বাংলাদেশের মানুষ এখনও তার সম্পূর্ণ অধিকার পাইনি। এই সংগ্রাম যতদিন চলবে ততদিন ছড়ার সংগ্রাম চলবে
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
০১.
ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ হাটিয়া চলিল
এ কথা শুনিয়া যারা হাসিয়া বলিল
ইহা কি হইল কিছু, ধুৎতুরি ছাই
তোমার এরূপ কথার জবাব কি নাই !
পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে কহিলেন
ইহা যে কেমন কথা শুনিয়া রহিলেন
নীড়ের পাখির মত লিখতেন যদি
পচিয়া যাইতো কি কবি কাব্যের দধি ?
সহস্র পথের ঐ চৌমাথায় বসে
কেমন বাক্য গঠন করেছেন ও সে
ব্যাকরণ মানে নাই কেউ ভাষার গঠনে
গ্রহণ করেছে সবাই যা ভালো পঠনে।
হোক সে মর্খতা বা ব্যক্তির প্রভাব
বাংলা ভাষার যেনো নেই মা-বাপ।
০২.
ভাষার জন্য যারা দান করেছেন জান
তারাই যে হলেন জাতির অমর শহীদান
একুশ তারিখ কেনো অমর যে হবে
ঐতিহাসিক দিন যে তাকে সবাই কবে
আল্লাহ মহান প্রভু দ্বিতীয় মহান নেই
এমন বাড়াবাড়ি যে চলছেই চলছেই
প্রাণী কূলের মাঝে শ্রেষ্ঠ মানুষ বটে
তাদের কর্মকান্ডে ঘৃনাও রটে
সকল মৃত্যুই ওহে হয়না শহীদ জানি
শহীদ নামের মানে কোথায় যে টানি।
ভাষা নিয়ে কথা
১.
ভাষা যখন বাংলা আমার
দেশও যখন তাই
তবু কেন হৃদয় মলে
দিচেছা না হে ঠাঁই
মল বাংলা সরিয়ে দিয়ে
ইংরেজী ক্যান টানো
বিকৃতিতে যাচেছ ভ’রে
বাংলা ভাষার গানও।
এই যদি হয় অবস্থা হে
রক্ত কেনো দেয়া
সখা-সখির ভালবাসা
দিচেছ পাড়ি খেয়া।
২.
লী (৯) অর শহীদ হয়েছে
‘চন্দ্রবিন্দু’ কোনোমতে রয়েছে
জীবন দেয়ার ফেব্রুয়ারির বসš
দেয় উড়িয়ে চিরচেনা হসš
সেমিকোলন, দাড়ি, কমা যায় যে
বানান রীতি ‘ক্যালকেসিয়ান’ খায় যে।
৩.
বাংলা ভাষা আর খচচর ক’রোনা
ইংরেজীর ঐ ডগ ও ফগ-এ ভ’রোনা
ল্য পথ বা চিত্র যখন ‘রোডম্যাপ’
ফের বল্লে তাদের মুখে দাও ‘ছ্যাপ’।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
পেরিয়ে সিঁড়ি রক্তের সেই ফেব্রুয়ারি
স্বাধীনতা লাভ করলাম যেই
দেখতে পেলাম বাপ দাদাদের হায়
আকূল করা সেই ভাষা আর নেই।
মুখে মুখে ভিন দেশীদের ভাষা
দেশ ত্যাগের রয় মনের ভিতর আশা
ভাবতে গেলেই হারিয়ে ফেলি খেই।
২.
শহীদ মিনার ভাবগম্ভীর নয়
গলাবাজী সেখানে বেশ হয়
দেশ গঠনের কথাবার্তা কম
তবু ভীড়ে যায় বেরিয়ে দম।
৩.
দেশটা যদি স্বনির্ভরে ভরতো
মনের মত ঘরবাড়ি সব গড়তো
ফেব্রুয়ারির যাত্রা হতো শেষ
শাšি-সুখের পেতাম পরিবেশ।
৪.
বাংলা ভাষার জন্ম তারিখ কবে
কোনোকালে হিসেব কি তার হবে
যদি জানা যেত
তথ্যটা কেউ পেত
ঘটা ক’রে পালন হতো তবে।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
ভাষার কথা নানা বিশ্লেষনে
ছ্যাড়াব্যাড়া হচেছ ণে ণে
সুরাহা না পেয়ে
বরং ফেলে যেয়ে
পোষণ করে ভিন্ন ভাষা মনে।
২.
বিদেশী ঐ ভাষা কেন টানো
যা আছে তা জানো
কাঁধ ঝাঁকুনি ভাষা
মিটায় নাতো আশা
যায় বদলে ভাটি-সারি গানও।
৩.
শহীদ যারা তারা অমর হন
তারিখ হবে ঐতিহাসিক জানি
তবু কেন অমর একুশ কন
শহীদগণের হয়তো ঝরে পানি।
৪.
