চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা
মক্কা হজ্বের পর বিশ্ব ইজতেমা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ। তাবলীগি জামাত কর্তৃক আয়োজিত এই ধর্মীয় সমাবেশটি প্রতিবছর টংগীতে অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশটি তুরাগ নদীর তীরে অবস্থিত ১৬০ একর জায়গাটিকে ঘিরে জমে উঠে।
এটির যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৬ সালে (মতান্তর আছে)। এখানে মহান আল্লাহর বন্দনা, মাগফেরাত কামনা এবং বিভিন্ন আধ্যাত্বিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মুসল্লিরা তাদের তিনটি দিন গুজরান করেন।
যেকোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড কিংবা আলাপ আলোচনা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে তিন দিনের এই জামাতটিতে।
২০ থেকে ৩০ লক্ষ লোকের সমাবেশ ঘটে বিশ্ব এজতেমাকে কেন্দ্র করে।
সরকারী কর্মকর্তাদের হিসেব অনুসারে ২০০৭ সালে এজতেমায় ৩০ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটে। বিশ্বের ৮০টি দেশের প্রায় ৭ হাজার বিদেশীও অংশগ্রহন করে থাকেন বিশ্বএজতেমায়। আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে বিশ্ব এজতেমার তিনদিনব্যাপী চলা অনুষ্ঠানাদির সমাপ্তি ঘটে।
সারা মুসলিম বিশ্বের শান্তি আর সমৃদ্ধি কামনা করা হয় এই মোনাজাতে।
ইজতেমাটি অরাজনৈতিক হওয়ার কারনে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সমাবেশ ঘটে এটিতে। এত বিশাল সংখ্যার মানুষের সম্মিলন ঘটলেও ইজতেমায় সাধারনত বড় কোন ধরনের সমস্যার দেখা দেয় না।
এর বড় কারন হল ইজতেমায় অংশগ্রহনকারী মুসল্লীদের সংযত এবং সতর্ক আচরন। স্যানিটশন এবং খাদ্য সংক্রান্ত জটীলতা কাটাতে বেশিরভাগ মানুষই তাদের প্রয়োজনাদিগুলিকে সংক্ষিপ্ত করে থাকেন।
মানুষজন স্বতষ্ফুর্তভাবে নিজেরাই উদ্যোগ নেন ছোটখাট সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে। পরষ্পরের সাহায্যে সবাই অকুন্ঠ চিত্তে তাদের হাত বাড়িয়ে দেন।
এক মহান আল্লাহর ভীতি মানুষের মনে সর্বদা বিরাজ করে বলেই হয়ত তারা সবসময় সতর্ক থাকেন তাদের কোন প্রকার আচরনে ইজতেমার শান্তিপূর্ন পরিবেশের কোন প্রকার ব্যঘাত যাতে না ঘটে।
মহান আল্লাহর দয়া ভিক্ষে করতে আসা মানুষগুলোন হন বিনয়ী এবং স্বার্থহীন।
তিনদিনের ইজতেমায় আসা লাখ লাখ মানুষগুলো ইজতেমার অনুশীলন এবং শিক্ষাকে যদি বছরের বাকী দিনগুলোতে তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনে কার্যকরী রাখতে সক্ষম হন তাহলে তা শুধু ব্যক্তি জীবনে নয় আমাদের জাতীয় জীবনে শান্তি এবং সমৃদ্ধি বয়ে আনতে সক্ষম হবে।
যেহেতু এতে বিদেশী মেহমানদেরও অংশগ্রহন থাকে তাই ইজতেমার বিশ্বমাতৃক ভ্রাতৃত্ববোধের চেহারাটিকে সারা দুনিয়াজুড়ে পরিচিতি লাভ করলে এর আধ্যাত্বিক কর্মকান্ড এবং শান্তিপূর্ন বার্তাটি আরো বেশি বিস্তৃতি লাভ করতে পারে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।