আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আটলান্টিকের পাড়ে কিছু ইলিপটিকাল উন্মাদনা (২য়/শেষ পর্ব)

.... তবুও আমি স্বপ্ন দেখি ... (স্বপ্ন, বাস্তব এবং ব্লগের সর্বস্বত্ব ব্লগার কতৃক সংরক্ষিত)
প্রথম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন ২১ মার্চ সকাল থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম। ইচ্ছে ছিল রাগবীর নিয়মকানুনের উপর লেখাটা শেষ করে পোস্ট করে যাবো। কিছুটা সময় লেখার চেষ্টাও করলাম। কিন্তু কিছুতেই লেখাটা এগুচ্ছিল না। ভাবলাম পরে শেষ করবো।

ওদিকে সময় কেটে যাচ্ছে; শনিবার হওয়াতে বাস পাওয়াও কিছুটা কঠিন। প্রায় ঘন্টায় একটা বাস। দ্রুত ধ্রুবকে ফোন দিয়ে জানালাম আমি সুপারম্যাকে থাকবো, নাফিস সহ চলে আসতে। তারপর শাওয়ার নিয়ে, হালকা কিছু খেয়েই বের হয়ে পড়লাম। যথারীতি একটা বাস মিস করলাম; আরেকটা দৌড়ে গিয়ে ধরে সিটি সেন্টারে যখন পৌছাই তখন ঘড়িতে সাড়ে চারটার বেশি বাজে।

সুপারম্যাকের দোতালায় একটা মিল আর ড্রিংস নিয়ে বসে পড়লাম খেলা দেখতে। কার্ডিফের মিলেনিয়াম স্টেডিয়ামে তখন সাজসাজ রব। খেলা শুরু হতে কিছুটা সময় বাকি ছিল। তাই স্টেডিয়ামের চারপাশে বিশেষ ব্যবস্থায় চলছিল হুসহুস করে বেরিয়ে আসা আগুনের খেলা। ৬১ বছর পর গ্র্যান্ডস্লাম জেতার সম্ভাবনার উত্তেজনায় আইরিশ সমর্থকরা তখন কাঁপছিল।

অল্প কিছুসময় পর নাফিস এবং ধ্রুবও এসে যোগ দিল আমার সাথে। ধ্রুব নিয়মকানুনের একটা প্রথমিক পাঠ মেঝ ভাইয়ার কাছ থেকে নিয়ে এসেছিল। আমি আরো বিস্তারিত ভাবে জানালাম টেকনিকাল নিয়মগুলো। এ লেখার সাসপেন্সগুলো বোঝার সুবিধার্থে শুধু স্কোরিং-এর নিয়মগুলো আপনাদের জন্য তুলে ধরছি। রাগবীতে গোল রয়েছে প্রধানত চার ধরনের – ট্রাই, কনভার্সন, পেনাল্টি এবং ড্রপ গোল।

ট্রাই হচ্ছে হাত দিয়ে ধরে দৌড়ে প্রতিপক্ষের গোল লাইন বা তার পেছনের এলাকায় বলকে মাটি স্পর্শ করানো। উল্লেখ্য যে রাগবীতে গোল লাইন বলতে দুই গোল পোস্টের মাঝের অংশটুকুকেই শুধু বোঝানো হয় না বরং পোস্ট দুটো যে লাইনের উপর বসানো থাকে সেই পুরো ৭০ মিটার লাইনটাকেই বোঝায়। ট্রাই করতে পারলে দল পাবে ৫ পয়েন্ট এবং একটি কনভার্সনের সুযোগ। কনভার্সন অনেকটা ফুটবলের পেনাল্টির মত তবে পার্থক্য এতটুকু যে এখানে বলটা দুই পোস্টের ঠিক মাঝামাঝি না বসিয়ে যেখানে ট্রাই করা হয়েছে সেই বরাবর মাঠের ভেতরে বসানো হয়। ফলে কেউ যদি গোলপোস্ট থেকে দূরে গিয়ে ট্রাই করে, তাহলে কনভার্সনের সময় গোল করা কঠিন হয়ে যায়।