ফেব্রুয়ারির ঐ একুশে কেউ মরেনি গুলীতে
মরেছিল ক’দিন বাদে বুলেট লাগায় খুলীতে
আহত হয় বহু বহু
ঝরে আরও লাল সে লহু
তারিখ নিয়ে চাইনা যে আর ঝুলিতে।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
শুরুতেই যে বলা হলো ‘নো নো’
প্রতিবাদের ভাষা এবার শোনো
বলতো যদি ‘না না’
যেতো সবই জানা
এ নিয়ে যে হয়নি কথা কোনো।
২.
ইংরেজীটা জানা বটে দরকার
এ’ব্যাপারে উৎসাহী যে সরকার
তবে কথা রয়
বাংলা ফেলে নয়
নেই প্রয়োজন ইংরেজী ঐ চড়কার।
৩.
চীনা জাতি তার ভাষাতে বলে
ইংরেজী বা অন্যতে না চলে
শেখে বটে কয়না কথা তা’
ইংরেজীতে আমরা করি হা।
৪.
শেখার জন্য শেখা তবে বলার বেলায় নয়
না হ’লে যে ফেব্রুয়ারির মহা পরাজয়
বাংলা ভাষাই এগিয়ে নিয়ে যাও
অরমালা দাও ছড়িয়ে দাও
এতে বাবা কিসের এতো ভয়।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
বাংলা ভাষার অরমালা বাঁচাও
৯(লী)কে আনো দেবো তুমি যা চাও
‘হসš’ ও ‘চন্দ্রবিন্দু’ মরে
ব্যাকরনের অনেক কিছুই সরে
ফেব্রুয়ারি তবে কেন নাচাও।
২.
ভাষা মানে পদ্মানদী, শুকিয়ে মরে ঐ
ভাষা মানে ধান ও কাউন, বলুন আছে কই
ভাষা মানে আলোর দ্যতি
এবং মনের অনুভূতি
এ’ব্যাপারে কেউতো সজাগ নই।
৩.
যে পড়ছে ইংলিশ মিডিয়ামে
কদর বড় মা-বাবাদের কাছে
বাংলা ভাষা দুঃখে-ােভে ঘামে
এ’সব নিযে বহু কথা আছে
মা-বাবাদের মুখের বুলি
থাকছেনা আর মুখে
বেনিয়াদের মতই যেন
পড়ছে আবার ঢুকে।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
একের সাথে অপরের কথা ভাষা
মিল হলে যে ঘটে যায় ভালবাসা
ােভ-বিােভ উত্তেজনাও থাকে
ভাষা আবার সে সব দমিয়ে রাখে
ভাষায় যখন কূ-বাক্য ঢোকে
সচেতন লোক এগিয়ে যে রোখে
ভাষার শক্তি কামানের চেয়ে বেশী
ভাষাই দমায় বর্বরদের পেশী।
২.
আমার ভাষায় ভালবাসা রয়
তোমার ভাষায় কেবলি রয় ভয়
ভাষার সাথে চু গরম থাকে
হতভম্বে পড়ি দর্বিপাকে।
ভাষা যখন প্রয়োগে হয় ভুল
দুঃখ জ্বালার শেষ হয়না কূল
তাই যে ভাষায় কেবলি প্রেম চাই
কেন বলো বর্তমানে তা’ নাই ?
৩.
কবিতাগুলো ভাষায় সেজে ওঠে
আনন্দ দেয় হৃদয়ে ও ঠোঁটে
মনকে সাজায় নতুন অলংকারে
কাছে টানে হৃদয়ে বারেবারে
ভাষা যদি মধুর না হয় তবে
কবিতা কি হৃদয়গ্রাহী হবে ?
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
বাংলা ভাষা ক্রমে ক্রমে যাচেছ বুঝি য়ে
ইংরেজী ঐ ভাষা এসে মাথায় চেপে রয়
আমরাও যে তাল মিলিয়ে যাচিছ সবি স’য়ে
এ’ব্যাপারে বুদ্ধিজীবী মোটেই সজাগ নয়।
বরং তারা জোরে শোরেই ইংরেজীকে টানে
বাংলা ভাষার শক্তি যে ঐ থাকছে নারে আর
থাকছে না তো সুর ও লয় আমাদের সেই গানে।
নানা দেশের নানা ভাষা শিখবো তি নেই
তাই বলে কি মাতৃভাষা ভুলে যাবো সব
মিছিল ছাড়া এ’ব্যাপারে কোনো গতি নেই
আন্দোলনেই উঠাও আবার বাংলা কলরব।
২.
