জাদুনগরের কড়চা
বাংলা ভাষা নিয়ে আমাদের নিজেদের আবেগ, অথবা অবজ্ঞা, কোনোটারই কমতি নেই। আসলে ছোটবেলা থেকে ভাষা বিষয়ে পড়া মানেই ভাব-সম্প্রসারণ, বা কবিতার তাৎপর্য লেখার মতো ভয়াবহ বিষয়ের জন্য মানুষ ভাষার প্রতি আগ্রহ হারায়।
অথচ ভাষা হলো আমাদের প্রাণের সবচেয়ে কাছের একটা জিনিষ।
যাহোক, ভাষা নিয়ে অনেক খুঁটিনাটি বিষয় পড়ছিলাম উইকিপিডিয়ার সুবাদে। আগেই জানতাম, কিন্তু তার পরেও অনেক গুলো ছোটখাট বিষয় হয়তো অনেকের কাছে ইন্টারেস্টিং লাগতে পারে - যেমন -
বাংলা, তথা সংস্কৃত হতে সৃষ্টি হওয়া সব ভাষাই ইউরোপীয় বিভিন্ন ভাষার সাথে জড়িত।
আসলে একই মূল উৎস হতে এসব ভাষার উৎপত্তি। এই ব্যাপারটা অষ্টাদশ শতকে জার্মান ভাষাবিদেরা প্রথম লক্ষ করেন। যেমন, সংস্কৃত পিতা - পিত্র, ইউরোপীয় অনেক ভাষায় ফাদার, পিতার। এরকম আরো অনেক উদাহরণ দেখানো যায়। এই সব কিছু বিবেচনা করে এই মহাগোষ্ঠীর নাম দেয়া হয়েছে ইন্দো-ইয়ুরোপায়ন ভাষাগোষ্ঠী।
পুরা ইউরোপের ইংরেজি, জার্মান, স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, পর্তুগীজ, রাশিয়ান, ইতালিয়ান, দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দি, উর্দু, বাংলা, মরাঠি, পাঞ্জাবী, - এই সব ভাষাই এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। দুনিয়ার প্রায় ১৬০+ কোটি মানুষের মাতৃভাষা এটা (আরো অনেক বেশি মানুষ এই ভাষাগুলোতে কথা বলতে পারেন)।
তবে, ইউরোপের সব মানুষ আবার এই ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাতে কথা বলেন না। যেমন, স্পেনের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী বাস্ক-রা বাস্ক ভাষাতে কথা বলে, যার সাথে আর কোনো ভাষার একেবারেই মিল নেই। সেরকম হাঙ্গেরিয়দের ভাষাও অন্য উৎস হতে আসা।
দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি বলা একক ভাষা হলো চীনের ম্যান্ডারিন ভাষা (এর নামটা এসেছে সংস্কৃত "মন্ত্রী" হতে, কারণ ভাষাটার চীনা নামটার অর্থ মন্ত্রীদের ভাষা, অর্থাৎ ভদ্রলোকের সাধু ভাষা)। তবে চীনেই বহু ভাষা চালু আছে, এক অঞ্চলের লোক অন্যদের ভাষা একেবারেই বোঝেনা।
বাংলাদেশের ভাষা বাংলা, তবে এর মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রামের ভাষাকে উপভাষার মর্যাদা দেন অনেকে ভাষাবিদ। চট্টগ্রামের ভাষা আর আরাকানের ভাষা প্রায় এক, লেখার রীতিটাই কেবল আলাদা। ত্রিপুরাতে বাংলা ব্যবহার হয়ে আসলেও ইদানিং ওরা বাংলার বদলে কোকবরক নামের একটা ভাষা চালু করার চেষ্টা করছে।
বাংলা হরফ শুধু বাংলা নয়, অসমীয়া এবং মণিপুরী ভাষাতেও ব্যবহার করা হয়।
শ্রীলংকায় পাওয়া ১০ম শতকের একটা মূদ্রায় পরিষ্কার বাংলা লেখা দেখেছি!! অবাক হয়েছিলাম, তবে শ্রীলংকার উপকথায় রয়েছে, বাংলারই এক রাজপুত্র লংকা জয় করেছিলেন।
[অসমাপ্ত]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।