কনভার্সনের জন্য দল পায় ২ পয়েন্ট। রাগবীতে পেনাল্টি গোলকে ফুটবলের ফ্রি কিকের সাথে তুলনা করা যায়। যদি কেউ ফাউল করে বা ইচ্ছাকৃত অফসাইড হয় তখন সাধারনত রেফারী পেনাল্টি দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যেখানে অপরাধ সংঘটিত হবে, সেখান থেকে কিক নিয়ে গোল করতে হয়। পেনাল্টি গোলের জন্য বরাদ্দ থাকে ৩ পয়েন্ট।

আরেক ধরনের গোল হলো ড্রপ গোল। খেলা চলার সময় কোন খেলোয়াড় চাইলে বল মাটিতে ছুড়ে, বাউন্স করে উপরে ওঠার সময় কিক নিয়েও গোল দিতে পারে। এক্ষেত্রেও ৩ পয়েন্ট পাবে দল। উল্লেখ্য যে কনভার্সন, পেনাল্টি এবং ড্রপ গোলের সময় বল অবশ্যই দুই পোস্টের মাঝ দিয়ে এবং ক্রসবারের উপর দিয়ে যেতে হবে। এবার আবার ফিরে আসছি খেলার বর্ননায়।

এদিন শুরু থেকেই আয়ারল্যান্ডকে একটু এলোমেলা দেখাচ্ছিল। তাছাড়া ফাউল করার প্রবনতাও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে খুব বেশি দেখা যাচ্ছিল। তবে প্রধম দিকে চাপটা আয়ারল্যান্ডই তৈরী করেছিল। এ সময় একটা প্রায় নিশ্চিত ট্রাইয়ের সুযোগ মিস করে বসে আইরিশ দল। যতই ওয়েলসের ভেতরে ঢুকছিল ততই যেন দুর্গম হয়ে উঠছিল ওদের ডিফেন্স।

বারবার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ব্যার্থ হতে বাধ্য হয় আইরিশরা। নাফিস তখন রীতিমত বিরক্ত। বারবার বলছে এই জায়গা থেকে ট্রাই করতে না পরলে কিছু বলার নাই। এর একটু পরই ধীরেধীরে ওয়েলস জ্বলে উঠতে শুরু করে আর আইরিশরা কেমন যেন ম্রিয়মান হয়ে যায়। ওয়েলসের রবার্তো কার্লস তথা সেটপিস স্পেশিয়ালিস্ট স্টিফেন জোন্স ৩৩ এবং ৩৯ মিনিটে দুটো পেনাল্টি থেকে গোল করে ওয়েলসকে নিয়ে যায় ৬ – ০ লিডে।

আমি তখন চিৎকার করছি, ও' গারা কোথায়? ও' গারা হচ্ছে আইরিশ বেকহ্যাম। কনভার্সন, পেনাল্টি কিম্বা ড্রপগোল – তিনটাতেই ও' গারার রয়েছে অসাধারন দক্ষতা। অন্য খেলোয়াড়তের মত ষাড়ের শরীর নেই, কিন্তু রয়েছে পায়ের নিঁখুত নিশানা। আইরিশ দলে ও' গারার মূল কাজই হচ্ছে সেটপিস দিয়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করা। অথচ সেই ও' গারার ঝলকই দেখা যাচ্ছিল না মাঠে।

প্রধমার্ধে একটা পেনাল্টি পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড যেখান থেকে গোল করা খুবই কঠিন ছিল। ও' গারা তবুও চেষ্টা করেছিল কিন্তু সফল হয়নি সেই প্রয়াশ। আইরিশ বেকহ্যামের ঝলক ওতটুকুই ছিল প্রথমার্ধে। ফলে ০ – ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে থেকে আয়ারল্যান্ড বিরতীতে যায়। বিরতীর সময় টিভির একেবারে প্রথম সারির সিটে, যেখানে একজোড়া কৃষ্ণ কপত-কপতী অসময়ে এবং অস্থানে ডেটিং করছিল, কেটে পড়ে।

