বিডিআর সদর দফতরের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড, লাশ গুম ও লুটপাটের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি আবদুল কাহহার আকন্দসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তারা দরবার হল, মহাপরিচালকের বাসভবন, অন্যান্য স্থান পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ শুরু করেছেন। এদিকে এই বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে রাইফেল সিকিউরিটি ইউনিট জড়িত (গোয়েন্দা ইউনিট) বলে প্রাথমিক কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৯টায় দরবার হলে গেম ড্রেস পরিহিত অবস্থায় অস্ত্র হাতে, আবার কেউ সাদা পোশাকে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ শুরু করে।
সাধারণত বিডিআর গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যরা সাদা পোশাকে কার্যক্রম চালায়। গোয়েন্দা ইউনিটের অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করা হয়েছে। এ সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদের মধ্যে বেশ কয়েকটি অস্ত্র এবং গোলাবারুদ সেনাবাহিনীর একটি দল উদ্ধার করেছেন। গোয়েন্দা ইউনিটের সৈনিকদের ব্যারাকের বিছানার নিচ থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সেনাবাহিনীর দলটি উদ্ধার করে। গোয়েন্দা ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৫ সেনা কর্মকর্তার কেউ বেঁচে নেই বলেও জানা যায়।
বিদ্রোহের ঘটনায় গোয়েন্দা ইউনিটের সিপাই ও জেসিওরা সরাসরি জড়িত। এর কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দা ইউনিটের সেনা কর্মকর্তাদের বিদ্রোহীরা হত্যা করলেও জওয়ান ও জেসিওরা জীবিত ছিল। তারা ঘটনার পর পর বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে কিংবা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের অবহিত করেনি। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ইউনিটের সকল সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। এছাড়া গোয়েন্দা ইউনিটের ব্যবহৃত ওয়াকিটকিও সেনাবাহিনীর অনুসন্ধানকারী দল উদ্ধার করেন।
এই ওয়াকিটকি দিয়ে শুধু গোয়েন্দা ইউনিটের মধ্যেই তথ্য আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে। এই সকল তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহ ও হত্যাযজ্ঞে বিডিআর-এর গোয়েন্দা ইউনিটের সিপাই ও জেসিওরা জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অপরদিকে সেকেন্ড ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর কামরুল ও মেজর আবদুল আওয়ালের নেতৃত্বে অনুসন্ধানকারী দলটি বিডিআর সদস্যদের ব্যারাকে অভিযান চালিয়ে এক সিপাহির বাসা থেকে ল্যাপটপ ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেন। উদ্ধারকৃত ল্যাপটপটি কর্নেল পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা এবং ল্যাপটপে কর্মকর্তার ছেলের ছবিসহ গলফ খেলার দৃশ্য রয়েছে। জড়িত বিডিআর সিপাহীর নাম ঠিকানাও কর্মকর্তাগণ পেয়েছেন।
ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট থেকে মাসখানেক পূর্বে উক্ত ল্যাপটপ ব্যবহারকারী সেনা কর্মকর্তা বিডিআর সদর দফতরে বদলি হয়ে আসেন বলে অনুসন্ধানকারী দলসূত্রে জানা যায়। উল্লেখ্য গোয়েন্দা ইউনিটের প্রধান লেঃ কর্নেল ইনসাদ নূরে আমিনের মৃতদেহ গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ইউনিটের অপর কর্মকর্তা মেজর গাজ্জালি দস্তগীরসহ অন্য কর্মকর্তাদের মৃতদেহ গতকাল পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আটক ডিএডি তৌহিদুল আলমসহ অর্ধশতাধিক বিডিআর সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের আলাদাভাবে রাখা হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।