কোনো কোনো বুদ্ধিজীবী বলেন
বাংলা ছেড়ে ইংরেজীকে জানো
কোনো কোনো বুদ্ধিজীবী জ্বলেন
বলেই ফেলেন, কানটা ধ’রে টানো।
নিজের ভাষা সাজিয়ে নাও আগে
তারপরে যা শেখার শিখে নাও
এ’সময়ে ওসব কেন জাগে
বাংলা ভাষার ৯ (লী) ফিরিয়ে দাও।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
শিমুল ফোটার সাথে বলুন ভাষার কি যোগ আছে
শিমুল শুধু প্রাকৃতিক শোভা
তবু কেন ফেব্রুয়ারির দোর-দুয়ারের কাছে
ঝরা শিমুল হয়ে পড়ে বোবা।
রয়না তেমন টকটকে লাল তাজা
কোকিল ডাকে ােভে রাগে কুহু
চেয়েছিল সেই খুনীদের সাজা
না হওয়াতে কাঁদে উহু উহু।
শিমুলের রং রক্তের মত লাল
সে কারনে সে এক স্মৃতির ফুল
ধরে আছে বায়ান্নের সেই কাল
ফেব্রুয়ারি করে না তাই ভুল।
শিমুল এখন শহীদানের রং
কুড়িয়ে এনে সাজাই বসে মালা
ঐ মালাতে সাজেনা কেউ সঙ
শিমুল ফুলে আজও আছে জ্বালা।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
বাংলা ভাষার কবি যত আছেন
কোন্ খুশীতে হেলে দুলে নাচেন
বাংলা ভাষায় ভাইরাস যে গায়
বর্তমানে টিকিয়ে রাখাই দায়।
ধীরে ধীরে হচেছ যে ঐ গ্রাস
শুরু থেকেই করতে হবে যে ক্রাশ
না করলে কবিতা কি রবে
প্রেম সাগরে ডুবোডুবি হবে ?
আমার দেশে বাংলা হবে দূর
শুনবোনা আর কানে ভাটির সুর
খামাখা ঐ একাডেমী রেখে
লাভ কি বলুন শাšনাটা মেখে ?
২.
ফের যদি কও বাপকে তুমি ‘ড্যাড’
ধরে নেবো হয়ে গেছো ‘ম্যাড’
শিকল পায়ে বেঁধে
লোহার শলা সেধে
কর্মটি যা করবো সে যে ‘ব্যাড’।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
তাঁর কথা বুঝিনারে তাঁর কথা বুঝিনা
যার ফলে মনযোগে মানে তার যে খুঁজিনা
তার কথা ও তার ভাষা
দেয় নাতো ভালবাসা
সকলেই বলে যে ভাষা সোজাসুজি না।
২.
ভাষা নাকি মধুর মতো হয়
বাজে কথা বলা যতো হয়
ভাষার ভিতর মিষ্টি থাকে কই
স্বাদ পাইনা তাই যে চুপ রই।
৩.
ভাষা হলো অর মালায় সৃষ্টি
মনের কথা এবং চোখের দৃষ্টি
হাত পা নাড়ার কলা কৌশল রয়
এ’সব নিয়েই ভাষাগ্রাহী হয়।
৪.
শব্দ যেদিন জব্দ হবে
ভাষা সেদিন দেখবে তবে
কেমন করে মুখ থুবড়ে পড়ে
শব্দ নিয়ে গবেষণা কে করে।
৫.
এই একুশের ভাষার নাম কি বলুন
বুদ্ধিজীবী বিশেষজ্ঞ তাদের কাছে চলুন
বলে দেবে বর্তমানের ইস্যু
ওদের কাছে আমরা যে হই শিশু।
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
বইমেলা কি বাংলা ভাষার প্রান
তাতে তো নেই পলি মাটির ঘ্রান
হই হুল্লোর ব্যবসাপাতি জমে
শহীদ ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা কমে
গান বাজনায় যে মুখর হয়ে যায়
রক্ত ঝরার দিনে উৎসব হায় !
২.
একুশ মানে বাংলা ভাষা নয়
একুশ কেবল একটি তারিখ মাত্র
এদিনে ক্যান বাজে উৎসব হয়
প্রশ্ন করেন দেশের যত ছাত্র।
একুশ হবে ভাবগম্ভীর দিন
একাডেমীর মঞ্চে নাচা নয়
নয় বসšের রোমাঞ্চ রঙীন
যা মানিনা তাই কেবলি হয়।
ভাষা নিয়ে হয়না তেমন কিছু
বরং ভাষার অলংকার যায় মুছে
দেখে দেখে হয় যে মাথা নিচু
বাংলা ভাষা থাকবে কি আর উঁচে ?
ভাষার ছড়া
আবু সালেহ
১.
বায়ান্নের সেই আন্দোলনে ছিলেন যাঁরা
কোথায় গেলেন হায় হারিয়ে তাঁরা
তাদেরকে কেউ দেয়না সংবর্ধনা
ভাবখানা যে তারা গর্ব না
নতুন নতুন বুদ্ধিজীবী হয়েছে হুঁশ হারা।
২.
বাংলা ভাষার চর্চা কমে গেছে
সে কারনে ইংরেজী আজ বলা
ইংরেজরা ঐ এসে ভাষা বেঁচে
শুরু করে সেই পুরানো চলা।
বিশ্বব্যাপী ইংরেজী আজ পন্য
স্বীকার ক’রে আমরাও যে নাচি
‘হোয়াট’, ‘ইয়েস’ বলে যে হই ধন্য
গোলাম হতে হচিছ কাছাকাছি।
৩.
চীন দেশীরা নিজের ভাষায় বিশ্বব্যাপী চলে
দোভাষী নেয় সাথে ক’রে প্রতিনিধি দলে
অসুবিধা নেই মোটে
তাদের হাসি ঠোঁটে
এ’ব্যাপারে আমার দেশে কানটা কেবল ডলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।