আমরা দ্রুত সেই সিটগুলো দখল করে আরাম করে বসি। তখন আস্তে আস্তে রেস্টুরেন্টে খেলা দেখার জন্য আসা মানুষের ভীড়ও বাড়তে থাকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আইরিশ দলকে খানিকটা গোছানো মনে হতে লাগলো। আমি, ধ্রুব এবং নাফিস তখন রুদ্ধ শ্বাসে অপেক্ষা করছি ট্রাইয়ের জন্য। আক্রমন বারবার করতে লাগলো আয়ারল্যান্ড আর সাথে চলছে আমাদের তুমুল চিৎকার।

নাফিস বারবারই বলতে লাগলো সেই কথা - “এখান থেকে ট্রাই করতে না পারলে....”। চার মিনিট যেতে না যেতেই আইরিশ ক্যাপ্টেন ও' ড্রিসকল বল নিয়ে প্রায় ছুঁয়ে দেয় ওয়লসের গোল লাইন। কিন্তু ভীড়ের কারনে ঠিক মত বোঝা যায়নি বল আসলে মাঠি স্পর্শ করেছে কি না। অতএব রেফারী স্বীদ্ধান্তের জন্য আমন্ত্রন জানায় টিএমও তথা টেলিভিশন ম্যাচ অফিশিয়ালকে। রাগবীর টিএমও আর ক্রিকেটের থার্ড আম্পায়ার আসলে একই জিনিস।

বারবার রিপ্লে দেখে টিএমও শেষ পর্যন্ত জানায় এটা ট্রাই হয়েছে। আর যায় কোথায় পুরো সুপারম্যাক যেন চিৎকারে ভেঙ্গে পড়লো। ও' ড্রিসকলের ট্রাইয়ের ৫ পয়েন্ট এবং ও' গারার নির্ভুল কনভার্সনের ২ পয়েন্ট মিলে ৭ – ৬ এ তখন আয়ারল্যান্ডের লিড। ওয়েলসের পতাকায় প্রায় পুরো লাল হয়ে থাকা কার্ডিফের মিলেনিয়ম স্টেডিয়ামে তখন চরম নিরবতা। খেলা ঠিক মত শুরুও হতে পারেনি তখন; আমি ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম – ধ্রুব চিৎকার দিল, দেখেন দেখেন! তাকিয়ে দেখি ও' গারার চমৎকার পাস প্রায় হাত ফসকে বের হতে হতে ধরে ফেললো জন বয়ে।

তারপর অসাধারন ভাবে ওয়েলসের খেলোয়াড়দের কাটিয়ে সে ঢুকে পড়লো একেবারে ভেতরে। সামনে তখন একজনও খেলোয়াড় নেই তাকে আটকানোর। মাত্র এক মিনিটের ব্যবধানে দুইদুইটা ট্রাই সাথে সফল কনভার্সন আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে গেলো ১৪ – ৬ উচ্চতায়। কিন্তু বড় ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়াটা যেন আয়ারল্যান্ডের জন্য কাল হয়ে দাড়ালো। ওয়েলসের স্টিফেন জোন্স ৫১ এবং ৫৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দুটো গোল করে খেলায় নিয়ে আসলো টানটান উত্তেজনা।

১২ – ১৪ পয়েন্টে তখন ওয়েলস পিছিয়ে আছে। কিন্তু আক্রমনের ধার দেখে মনে হচ্ছিল আরেকটা গোল বা ট্রাই করে ফেলা ওদের জন্য কঠিন কিছু হবে না। আমরা শ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষা করছি কি হয় দেখার জন্য। খেলার বাকি পাঁচ মিনিট। ধ্রুব বারবার বলতে লাগলো বল আউট করে সময়টা পার করে দিলেই হয়।

