আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্ধ্যায়..

কোমায় থাকা ব্লগ

প্রাচীন শাস্ত্রে লেখে, প্রত্যুষে মানুষের মনটা নাকি পূতঃপবিত্র আর ফুরফুরে থাকে। আমি বলি ডাঁহা ভুল! সকাল সকাল নির্লজ্জ এলার্ম ঘড়িটাকে প্রতিদিনই একবার জানালা দিয়ে বাইরে ফেলতে ইচ্ছে করে। ঢুলু ঢুলু চোখে হেলে দুলে নানা জায়গায় ধাক্কা খেয়ে ফ্রেশ হয়ে ‘ট্রায়াথলন’ এর জন্য তৈরী হতে হয়! অফিস যেতে হবে! বরঞ্চ বলা যায়, মনটা ফুরফুরে আনন্দে নেচে ওঠে অফিস ছুটির সময় কাছে এগিয়ে এলে। আর ছুটির শেষে তো আনন্দের তো বাধভাঙা! (ইয়ে মানে, তখনও বাসায় ফিরে লোডশেডিং এর কথা মনে পড়েনা!) পন্থা দু’টি। বামপন্থা আর ডানপন্থা! অফিস থেকে বেরিয়েই দু’দিক-কেই মেপে নিই।

যেকোন একদিক বেরিয়ে পড়লেই হয়। কাকলী কিংবা আমতলী! আমলনামা যে হাতেই থাকুক না কেন, পুলসেরাত একটাই। বাসা ও তাই একটা! সেদিন আঁধারের ঘোরলাগা সন্ধ্যাতে অফিস থেকে কয়েক কদম এগিয়ে যখন জ্যামে আটকে থাকা গাড়িটাকে হেঁটেই যখন ওভারটেক করতে যাচ্ছি, তখনই পিছন থেকে বন্ধুসুলভ হুংকার শুনি, “সজীব। ওই সজীব”। বুঝি, আমার জন্যই এটা বরাদ্দ! কিন্তু আমার নাম সজীব না! বয়স হয়েছে কিন্তু অভিজ্ঞতা বাড়েনি।

ছিনতাইকারীর খপ্পরেও পড়িনি কখনও। “সেদিন রাস্তায় ছিলোনা সোডিয়াম আলোর চাঁদ, এমন সময় মরণের হলো তার সাধ!” -- এ যাত্রায় জাতে ওঠার দিন বুঝি এলো! ভ্রুক্ষেপ না করেই, কিছুই শুনিনি এমন ভাব করেই হেটে যাচ্ছিলাম! কিন্তু ক্রমেই কাছে আসা দৌড়ের শব্দ শুনে আন্দাজ করলাম সেই ‘মাহেন্দ্রক্ষণ’ সমাগত! সামনে এসেই আমার ডান হাতটা নিজের হাতের মধ্যে লুফে নিয়েই ‘ভদ্রলোক’ আতিশয্য দেখালেন, “ওই, সজীব এতক্ষণ ধরে ডাকছি। শা-- একবার পিছন দিকে ফিরলিও না?!” এভাবেই নাকি কার্যক্রম শুরু হয়! সবই মিলে যাচ্ছে। অন্ধকারে তখন কেউ কারও মুখটাও ভালো করে দেখতে পাইনা। ততক্ষণে পকেটের স্লিম-ফিগারের মোবাইল আর মানিব্যাগের খুচরো টাকাগুলোর জন্য আখেরী মুনাজাত করা শেষ আমার! আমতা আমতা করে বলি, “ভাই মনে হয় ভুল করছেন!” “নাহ, ভুল হতেই পারেনা! ব্যাটা! কতকাল দেখা নেই।

” জানি, এগুলো ছিনতাই নাটকের বাঁধা সংলাপ। তবুও হারাবার তো আর ভয় নেই। তাই বলি, “একটু ভালো করে দেখুন তো আমাকে?” একটু ভালো করে তাকাতেই... তিনি বিদ্যুতস্পৃষ্টের মত আমার হাতটা ছেড়ে দিয়ে ছিটকে গেলেন। ‘আমতামো’ এবার তার গলায় ফিরে এলো, “স্যরি, ভাই ভুল হয়ে গেছে! ইয়ে মানে আমি মনে করেছিলাম... “ আর ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়লো আমার। মনে হচ্ছিলো, তক্ষনি তাকেই কোলাকুলি করে বুকে তুলে নিই।

ছিনতাইকারীর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য! কিংবা নিজেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে বলি, “কী আছে? সব বের কর!” * ট্রায়াথলন = ১. বাস ধরার জন্য স্টপেজ পর্যন্ত ‘হন্টন’ ২. বাস এসে পড়লে সেটিতে আরোহনের চেষ্টায় ‘স্প্রিন্ট’ ৩. কাছাকাছি যেতে সমর্থ হলে ‘হাইজাম্প’ দিয়ে বাসে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।