ঘটনায় ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন মামলা ও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। , জোর করে ভিন্ন মতাদর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে সাধারণ শিার্থীদের ওপর হামলা ও বিতাড়ন কর্মকান্ড এখনো চলছে। এর সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রক্টর নিজেই।
বছরের প্রথম দিন থেকেই ক্যাম্পাসে মতাসীন ছাত্রলীগের অভ্যান্তরীণ দ্বন্দ্বও ছিল চরমে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হল দখল, কর্মী সমর্থকদের নিজ গ্রুপে বিড়ানো, সংগঠনের কেন্দ্রীয় ,বিশ্ববিদ্যালয় ও হল কমিটিতে পদ পেতে অব্যাহতভাবে রক্তয়ী সংঘর্ষ চলে আসছে।
রেজিস্টার বেল্ডিংয়ে টেন্ডারবাজি ধাওয়া-পাল্টা ঘটছে নিয়োমিত। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় বেশ কয়েকটি স্থাপনার নির্মান কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। একাধিকার ক্যাম্পাসে ঘটেছে গোলাগুলির ঘটনা। নীলতে মার্কেট দখলের চেষ্টা চলে একাধিকবার। ক্যাম্পাসে ও হলে অবস্থিত বিভিন্ন খাবারের দোকান থেকে নিয়োমিত চাঁদা নেয়া হচ্ছে।
আশপাশের মার্কেটেও চলছে হর্ধম চাঁদাবাজি ও ভাংচুরের ঘটনা। ছিনতাই ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়োমিত ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
টিএসসি এলাকায় স্বপন মন্ডল নামে এক এনজিও কর্মীকে ছিনতাইকারী অভিযোগ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা ছাত্রলীগ কর্মীরা। ওই ঘটনায় কোন মামলাও হয়নি। কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শীর্ষ নেতা জড়িয়ে পড়েছেন নারী কেলেঙ্কারীতে।
কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধি প্যানেল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার, ভোটাদের ভোট দিতে বাঁধা দেয়া হয়, শিকদের লাঞ্ছিত ছাত্রলীগ । ফজলুল হক হলে শিক ড. ইলিয়াসকে লাঞ্ছিত করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা খায়রুল হাসান জুয়েল। ভূয়া পরীা দিতে সহায়ত না করায় হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের শিক মাযহারুল আনোয়ারকে লাঞ্ছিত করে সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগ সভাপতি সাইদ মজুমদার। ছাত্রলীগের সমাবেশ থেকে দেয়া হয়েছে শিক হত্যার হুমকী। প্রক্টর ও শিকদের উপস্থিতিতে কার্জন হলে পরীা হলে ছাত্রলীগ নাজমুল, কল্লোল, শাহরিয়ার বাহিনী শিবির নেতা জোবায়ের উপর নিমর্ম হামলা করে।
ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত সাংবাদিক জুয়েল (ইউএনবি) সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তার ওপর হামলা করে তারা। সর্বশেষ গত বুধবার শিক সমিতির নির্বাচানে সাদা দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালায় ছাত্রলীগ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেও দিন বদল (?) হয়েছে। ১৭ জানুয়ারি বর্তমান ভিসি অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিককে সরকার দায়িত্ব দেন। এরপর সরকার আগের প্রশাসনের প্রো-ভিসি অধ্যাপক আফম ইউসুফ হায়দারকে অব্যহতি দেয়।
প্রো-ভিসি অফিসের সেকশন অফিসারদের অন্যত্র বদলি করা হয়। এভাবে রেজিস্টার বেল্ডিং এর অনেক অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কামরুল ইসলামকে অন্যায়ভাবে ওএসডি করে কর্তৃপ। ছাত্রলীগের বিরোধীতার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রারকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে দেয়নি কর্তৃপ। শিক নিয়োগ থেকে শুরু করে সব ধরনের নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়মের নানা অভিযোগ ওঠে।
বিজ্ঞান অনুষদের অনেক শিক পদোন্নতি দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে। চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক রফিকুন্নবী অবসরে গেলেও এখনো অবৈধভাবে দায়িত্বে রাখা হয়েছে। কয়েকটি হলের আবাসিক শিক ও কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক বাদ ও বদলি করার হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় চাকরি ও পদোন্নতির দিতে আওয়ামী পন্থী শিকদের একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে।
ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিকে চারুকলা অনুষদে সংবাদ সংগ্রহন করতে গেলে অনুষদ শিকদের প্ররোচনায় পলাশ (যায়যায় দিন), আরিফ (সংগ্রাম), আরিফ (ইন্ডিপেন্ডেন্ট), দিপু (এবিসি), আরমানের (দিনকাল) চারকলা অনুষদ ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এভাসে ছাত্রলীগ হাতে ও প্রশাসনে সহায়তায় শিক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক নির্যাতন, ভিন্ন মতাদর্শী ও সাধারণ শিার্থীদের ওপর অব্যাহত হামলা, নির্যাতনের প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। কোনটার তদন্ত কমিটি গঠন করলে তা আর সামনে এগুয়নি।
এছাড়া বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার শ্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ দায়িত্ব পেয়েই শিার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা দেয়ার কথা বললেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বরং বেসরকারি কম্পানিগুলো আবাসিক হলগুলোতে যে ইন্টানেট সুবিধা দিরেয় আসছিল তাও ছাত্রলীগের চাঁদাবাজির কারনে অধিকাংশ হলেই বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক মাস আগে কর্তৃপ শুধু টিএসসি ওয়াইফাই প্রযুক্তি চালু করলেও তা এখন আর কাজ করছে না।
সার্বিক পরিস্থিতির বিশ্ববিদ্যালয়ে এ যখন অবস্থা সেখানে তথাকথিত দিন বদল(?) ই সম্ভব বলে শিক-শিার্থীরা মনে করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।