কিন্তু সে সুযোগ আয়ারল্যান্ড পাচ্ছিলই না। ওয়েলসের মুহুর্মুহু আক্রমনে ওরা তখন দিশেহারা। নাফিসকে বললাম রাগবীর মত খেলাও যে ফুটবল বা ক্রিকেটের মত উত্তেজনাপূর্ন হতে পারে সেটা কি আমরা আগে কোন দিন অনুভব করেছি? নাফিস হাসলো। আসলে টেনশনে তখন আমরা ঘামাচ্ছি। কথা বলারও যেন শক্তি নেই।

হায়! আমরা কি তখন জানতাম, আমাদের স্নায়ুর আসল পরীক্ষা কেবল শুরু হতে যাচ্ছে তখন! ৮০ মিনিটের খেলার ৪ মিনিট বাকি থাকতে, ৭৬তম মিনিটে ওয়েলসের তিব্র আক্রমনের একটা ট্রাইয়ের সুযোগকে হঠাৎ করে বাদ দিয়ে ওদের ফরোয়ার্ডরা বল ব্যাকপাস দিয়ে দেয় প্রায় আনমার্কড স্টিফেন জোন্সকে। আইরিশরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই জোন্স বলটা মাটিতে ছুড়ে মারে, তারপর ফিরতি বাউন্সে কিক। চোখের পলকে বল দুই পোস্টের মাঝ দিয়ে গোলে আর এই ড্রপ গোল ওয়েলসকে নিয়ে যায় ১৫ – ১৪ লিডে। প্রায় নিশ্চিত জিতে যাওয়া ম্যাচটা এভাবে একদম শেষ মূহুর্তে এসে হাত ছাড়া হয়ে যাবে, আয়ারল্যান্ড যেন ভাবতেই পারছিলনা। বাকরুদ্ধ ধারাভাষ্যকাররাও হতাশ তখন।

আর চার মিনিটে কি আয়ারল্যান্ড পারবে খেলায় ফিরে আসতে? অনেক উৎকন্ঠার মধ্য দিয়ে আবার খেলা শুরু হলো। কিন্তু আয়ারল্যান্ড যেন আর গুছিয়ে উঠতে পারছিল না। ধ্রুবর বলা সেই বুদ্ধিটা, অর্থাৎ লাইন আউট করে সময় পার করে দেয়া, সেটা ওয়েলস তখন পুরোপুরি ব্যবহার করছে। দুই মিনিট কাটিয়ে দিয়েছে ওয়েলস। মনে হচ্ছে এই ম্যাচ তাদেরই হতে যাচ্ছে।

এরকম সময়ে একটা ট্রাইয়ের সুযোগ সৃষ্টি হলো আয়ারল্যান্ডের পক্ষে। কিন্তু হঠাৎ ব্যাকপাস! ঠিক যেমনটা ওয়েলস করেছিল। স্ববিস্ময়ে আমরা তাকালাম, কার কাছে গেলো বলটা? মানুষটাকে দেখে সবাই এক সাথে চিৎকার করে উঠলো। ও' গারা বলটা ধরেই প্রথমে মাটিতে নিক্ষেপ করলো, তারপর কিক। সোজা গোলে।

৭৮ মিনিটে খেলা আবার চলে আসলো আয়ারল্যান্ডের পক্ষে, ১৭ – ১৫। নাফিস তখন আমার পাশে রীতিমত উত্তেজনায় কাঁপতে কাঁপতে বলছে, "আমি এখনও নিশ্চিত না। আবার কিছু একটা ঘটে যেতে পারে। " আসলেই তাই, এই খেলা শেষ পাঁচ মিনিটে যেভাবে রুপ বদলাচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে টেনশনের চুড়ান্ত পরীক্ষা দিতে বসেছি।

ওয়েলস এমন এক দল যারা যতই পিছিয়ে পড়ুক, বারবার খেলায় ফিরে আসার ক্ষমতা রাখে। দুই মিনিট সময়কেও তারা এমন কার্যকর ভাবে ব্যবহার করলো যে আয়ারল্যান্ড অস্থির হয়ে গেলো এবং আক্রমনের তিব্রতায় এলোমেলো হয়ে ফাউল করে বসলো খেলার ঠিক ৮০ তম মিনিটে। ফলস্বরুপ ওয়েলস পেয়ে গেলো পেনাল্টি, ৪৮ মিটার দূরে কিন্তু ঠিক গোল পোস্টের সামনে থেকে। স্টিফেন জোন্স বীরদর্পে এগিয়ে এসে বল বসালো। চারদিকে তখন আইরিশ কান্নার মাতম।

এভাবে স্বপ্ন ভেঙ্গে যাবে, সেটা মেনে নেয়া সত্যি অনেক কষ্টের। আইরিশ চ্যানেলের ধারাভাষ্যকারদের গলাও ধরে এসেছে। দূরত্বটা যদিও একটু বেশি, কিন্তু এখান থেকে গোল মিস হবার প্রশ্নই আসে না। তার উপর মানুষটা যখন স্টিফেন জোন্স; যে কিনা এরকম দূরত্ব কিন্তু আরো জটিল এ্যাঙ্গেল থেকে প্রথমার্ধেই গোল করে তার সামর্থের প্রমান রেখেছিল। যেহেতু নির্ধারিত ৮০ মিনিটের খেলা ততক্ষনে শেষ হয়ে গিয়েছিল, তাই এই শর্টের পরপরই খেলার সমাপ্তি ঘটবে - অবস্থাটা এরকম।

তারপর জোন্স শর্ট নিল। বল উড়ে গিয়ে দুই পোস্টের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করলো। কিন্তু তাতে আইরিশ শিবিরে কান্নার পরিবর্তে আনন্দের বন্যা শুরু হলো। কেননা বল ঠিকই পোস্টে ঢুকেছে, কিন্তু ক্রসবারের নিচ দিয়ে। ফুটবলে যেমন গোল হয় ক্রসবারের নিচ দিয়ে গেলে - রাগবীতে ঠিক উল্টাটা।

গোল হতে হলে ক্রসবারের উপর দিয়ে যেতে হবে। অতএব সারা ম্যাচে হিরো থেকেও শেষ মিনিটে এসে জিরো হয়ে গেলো জোন্স। নিজের কপালে হাত দিয়ে বাড়ি দিয়ে সম্ভবত তারই প্রতিফলন দেখালো সে। এ জয়ের মধ্য দিয়ে আয়ারল্যান্ড জিতলো ৬১ বছর পর গ্র্যান্ডস্লাম। সেই ১৯৪৮ সনে জেতা আগের গ্র্যান্ডস্লামটার কথা কি মনে আছে কারো এখন আর? যারা সে সময় খেলা দেখার বয়সী ছিলেন, তাদের অনেকেইতো এখন পরপারে! ওদের নুতন প্রজন্মের জন্য তাই এটা ছিল নিতান্তই অন্যরকম এক অনুভুতি।

সুপারম্যাকে আমার চারপাশে তাকিয়ে দেখি রীতিমত আনন্দের বন্যা বইছে। আমি নিজেও গলা ফাটিয়ে চিৎকার করেছি। ধ্রুব, নাফিসও উল্লসিত। হঠাৎ দুটো মেয়েকে অবাক হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখলাম। ওরা সম্ভবত এশিয়ান কোন ছেলেকে রাগবী নিয়ে এরকম উল্লাস করতে দেখেনি আগে।

আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে হাসলাম। মনেমনে বাংলালিঙ্কের ভাষায় বললাম, “সেই দিন কি আর আছে? দিন বদলাইছে না?” ২২ মার্চ ২০০৮ ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড দ্রষ্টব্য: প্রিয় পাঠক, আপনি চাইলে নিচের ভিডিও থেকে খেলার হাইলাইটস দেখতে পারবেন। ১০ মিনিটের এই হাইলাইটসে আমার পোস্টেরই একটা চলচিত্ররুপ রয়েছে। এখানে খেলার কিছু ছবি আছে। দেখতে চাইলে লিঙ্কে ক্লিক করুন।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।